কুবি উপাচার্যকে ‘গুড লাক’ বলে শিক্ষার্থীদের ভর্ৎসনা
পৃষ্ঠপোষকতার নামে ‘আরএফএল’ এর অঙ্গ-প্রতিষ্ঠান ‘গুড লাক স্টেশনারি’র পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভবনে যাচ্ছেতাই করে নামফলক করে দেওয়ার প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা। এবার তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গাড়িতে ‘গুড লাক, ভিসি- মিনি বাস’ লিখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এছাড়াও গাড়িটির চারপাশের কাঁচে মার্কার কালি দিয়ে ‘গুড লাক, গুড লাক’ লিখে উপাচার্যকে ভর্ৎসনা করা হয়। শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে আসলে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আলী আশরাফকে বহনকারী গাড়ির কাঁচে এসব কথা লিখেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, উপাচার্য বাসভবন ও প্রতিটি হল ফটকে ‘গুড লাক স্টেশনারি’ নামাঙ্কিত ফলক লাগানো হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, দুটি ধাতব খুটির উপর বিদঘুটে করে লাগানো হয়েছে নামফলকগুলো। মাঝখানে নির্দিষ্ট ভবনের পরিচয় নামমাত্র উল্লেখ করে দুই পাশে ‘গুড লাক স্টেশনারি’র কলমের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে বেশ জমকালোভাবে। এসব দেখে ক্ষোভের বশে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম হল নামফলকটির দুই পাশ ফুটো করে দেন শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও এসব বিজ্ঞাপনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তবে, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে (শুক্রবার বিকাল ৩টায়) নামফলকটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার মো: মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘নামফলকের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আর্থিক কোনও সম্পর্ক নেই। এগুলোর পুরো ব্যয় বহন করছে ‘গুড লাক স্টেশনারি’। তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ থাকলে নামফলক সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হবে।’
নিজের গাড়িতে ‘গুড লাক’ লেখা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আলী আশরাফ বলেন, ‘এগুলো চরম মাত্রার বেয়াদবি। নামফলক শিক্ষার্থীদের পছন্দ না হলে তা সরিয়ে নেওয়া হবে। তাই বলে উপাচার্যের গাড়িতে ‘গুড লাক’ লেখা শিক্ষার্থীদের চরম অশোভন কাজ। এগুলোর পেছনে নিশ্চয়ই কিছু কুচক্রী শিক্ষকের হাত রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, আগামী ২ ডিসেম্বর বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. মো: আলী আশরাফের মেয়াদ (০৪ বছর) শেষ হতে যাচ্ছে। এরই মাঝে গত ১৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার বিভিন্ন অভিযোগে উপাচার্য কার্যালয় তালাবদ্ধ করে উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে একপ্রকার ‘অবাঞ্চিত’ করে রেখেছে শিক্ষক সমিতি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদেরও ক্ষোভ রয়েছে যে, ‘চার বছর সময়ে বর্তমান উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় অভ্যন্তরে দৃশ্যমান কিছুই করেন নি। তার উপর কোন কিছু করতে গিয়ে তিনি শুধু বিতর্কেরই জন্ম দিয়েছেন।’