বেরোবিতে ভর্তিচ্ছুদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ
ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কাছে থাকা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ব্যাগ ও মোবাইল রাখার বিনিময়ে অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠগুলোর বিরুদ্ধে।
জানা যায়, মঙ্গলবার সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা ৩০ পর্যন্ত ‘সি’ এবং ‘এফ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী কোন পরীক্ষার্থী ব্যাগ বা অন্যান্য কাগজপত্র সাথে নিয়ে পরীক্ষার হলে প্রবেশ পারবে না। অনেক দুর থেকে আগত শিক্ষার্থীদের জন্য তাই এসব প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বাহিরে কোথায়ও রাখতে হচ্ছে। এগুলো রাখার জন্য ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা ২ নং গেট সংলগ্ন পার্কের মোড়ে বিভিন্ন সংগঠনের তথ্য ও সহযোগিতা কেন্দ্রে জমা রাখে। পরীক্ষা শেষে ফেরত নেয়ার সময় তাদের কাছ থেকে সেবামূল্য হিসেবে অর্থ নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে এসকল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
বগুড়া থেকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থী সুমন বলেন, “যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ভর্তিচ্ছুদের বিনামূল্যে সহায়তা করছেন সেখানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখার বিনিময়ে অর্থ নিচ্ছে। নিরুপায় হয়ে অর্থের বিনিময়ে ব্যাগটি রেখেছিলাম।”
মোবাইল নিয়ে হলে প্রবেশে পূর্বনির্ধারিত কড়াকড়ি, আর এই সুযোগ গ্রহণ করেছে বিভিন্ন সংগঠন। মাত্র এক ঘন্টার জন্য একটি মোবাইল অথবা ব্যাগ জমা বাবদ যার কাছ থেকে যে যেমন নিতে পারে বিভিন্ন সংগঠন ভিন্ন ভাবে অর্থ আদায় করছে বলে জানা যায়।
চট্রগ্রাম থেকে আসা মেহেদী হাসান রিমন নামে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, “যখন আমি বেরোবি’র একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে আমার ব্যাগটি রাখি তখন টাকার কোন কথা বলেনি কিন্তু যখনই আমার পরীক্ষা শেষে ব্যাগটি আনতে যাই তখন টাকা চেয়ে বসে এই সংগঠটির সদস্যরা। অবশেষে ১০ টাকা দিয়ে ব্যাগটি নিয়েছি । বেরোবির মত একটি নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের শিক্ষার্থীরা এভাবে টাকা ইনকামের ধান্দায় নামছে এটা মেনে নিতে পারছিনা।”
বেশি অভিযোগ পাওয়া গেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যায়ের কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, জেলা সমিতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাহিরের সংগঠনগুলোর সম্পর্কে।
সেবার নামে অর্থ নেয়ায় খারাপ মন্তব্য করতে ছাড়েনি রিমনের মত এমন হাজারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী। ব্যবসায়িক চিন্তাটা না করলেই তো কাজটা বেশ মহৎ হতে পারত বলেও দাবী এসকল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত এক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠন যখন সেবার বিনিময়ে অর্থ আদায় করছে তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুবই লজ্জাকর বিষয় । কিছুদিন পর যখন এসব জুনিয়র শিক্ষার্থীদের সাথে দেখা হবে তখন কেমন লাগবে এসকল সিনিয়রদের তা একবার ভাবা উচিত। বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে এসকল শিক্ষার্থীরা যে বাজে ধারণা নিয়ে যাচ্ছে তার জন্য নিজেরাই দায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে এবং বাহিরের যেসকল সংগঠনগুলো এসকল ঘৃনত কাজের সাথে জরিত তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
এ ব্যপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফরিদুল ইসলাম বলেন , ‘এটি বাইরের বিষয় । এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবোনা। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসন দেখবে’।