জলে ভিজে সুগন্ধী মায়াহরিণ

সারাবছর তার বুকের জমিনে জৈষ্ঠ্য মাসের নাইওর। তাপমাত্রা চূড়ান্ত থাকা মরার গ্রীষ্মকাল! অসহনীয় গরমের দিন, তার সাথে আবার প্রেম..নো ওয়ে! এমন দিনে নদীই তার স্বাভাবিক নাব্যতা হারায়,আর আমি কি ছাই!

তুমি মিয়া,
‘গ্রীষ্ম নির্দয়, আগুন মাখিয়া অঙ্গে ভানুর উদয়’।তপ্ত দুপুর। আমি ঘরের মেঝেতে জল ছিটিয়ে গোসল করতে যাই। আপনা দেহে জলকেলি খেলি। আচ্ছা, জারুল ফুলের বাপের বাড়ি চীন নাকি!?

বাড়ির ভেতরে খোলা পুকুর, পেছনে তার বাঁশবাগান, ওরে বাবা- ভূতের আবাদ! পাশের বাড়িতে আম-কাঁঠালের বন এসব ভেবে..বাথটাবেই ডুব! আরে এদিকে; শ্যাম্পুর বোতলে ক্যাসিয়া জাভানিকা ফুলের ঘ্রাণ ডুকিয়ে রাখলো কোন হারামজাদা! তাতেই আমার স্নানঘর খোশবুতে সয়লাভ। স্নানঘর জুড়ে বয়ছে গ্রীষ্মকাল, যেন ওর মধুমাস! সুশীতল জল। আমার গামছা মাথা, জলে ভিজে সুগন্ধী মায়াহরিণ!

Post MIddle

তারপর শাড়ির সাথেই সাক্ষাত। পঁচিশ বছর আগের কোন এক বসন্তে কেনা আম্মুর শাড়ি। সেটাই পরি। মায়ের বসন্তের শাড়ি মেয়ের ললাটে ছিলো আর কী! মসলিন শাড়িতে সূতার কারুকাজ। অভিজাত। ফ্যানকে সুইচ টিপে হুকুম করি! তালপাখায় কাজ নেই। গুণ’দা বলেছিলো,এই ইলেকট্রিকের যুগ নারীকে মুক্তি দিয়েছে সেসব থেকে।

হঠাৎ আঁচল সামলাতে গিয়ে চোখ পড়ে,আমার পাশ ঘড়িতে ততক্ষণে অপরাহ্ন। আমার পাশে বিকাল বুঝি! দৌড়ে গিয়ে ভুল করে দুই কাপ চা করি। চায়ের পাতিল ধুতে গিয়ে একা থাকার অভিযোগও ধুয়ে ফেলি। ইতোমধ্যে মধ্যাহ্ন আর অপরাহ্নের সন্ধিক্ষণে নিজের একটা পৃথিবী তৈরী করে ফেলি।

কী যে শান্তির একটা পৃথিবী আমার!চায়ের কাপে প্রতিটা চুমুক শান্তিময়তার চুমু দিয়ে যায় আমাকে।নিজেকে তখন সব থেকে সুখী মানুষ মনে হয়। সুখী হতে আর কি লাগে? এইতো আমার প্রতিটা বিকালকে প্রতিনিধিত্ব করা আজকের বিকালটার ঐতিহ্য মণ্ডিত সুখ পঞ্জিকা!!

পছন্দের আরো পোস্ট