নিম্নমানের কাঁচামাল দিয়ে তৈরী হচ্ছে জাককানইবি’র স্থাপনা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নির্মানাধীন ছাত্রী হলের নির্মান কাজে ডেমেজ পাথর ও নিম্ন মানের বালি ব্যবহার করার অভিযোগ উঠেছে। ভবনটি নির্মানের কাজে দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে । যে অংশের কাজে অভিযোগ উঠেছে সেটি রাকা এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে হচ্ছে ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মানাধীন ভবনটিতে ডেমেজ পাথর ও নিম্ন মানের বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন সংবাদে সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায় নিন্মমানের কাঁচামাল ব্যবহার করে সিঁড়ির ঢালাই কাজ করছে নির্মান শ্রমিকরা। অভিযোগের সত্যাতা প্রামানিত হলে এই বিষয়ে অনুসন্ধান করে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ন এবং চাঞ্চল্যকর তথ্য বেড়িয়ে আসে। যেখানে এসব সমস্যার মূলে কেবল ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নয় জড়িত রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার।

জানা যায়, ভবনের ঢালাই এর কাজ শুরু করতে হলে ইঞ্জিনিয়ারের অনুমতি নিয়ে শুরু করতে হয় কিন্তু ভয়ংকর হলেও সত্য সেখানে ইঞ্জিনিয়ারের অনুপস্থিতিতেই ঢালাই কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাকা এন্টারপ্রাইজ ।

এবিষয়ে আজ ২৬ এপ্রিল কাজ চলাকালীন সময়ে কিছু শিক্ষার্থী কাজ স্থগিত করে ইঞ্জিনিয়ারকে আসার আহ্বান জানালেও শুরুতে তা কাজে আসেনি । পরে বিষয়টি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. হুমায়ুন কবীর, পরিকল্পনা উন্নয়ন ও ওয়ার্কস দপ্তরের পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ হাফিজুর রহমান কে বিষয়টি অবগত করা হলে তাঁরা বলেন, আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

এ বিষয়ে রাকা এন্টারপ্রাইজের ইঞ্জিনিয়ার মোঃ জুয়েল এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন আজ আমি সাইডে আসি নি । আর ঢালাইয়ের অনুমতি তো আমি দিই নি । বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী দিয়েছে । তাই আমি বলতে পারবো না। তারা যদি পাথর, বালুকে নষ্ট ঘোষনা করে আমরা তা পরিবর্তন করে দিবো । অন্যদিকে আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী সৈয়দ মুফাছিরুল ইসলাম কাজ পরিদর্শন করে ঢালাইয়ের অনুমতি দেন। এই নিয়ে তাঁর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি উপর থেকে দেখে মনে করেছিলাম ভালো তাই অনুমতি দিয়েছি । এটা আমার ভুল হয়েছে। এগুলো ভেঙে নতুন করে আবার করা হবে ।

এই কাজের বিষয়ে তিন জনের কাছে প্রশ্ন করলে ভিন্ন ভিন্ন ভাষ্য প্রকাশিত হয় । যেখান থেকেই বোঝা যায় ভবন নির্মানে দায়সারার বিষয়ে তাদের অবস্থা ।

এ বিষয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী সোহেল বলেন আজ তারা হেলায় হেলায় ভবন নির্মান করছেন যার স্বীকার হতে হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে মানহীন রড ব্যবহার করা নিয়ে। কেউ না দেখলে তারা কাজ করেই যায় এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের দায় সাড়া ভাব তার বড় কারন।

এই অবস্থা দেখে মনে হয় দুর্নীতির মহড়ায় গড়ে উটছে নতুন ছাত্রী হল। মনে ভয় হয় ভবনের অন্য অংশগুলো কিভাবে নির্মান করেছে ? কেবল ভেঙে নতুন করে নয় এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে দাবি সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

উল্লেখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য আলোচনায় এসে থাকে পরিকল্পনা দপ্তর। প্রকৌশলীর অনুপস্থিতে ভবন গড়ে উঠাই যেন রুটিনমাফিক কাজ।

এদিকে রাকা এন্টারপ্রাইজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কিছুদিন পূর্বে ৫০০ কেজি রড চুরির অভিযোগ তুলেছিলো এক শিক্ষার্থীর নামে । তাদের ভুলে ভরা অভিযোগ পত্রের সত্যতা এখন পর্যন্ত নিরুপন হয়নি ।

পছন্দের আরো পোস্ট