ডাকসু নির্বাচনের তোড়জোড়

আন্দোলন, অনশন আর আলোচনা সমালোচনার পর অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে এবিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আর ওই নির্বাচনের সময় যদি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তার দরকার হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সে বিষয়ে ‘যথাযথ সহযোগিতা’ দিতে বলেছে আদালত। হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের রায়ে কেটে গেছে সব অনিশ্চয়তা।

এর আগে ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ছয় বছর আগের একটি রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের বেঞ্চ বুধবার এই রায় দেয়। রায়ের পর মনজিল মোরসেদ বলেন, রুল যথাযথ ঘোষণা করে আগামী ছয় মাসের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

দুই যুগ ধরে ডাকসু নির্বাচন না হওয়ায় প্রশাসনকে বাধ্য করতে ২০১২ সালে এই রিট আবেদন করেছিলেন ২৫ শিক্ষার্থী। আদালত তখন রুল দিয়ে জানতে চেয়েছিল, ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। সেই রুলের নিষ্পত্তি করেই বুধবার রায় দিল হাই কোর্ট।

Post MIddle

আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরের বছর যাত্রা শুরু করে ডাকসু। প্রথমে পরোক্ষ নির্বাচন হলেও শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ ভোটে ডাকসু নির্বাচন শুরু হয় বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর। ভাষা আন্দোলন, শিক্ষা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থানসহ বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে ডাকসু এবং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতারা ছিলেন সামনের কাতারে। স্বাধীন বাংলাদেশেও স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভোট হয়েছে মাত্র ছয়বার। সর্বশেষ ১৯৯০ সালের ৬ জুন ডাকসু নির্বাচনের পর ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সে নির্বাচন হয়নি।

পছন্দের আরো পোস্ট