একুশ আমাদের আবেগের বিষয়

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেছেন, একুশ আমাদের আবেগের বিষয়। একুশের চেতনা আমরা লালন করে। একুশ আমাদের গর্বেরও বিষয়। আজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অমর একুশে ভাস্কর্যের সংস্কার ও মূল নকশা অনুযায়ী সম্পন্নকরণ অনুষ্ঠানে উপাচার্য একথা বলেন। উপাচার্য অমর একুশের ভাস্কর্যের শিল্পী চৌধুরী জাহানারা পারভীনের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, শিল্পী তাঁর মায়া, মমতা দিয়ে মূল নকশা অনুযায়ী ভাস্কর্যটি সম্পন্ন করেছেন। তাঁর অবদান কখনোই ভুলবার নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, অফিসার, কর্মচারি তাঁর সৃষ্টিকর্মের কথা সব সময় স্মরণ করবেন। উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে অমর একুশের ভাস্কর্য সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করায় সংবাদ প্রতিনিধিদেরও ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মনজুরুল হক অমর একুশের ভাস্কর্য নির্মাণের ইতিহাস তুলে ধরেন।

Post MIddle

অনুষ্ঠানে শিল্পী চৌধুরী জাহানারা পারভীন বলেন, অধ্যাপক ড. কাজী সালেহ আহমেদ উপাচার্য থাকাকালীন তিনি অমর একুশের এ ভাস্কর্য নির্মাণের আগ্রহ প্রকাশ করলে তাতে কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দেন। ১৯৯১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি উপাচার্য ড. কাজী সালেহ আহমেদ এ ভাস্কর্যটি উদ্বোধন করেন। সেই সময়ে এটি মূল নকশা অনুযায়ী সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। বিগত সময়গুলোতে ভাস্কর্যটির বিভিন্ন অংশে ক্ষতি হয়। এতে এর ¯্রষ্টা হিসেবে আমি ব্যথিত হই। ফলে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এর সংস্কার এবং মূল নকশা অনুযায়ী এটি সম্পন্ন করার আগ্রহ ব্যক্ত করি। কর্তৃপক্ষ আমার আগ্রহ সাদরে গ্রহণ করেন এবং সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখেন।

ভাস্কর্যটির সংস্কার এবং পুরো নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে পেরে আমি যারপরনাই খুশি। শিল্পী চৌধুরী জাহানার পারভীন তাঁর বক্তব্যে আরো বলেন, একুশের ভাষা আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি অনেক মহিলাও জীবন দান করেছেন। ভাস্কর্যের মধ্যখানে একজন মহিলা তারই প্রতীক। মহিলা উপরের দিকে তাকিয়ে আছেন। সন্তান বা ভাই হারানোর শোক মহিলাকে দু:খিত করলেও উর্ধ্বকাশে তাঁর মুখটি সাহসের প্রতীক। শিল্পী আরো বলেন, ভাস্কর্যটির পাদদেশে ৬টি সিড়ি দেয়া হয়েছে। এই ৬ সিড়ি ৬ দফাসহ আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তি আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের ৬টি সালের স্মারক। ভাস্কর্যটির পাশে পলাশ ফুলের গাছ লাগানো হয়েছে। বাংলার ঋতু বৈচিত্রে পলাশ ফুল ফুটার সময় একুশ আসে। পলাশ গাছটি তারই নিদর্শন।’ শিল্পী ভাস্কর্যটির অবয়ব কখনোই পরিবর্তন না করার আহবান জানান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক।

পছন্দের আরো পোস্ট