এখন যেমন রাবির আমীর আলী হল

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সতেরোটি আবাসিক হল। গতানুগতিক ধারায় হলগুলোর উন্নয়ন অব্যাহত থাকলেও সৈয়দ আমীর আলী হল ঘুরে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। হলে ঢুকতেই চোখে পড়লো সৈয়দ আমীর আলীর কর্ম-জীবনী নিয়ে তৈরী করা বোর্ড। আবাসিক শিক্ষার্থীর ওয়াই-ফাই সমস্যা নিরসনে শক্তিশালী রাউটার প্রজেক্টের কাজ চলমান।

হলের মাঝখানের গোল চত্বরে তৈরী করা হচ্ছে মুক্তমঞ্চের কাজও চলমান। মসজিদের সাউন্ড-সিস্টেমের উন্নয়ন, ওযুখানা ও মসজিদের মেঝেতে টাইলস স্থাপনসহ পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, রিডিং রুম সংস্করণের মাধ্যমে আধুনিক মানের রিডিং রুম তৈরি। পরিত্যক্ত হল লাইব্রেরি এখন নিয়মিত খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। হলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে বাইরের অংশ রং করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতার বিষয়টি মাথায় রেখেই চালু করতে যাচ্ছেন জিমনেসিয়াম।

পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকটিও অনেক প্রশংসনীয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ হল পরিষ্কার অভিযান। এছাড়াও প্রতিটি ব্লকেই ময়লা রাখার জন্যে ঝুড়ি রাখা আছে। শিক্ষার্থীদের রুম পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে নোটিশ দিয়ে অবগত করে আবাসিক শিক্ষকসহ রুমে রুমে গিয়ে তাদের খোঁজ-খবর নেয়ার বিষয়টিকেও ইতিবাচকভাবে দেখছেন শিক্ষার্থীরা।

Post MIddle

আবাসিক শিক্ষার্থীদের সামাজিক মাধ্যমে প্রাধ্যক্ষ ড.মো আমিনুল ইসলামকে নিয়ে নিজেদের নিউজফিডের লেখাও বেশ চোখে পড়ার মতো। মো: শাকিল হোসেন নামক এক আবাসিক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘একজন আদর্শ প্রাধ্যক্ষ স্যারের গল্প: রাজশাহী বিশবিদ্যালয় এর অন্যতম একটি হল- সৈয়দ আমীর আলী হল। এখানে আমি প্রায় তিন বছর যাবৎ অবস্থান করছি। এখানে আপনাকে যতই কাছ থেকে দেখি ততই মুগ্ধ হই! আপনার অমায়িক ব্যবহার, সুন্দর ব্যক্তিত্ব, দক্ষ অভিভাবকসূলভ শাসন ও পরামর্শ প্রদান এবং আমাদের আবাসস্থল তথা সৈয়দ আমীর আলী হলের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম সম্পাদন আপনার হাত ধরে। আমরা সত্যিই ধন্য!!! আপনার মত একজন আদর্শ প্রাধ্যক্ষ স্যার কে আমাদের অভিভাবক হিসেবে পেয়ে। ইনশা-আল্লাহ্, আপনি সবসময় এভাবেই আমাদের আপনার স্নেহতলে আবদ্ধ রাখবেন।’

সজীব ওয়াফি নামের আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী লেখেন, ‘ আমি সৈয়দ আমীর আলী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। সে হলের প্রাধ্যক্ষ জনাব আমিনুল ইসলাম। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকনিষ্ঠ প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। হলের রুমগুলোতে কতটুকু পরিস্কার পরিচ্ছন্ন অবস্থায় ছাত্ররা থাকে সেটা পর্যবেক্ষণ করতে ১২.৩.১৮ তারিখে রুমে রুমে যাবেন স্যার। শিক্ষার্থীরা সবাই রুম পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করুন এবার। নিন্দুকতা না করে জনাব আমিনুলদের উৎসাহ দিন, সহযোগিতা করুন যেন প্রতিটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হলগুলোতে একজন করে আমিনুল ইসলাম পায়। ভালো থাকতে পারে ছাত্ররা। সকালের সুর্য দেখেই সারাদিন সম্পর্কে ধারনা করা যায়, জনাব আমিনুল ইসলাম তেমনই একজন সফল প্রাধ্যক্ষ।’

গত বছর ২৯ মে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড.মো আমিনুল ইসলামকে সৈয়দ আমীর আলী হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল প্রাধ্যক্ষগণ’র মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। তবে কর্তব্যপালনে কোন কমতি নেই তাঁর।

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কাউসার আহম্মেদ সৌরভ জানান, ‘ডাইনিংয়ের খাবার মান নিয়ে শুরু থেকেই প্রায় নিয়মিত আমাদের সাথে খাবার খেয়ে দেখেন, ডাইনিং পরিচালকদের পরামর্শ দেন, আমাদের আশ্বস্থ করেন ভবিষ্যতে খাবারমান আরো উন্নত হবে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারবো।’

ড. মো আমিনুল ইসলাম,প্রাধ্যক্ষ ,সৈয়দ আমীর আলী হল,রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রাধ্যক্ষ ড. মো আমিনুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, ‘শিক্ষার্থীদের অভিযোগবক্স আগে অকেজো অবস্থা পড়ে থাকলেও আবার চালু করেছি। এছাড়া প্রস্তাবিত প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, হলের টিভি রুম গ্যালারী রুমে উন্নীত করা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করার জন্য সিসি ক্যামেরা স্থাপন, রিডিংরুমে আইপিএসের ব্যবস্থাসহ হলের সামনের চৌবাচ্চাটিতে টাইলস স্থাপন। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ।’

সিট বরাদ্দের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘কিছু শিক্ষার্থীর পরীক্ষা চলমান, এদের পরীক্ষা শেষ হলে আগামী মাসেই নতুন শিক্ষাথীদের জন্যে সিট বরাদ্দের ব্যবস্থা করবো।’

পছন্দের আরো পোস্ট