“বাতিঘর“ চার পেরিয়ে পাঁচে

বাতিঘরের জন্মদিন  বাতিঘর এখন চার পেরিয়ে পাঁচে…. বাতিঘর…. আমাদের বাতিঘর…বাতিঘর সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়। একটি সম্পূর্ণ সাংস্কৃতিক বিদ্যালয় হয়ে ওঠার চেষ্টা।

Post MIddle

বৈরি সময় আর পরিবেশের ভেতরে থেকেও শিশুদের, মানে আমাদের সন্তানদের মন-বুদ্ধি-স্বভাব যেন বিকশিত হতে পারে, তাদের ভেতরে ন্যায়নীতির শুভবোধ, রুচিবোধ আর সৌন্দর্যবোধ কিছুটা হলেও যেন জন্মে, বাংলা, বাঙালি আর বাংলা সংস্কৃতির প্রতি তাদের যেন মমত্ববোধ তৈরি হয় তারই প্রয়াস চালানো আমাদের লক্ষ্য।

কতোটা কী হচ্ছে, তা সময় বলবে।

সেতু ওর লেখায় বহুবার বলেছে, বাতিঘর আমার স্বপ্ন। একথা সত্যি। কিন্তু এরচেয়েও বড় সত্যিটা হল– এরকম কতো-শত স্বপ্ন কতো-শতজন দেখে। ঐ যে আমরা গান শুনেছি–‘আমি তো দেখেছি কতো না স্বপ্ন মুকুলেই ঝরে যায়’– এমনই ঘটে বেশিরভাগ সময়। বাতিঘরের বেলায় যে তেমনটা ঘটেনি তার কারণ আমি না, কারণ সেতু। স্বপ্ন দেখে একা একা কেউ কিছু করে ফেলতে পারে না। কখনো পারেনি কোথাও। পাশ থেকে কেউ এসে পাশে থাকতে হয়, সাথে থাকতে হয়। সেতু শুধু সাথেই থাকেনি, হাল ধরেছে আমার স্বপ্নকে বাস্তব করতে। সেজন্য বাতিঘরকে ও নিজের স্বপ্ন বানিয়ে নিয়েছে। বাতিঘর এর ভেতরে ক্রমাগত নিজের চিন্তা-ভাবনার মিশেল ঘটিয়ে একে নিজের কাজ বানিয়ে নিয়েছে।

ফলে আজকে তিন বছর ধরে বাতিঘর আর তামান্না সেতু সমার্থক হয়ে উঠেছে।

বাতিঘর তাই এখন আর আমার একার স্বপ্ন না। বাতিঘর আমাদের দুজনের চেষ্টায় বাস্তব। আমাদের মাথা উঁচু করে বাঁচার সম্বল।

তবে আবার আমাদের দুজনের চেষ্টাই কিন্তু শেষ কথা না। কখনও কখনও তার চেয়েও বেশি হয়ে উঠেছে বাতিঘরের শিশুদের অভিভাবকরা, কখনও বা শিক্ষকরা। এই তিন বছরে খারাপ সময় এসেছে অনেকবার-ই। শিশুদের অভিভাবকরা বাতিঘরের অভিভাবক হয়েই পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকরা দায়িত্ব নিয়ে সেই সময়ের মোকাবেলা করেছে। সেসব কিছুর যোগফল বাতিঘরের আজকের অবস্থান। সকালে সেতু লিখেছে, আমরা এখন এক থেকে তিন…. লালমাটিয়ার পর উত্তরা এবং মিরপুরেও বাতিঘর হয়েছে। শিক্ষার্থী ৬ থেকে ২৫০ হয়েছে তিন বছরে।

বাতিঘর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হোক, এমন চাহিদা তৈরি হয়েছে এরই মধ্যে। এমনকি দেশের গণ্ডি ছারিয়ে দেশের বাইরে থেকেও আমাদের কাছে আবেদন আসছে বাতিঘর করার। এতে ভালো লাগা কাজ করে ভেতরে। তবে তার চেয়ে বেশি দায়বদ্ধতা তৈরি হয়। নিজের স্বপ্ন যতদিন নিজের ভেতরেই থাকে ততোদিন তার সাথে কারো প্রতি কোনো দায় জরিয়ে থাকে না। তবে স্বপ্ন যখন বাস্তবায়ন করতে যেয়ে অন্যদের ভেতরেও কোনো চাওয়া তৈরি করে তখন দায়বদ্ধতা তৈরি হয়। সচেতন হতে হয়। তাই হুট করে চাহিদা আছে বলেই বাতিঘরের অনেকগুলো শাখা করে ফেলতে পারি না আমরা। বাতিঘর যে আশা জাগিয়েছে মানুষের ভেতর তা পূরণের সক্ষমতা তো অর্জন করতে হবে।

আরও বহুদূর যেতে হবে। স্বপ্ন যে আকাশ সমান, সেখানে পৌঁছানোর এখনও অনেক পথ বাকি।

পছন্দের আরো পোস্ট