জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

উচ্চ শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সাথে সঙ্গতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা, গবেষণা, আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কর্তৃক অনুমোদিত ২০০৫ সনের ২৮ নং আইনের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ সরকারি কলেজটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয় এবং ২০০৫ সনের ২০ অক্টোবর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এটি পূর্নাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে স্বীকৃতি পায়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বিলুপ্ত সরকারী জগন্নাথ কলেজ ক্যাম্পাসের ১১.১১ একর (প্রায়) জমির উপর বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। ১৮৬৮ খ্রিস্টাব্দে জগন্নাথ রায় চৌধুরী বর্তামান ক্যাম্পাসে ‘জগন্নাথ স্কুল’ নামে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। স্কুল প্রতিষ্ঠার পরে এর খ্যাতি ও প্রসারে অনুপ্রানিত হয়ে জগন্নাথ রায় চৌধুরীর পুত্র কিশোরীলাল রায় চৌধুরী ১৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে এটিকে কলেজে রূপান্তরিত করেন। ব্রিটিশ ভারতে শিক্ষার সম্প্রসারনের লক্ষ্যে ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে জগন্নাথ স্কুলকে ‘ঢাকা জগন্নাথ কলেজ’-এ উন্নীত করা হয়। ভারত উপমহাদেশে যে কয়টি বড় কলেজ স্বীয় বৈশিস্ট্যের জন্য সুপরিচিত, বাংলাদেশে সরকারি জগন্নাথ কলেজ তার মধ্যে ছিল অন্যতম। পরবর্তীতে ১৮৮৭ সালে শিক্ষা বিভাগের নির্দেশে স্কুল ও কলেজ শাখা পৃথক হয়ে যায়। তখন স্কুলের নাম হয় ‘কিশোরীলাল জুবিলী স্কুল ‘ (বর্তমানে কে.এল.জুবিলী স্কুল)।

১৯২০ খ্রিস্টাব্দে Indian Legislative Council “Jagannath College Act” আইন পাশ করে নথিভুক্ত করে। ১৯২০ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে ট্রাস্টি বোর্ডের অবসান ঘটে এবং অ্যাক্ট১৬, ১৯২০-এর আওতায় জগন্নাথ কলেজের সমস্ত সম্পত্তি, দায়দেনার ভার স্থানীয় সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে কলেজটিকে স্নাতক পর্যায়ের পাঠক্রমে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ হয়ে যায় এবং এটি ‘জগন্নাথ ইন্টারমিডিয়েট কলেজ’ নামে প্রতিষ্ঠা পায়। এর ২৮ বছর পর ১৯৪৯ সালে পুনরায় স্নাতক পাঠ্যক্রম শুরু হয়।

১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে জগন্নাথ কলেজকে সরকারি কলেজে রূপান্তরিত করা হয়। স্বাধীনতার পর ১‌৯৭৫ সালে এখানে সম্মান ও স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম চালু হয়। পরে এটিকে বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ এ রূপান্তরিত করা হয়। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তি বন্ধ করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৯১-৯২ শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি জগন্নাথ কলেজ এর শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়।

২০০৯ সালের ২০ অক্টোবর প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী জাকজঁমকপূর্ণভাবে পালিত হয়।

বিলুপ্ত সরকারি জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হওয়ার পর উচ্চ শিক্ষার গুনগতমান উন্নয়নের লক্ষ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ একডেমিক কর্মকান্ড যেমন-একাডেমিক ও প্রশাসনিক, লাইব্রেরী উন্নয়ন, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, বই-পুস্তক ও জার্নাল সংগ্রহ, উচ্চতর গবেষনা,  শিক্ষক নিয়োগ, ছাত্র হল নির্মাণ, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি কর্মকান্ডে অগ্রাধিকার প্রদান করা হচ্ছে।

ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছতা আনয়নের লক্ষ্যে ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে Computerized System-এ ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৫ অনুযায়ী ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে সকল  বিভাগে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসের অবস্থান

জনসন রোড, সদরঘাট, ঢাকা।

ফোন- ৭১১০৪১৫ ও ৭১৭৬১৭৯।

ফ্যাক্স- ৭১১৩৭৫২।

ওয়েবসাইট- www.jnu.ac.bd

প্রশাসনিক ভবন

প্রশাসনিক ভবন শহীদ মিনারের  পেছনে অবস্থিত।

তথ্য কেন্দ্র

প্রশাসনিক ভবন থেকে সকল তথ্য সংগ্রহ করা যায়।

অনুষদ ও বিভাগ

অনুষদ সংখ্যা ৪ টি এবং বিভাগ সংখ্যা ২৮ টি।

০১. বিজ্ঞান অনুষদ।

ক) পদার্থ বিজ্ঞান।

খ) গনিত।

গ) রসায়ন।

ঘ) পরিসংখ্যান।

ঙ) প্রানি বিজ্ঞান।

চ) উদ্ভিদ বিজ্ঞান।

ছ) ভূগোল ও পরিবেশ।

জ) মনোবিজ্ঞান।

ঝ) ফার্মেসী

ঞ) কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং।

ট) মাইক্রোবায়োলজি এন্ড বায়োটেকনোলজি।

 

০২. ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ।

ক) হিসাব বিজ্ঞান।

খ) ব্যবস্থাপনা।

গ) ফিন্যান্স।

ঘ) মার্কেটিং

 

০৩. কলা অনুষদ।

ক) বাংলা।

খ) ইংরেজী।

গ) ইতিহাস।

ঘ) দর্শন।

ঙ) আইন।

চ) ইসলামিক স্টাডিজ।

ছ) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি।

 

০৪. সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ।

ক) অর্থনীতি।

খ) রাষ্ট্রবিজ্ঞান।

গ) সমাজ বিজ্ঞান।

ঘ) সমাজকর্ম।

ঙ) নৃবিজ্ঞান।

চ) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা।

 

শিফট

ক) অনার্স- পর্যায়ে কোন ইভিনিং শিফট নেই।

খ) মাস্টার্স- শুধুমাত্র হিসাববিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগে ইভিনিং শিফট রয়েছে।

শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বমানের একটি মডেল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপহার দেয়ার জন্য বর্তমান প্রশাসন নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন।

পছন্দের আরো পোস্ট