চবির ৩০ তম বার্ষিক সিনেট সভা
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন,বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোবাবেলা এবং দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, মানবিক চেতনা সমুন্নত রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শিক্ষা দর্শন বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক মানবসম্পদ উৎপাদন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম লক্ষ্য। তিনি গতকাল (২৮ জুন ২০১৮)ড.এ.আর.মল্লিক ভবনে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০ তম বার্ষিক সিনেট সভায় সভাপতির ভাষণে এসব কথা বলেন।
উপাচার্য দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত অন্যতম উচ্চ শিক্ষা-গবেষণা প্রতিষ্ঠান বীর চট্টলার অহংকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করে এ আর্থিক সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিচিতি, বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি সেসনজট মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার অভিলাষ বাস্তবায়নে স্বউদ্যোগে বিবেকপ্রসূত বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ সুরক্ষায় বিভিন্ন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, একাডেমিক কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ক্রীড়া-খেলাধুলা, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা, উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণা উন্নয়নে অভূতপূর্ব বরাদ্দের আলোকে গবেষণা ও নতুন জ্ঞান সৃজনে পথ পরিক্রমার সুযোগ সৃষ্টি, আধুনিক গুণগত শিক্ষা বাস্তবায়নে বিশ্বের উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের সাথে যোগাযোগ ও সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর, শিক্ষা বিনিময়, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়, যৌথ আয়োজনে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, কর্মশালা আয়োজন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে নিরবচ্ছিন্ন সেবার মানোন্নয়ন, পরিবহন-যোগাযোগ ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, পরিবেশ সুরক্ষায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণে গ্রন্থাগারের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ, দেশের একমাত্র একাডেমিক জাদুঘর চ.বি. জাদুঘরে শিক্ষক-গবেষকদের গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ, জঙ্গি-সন্ত্রাস-মাদক নির্মূলে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীর ক্ষমতায়ন, সময়োপযোগী নতুন নতুন অনুষদ, বিভাগ-ইনস্টিটিউট চালুকরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এলামনাই এসোসিয়েশন সমূহের আন্তরিকতাপূর্ণ সহযোগিতা ইত্যাদি বিষয়াদি আলোকপাত করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার তুলনায় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্ত বাজেট নিতান্তই অপ্রতুল। একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে বাৎসরিক ফি আদায় করা হয় ১৭৭৫ টাকা এবং একজন শিক্ষার্থীর পিছনে বাৎসরিক ব্যয় ১ লক্ষ ৯ হাজার ৭৭৪ টাকা।
একজন শিক্ষার্থীর পিছনে সরকারের এ বিশাল ভর্তূকী শুধুমাত্র গরীব, অস্বচ্ছল, মেধাবী শিক্ষার্থীদের যোগ্যতর, আলোকিত মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ সৃষ্টির আন্তরিক প্রয়াস, যাতে তারা ভবিষ্যতে দেশ-জাতির উন্নয়ন-কল্যাণে কাঙ্খিত ভূমিকা রাখতে পারে। মাননীয় উপাচার্য স্বপ্ন পূরণের অভিযাত্রায় বঙ্গবন্ধু তনয়া আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অগ্রযাত্রার সংগ্রামে সকলকে স্ব স্ব ভূমিকা ও অবদান রাখার উদাত্ত আহবান জানান।
সিনেট সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন চ.বি. মাননীয় উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
সভায় ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ৩০৫৬০.০০ লক্ষ টাকা সংশোধিত এবং ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের ৩২৯৫০.০০ লক্ষ টাকা মূল বাজেট উপস্থাপন করেন চ.বি. রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব কে এম নুর আহমদ। সিনেট সভায় এ বাজেট অনুমোদিত হয়।
উপাচার্যের ভাষণ ও বাজেটের ওপর প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সম্মানিত সিনেট সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান, সম্মানিত সিনেট সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, এস.এম. ফজলুল হক, ড. মোহাম্মদ মঞ্জুর-উল-আমিন চৌধুরী, প্রফেসর ড. সুলতান আহমেদ, প্রফেসর মনসুর উদ্দিন আহমদ, প্রফেসর বেনু কুমার দে, প্রফেসর ড. এম. আবদুল গফুর, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নাসিম হাসান, জনাব নজরুল ইসলাম, এডভোকেট মোহাম্মদ নুরুল আমিন, জনাব মোহাম্মদ মহিউদ্দিন শাহ আলম নিপু, প্রফেসর এ বি এম আবু নোমান, মোহাম্মদ আলী আজগর চৌধুরী, প্রফেসর সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ, প্রফেসর ড. কাজী এস.এম. কাজী খসরুল আলম কুদ্দুসী, প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর আলম, প্রফেসর ড. নাসির উদ্দিন, প্রফেসর এস.এম. মনিরুল হাসান, প্রফেসর জমির উদ্দিন আহমদ ও জনাব মোহাম্মদ রেজাউল কবির।