উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও

পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও করেছে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশ। ফলে প্রশাসনিক ভবনের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়।

সোমবার সকাল আটটায় ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে ভবনের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। দুপুর একটা পর্যন্ত প্রশাসনিক ভবন বন্ধ থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার কথা থাকলেও কার্যালয়ে ঢুকতে না পেরে তারা বাইরে অবস্থান করছেন।

গত ১৭ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অনুসারী ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের আরেকটি পক্ষের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় শিক্ষক ‘লাঞ্ছনার’ বিচার, উপাচার্যের অ্যাক্ট-১৯৭৩, স্ট্যাটিউট ও সিন্ডিকেট পরিচালনা বিধি লঙ্ঘনের প্রতিবাদ ও জাকসু নির্বাচনের দাবিতে পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচি পালন করে তারা।

আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ বলেন, “বিধি লঙ্ঘন করে উপাচার্য ৯টি হলে প্রভোস্ট নিয়োগ দিয়েছেন। উপাচার্যের অবৈধ নিয়োগের প্রতিবাদ করতে গেলে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে ৬জন শিক্ষক লাঞ্ছিত হয়েছেন। এই লাঞ্ছনার বিচারের দাবিতে আজ উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছি। আগামী বৃহস্পতিবার ফের উপাচার্য কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবো। তবে ওই আন্দোলনে ছাত্র সংসদ, মাদক, সেশন জ্যামসহ ছাত্র সংশ্লিষ্ট আরো দাবিসমূহ যুক্ত হবে।”

Post MIddle

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “আন্দোলনরত শিক্ষকরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখেননি। তারা শিক্ষার্থ ও প্রশাসনকে জিম্মি করছেন। আমি উদাত্ত আহ্বান জানাই, তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গলের জন্য ধর্মঘট, ঘেরাও এসব কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন।”

উপাচার্য বলেন, “তারা যদি ভেবে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়কে বসিয়ে দেবেন, উপাচার্যকে সরিয়ে দেবেন, তাহলে এটি যুক্তিসঙ্গত হবে না। তারা এক্ষেত্রে বিবেকের পরিচয় দেবেন না।”

ছাত্র সংসদ, মাদক, সেশন জ্যামসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে উপাচার্য বলেন, “গত চার বছর বিশ^বিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য, ডিন, প্রক্টর ও প্রভোস্টসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার পরও কেন তারা এ সমস্যাগুলো সমাধান করেনি। হঠাত করেইতো এসব সমস্যা দেখা দেয়নি। তারা থাকাবস্থায় আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তুলে নাই যা এখন বলা হচ্ছে। পদে থাকাবস্থায় অবদান না রেখে এখন পদের বাহিরে গিয়ে অবদান রাখতে চান তারা।”

প্রসঙ্গত, গত ১১ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নয়টি আবাসিক হলে প্রভোস্ট পদে পরিবর্তন আনেন উপাচার্য ফারজানা ইসলাম। এক অফিস আদেশে নয়জন প্রভোস্টকে অব্যহতির ঘটনাকে নজিরবিহীন, অ্যাক্টবিরোধী ও শিষ্টাচার বহির্ভূত উল্লেখ করে ধর্মঘটের ডাক দেন ওই সংগঠনটির সমর্থিত শিক্ষকরা।

পছন্দের আরো পোস্ট