জনি আহমেদ এর নতুন উপন্যাস “বিষাদনগর” বইমেলায়

এবারের বই মেলায় আসছে জনি আহমেদের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘বিষাদনগর’। বইটি পাওয়া যাবে ৬৬৬ নম্বর স্টলে,
দাঁড়িকমা প্রকাশনীতে। এছাড়াও পাওয়া যাবে চট্টগ্রাম, খুলনা ও সিলেট বইমেলায়। ইতোমধ্যে জনি আহমেদের প্রথম উপন্যাস ‘মরীচিকা’ পাঠক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে।

তরুণ প্রতিশ্রুতিশীল এই লেখক স্বপ্ন দেখেন, “এই পৃথিবী একদিন বইয়ের হবে। মানুষ আবার বইয়ের কাছে ফিরে
যাবে। এই যান্ত্রিক জীবনের ফাঁদ থেকে একমাত্র বই মানুষকে মুক্তি দিতে পারে”। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে হাজারো পাঠকের মুখে মুখে লেখকের নতুন বই নিয়ে বেশ উত্তেজনা লক্ষ করা গেছে।

‘বিষাদনগর’ সম্পর্কে জানতে চাইলে জনি আহমেদ বলেন, “গল্পটি একটি মফস্বল গ্রামের গল্প। গ্রামের নাম নন্দিপুর। তবে সব কিছু ছাপিয়ে গল্পটি আমাদের সবার গল্পে রুপ নিয়েছে। তাই আমি বলতে চাই গল্পটি আমাদের। আমাদের সবার”। তিনি আরো বলেন, “আমি বিষয় এবং কাল ধরে ধরে লিখতে পছন্দ করি। পছন্দ করি, অবহেলিত মানুষের গল্প বলতে, প্রান্তিক অসহায় মানুষের কথা বলতে, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলতে। এই উপন্যাসের প্রধান আলোচনার বিষয় গুলো হল, শ্রেণীবৈষম্য, গ্রামীণ জীবন ব্যবস্থা, নারী পুরষ সম্পর্কের ভারসাম্য বা ভারসাম্যহীনতা, বন্ধ্যা নারীদের অসহায় জীবন। এবং শোষক শ্রেণীর চাতুরতা। যেই চাতুরী করে তারা যুগের পর যুগ একটি সমাজকে, সর্বোপরি এই পৃথিবীকে শোষণ করে চলেছে”।

লেখকের জন্ম চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার নাচোল থানার সোনামাসনা নামক এক প্রত্যন্ত গ্রামে। তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে সেই প্রত্যন্ত একটি গ্রামে। যেখানে বিদ্যুৎ বা অন্যান্য আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি তখনও। লেখালেখির ক্ষেত্রে দুরন্ত শৈশব থেকেই অনুপ্রেরণা পেয়েছেন তিনি। মূলত ছোটবেলা থেকেই তিনি লেখালেখির প্রতি দুর্বল। লেখকের লেখালিখির গল্প অন্যরকম আনন্দ দেয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলে সৃজনশীল বই পাওয়া ছিল বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও তিনি পড়ার জন্য তেমন বই পেতেন না। স্কুল লাইব্রেরীর বই পড়ে পাঠক তৃষ্ণা মিটতো না লেখকের।

Post MIddle

তিনি এক সময় দোকান থেকে পূরণ পত্রিকা কেজি দরে কিনতেন। বাবার কাছে প্রতিদিন এক টাকা দুই টাকা নিয়ে
জমিয়ে রাখতেন তিনি। ১০ টাকা হলেই এক কেজি পত্রিকা পাওয়া যেত। পত্রিকা অনেক পূরণ হলেও পত্রিকার লেখা গুলো ছিল তার কাছে চির নতুন। তিনি সে পত্রিকা গুলো বাসায় নিয়ে গিয়ে গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ গুলো আলাদা করে করে পড়তেন। তিনি আরো বলেন, “ আমি তখন ক্লাস সেভেনে পড়ি। আমার কাজিনের কাছে একটি বই পেয়েছিলাম। নামটি ঠিক মনে নেই। এক রাতে ১৫০ পেজের একটি বই পড়ে শেষ করে ফেললাম।

বইটি পড়ে আমি খুব কষ্ট পেয়েছিলাম। সারা রাত কেঁদেছিলাম। এক পর্যায়ে ভাবলাম, একটি বই মানুষের অনুভূতির কত গভীরে যেতে পারে। কতটা ছুয়ে গেলে চোখে জল আসে। একমাত্র গল্প মানুষকে কাঁদাতে পারে, হাসাতে পারে।

আমি সেই ছোট বেলায় ভেবেছিলাম, আমিও পাঠকের হৃদয় ছুয়ে যেতে চাই। হাসাতে চাই, কাঁদাতে চাই। তখন থেকেই শুরু বলতে গেলে লেখালিখি। এছাড়াও লেখকের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া বড় ভাই বাড়িতে নানান লেখকের বই নিয়ে আসতেন। তিনি  সেই বইয়ের লেখক পরিচিতি দেখতেন আর ভাবতেন-আহ! এরকম কোনো বইয়ে যদি তার পরিচিতি থাকত! তখন থেকেই তার স্বপ্ন দেখা শুরু। আজ অবধি সে স্বপ্নের বেড়াজালে আটকে আছেন তিনি।

//স

পছন্দের আরো পোস্ট