পড়তে পারেন ইবির লোক-প্রশাসন বিভাগে

আধুনিক কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের সফলতা প্রশাসনিক দক্ষতা ও জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতি, শিল্প কারখানার প্রসার, আর্ন্তজাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ বৃদ্ধি, রাষ্ট্রের কাজের ক্রমবর্ধমান ব্যপকতাসহ বিভিন্ন কারণে মানুষের ব্যক্তিগত, রাষ্ট্রীয় এবং আন্তর্জাতিক জীবনে লোক-প্রশাসন প্রভাব আরোপ করে। রাষ্ট্রের সফলতা গতিশীল রাখতে দক্ষ, মেধাবী এবং কর্মঠ জনশক্তি প্রয়োজন। দক্ষ প্রশাসক, সংগঠক এবং সময় উপযোগী জনসম্পদ তৈরিতে অন্যবদ্য অবদান রাখছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক-প্রশাসন বিভাগ।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক-প্রশাসন বিভাগ ১৯৯০-৯১ শিক্ষাবর্ষ থেকে রাষ্ট্রনীতি ও লোক-প্রশাসন নামে যাত্রা শুরু করে। ২০১৫-১৬ শিক্ষবর্ষ থেকে রাষ্ট্রনীতি ও লোক-প্রশাসন থেকে রাষ্ট্রনীতি আলাদা করে বিভাগটির নাম লোক-প্রশাসন করা হয়েছে। একই বছর রাষ্ট্রনীতি থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান নামে নতুন বিভাগ চালু হয়েছে। ১৯৯৫-৯৬ শিক্ষাবর্ষ থেকে ইংরেজি মাধ্যেমে এ বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ লতিফ এর নামে একটি সমৃদ্ধ সেমিনার লাইব্রেরি রয়েছে। লাইব্রেরীতে ২হাজার ৩ শত ৯৫টি বই এবং অসংখ্য জার্ণাল রয়েছে। প্রতিদিন এ লাইব্রেরী থেকে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান আহরণের সুজোগ পাচ্ছে। বিভাগের অধীনে পলিটিক্স এন্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন নামে একটি জার্নাল প্রকাশিত হয়ে থাকে। এছাড়াও এমফিল ও পিএইচডিসহ লোক-প্রশাসন বিভাগে রয়েছে উচ্চতর গবেষণার বিস্তর সুজোগ। শুধুমাত্র পড়াশুনাই নয় খেলাধূলা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে লোক-প্রশাসন বিভাগ।

এই বিভাগের অধীনে ইতোমধ্যে ১৮টি ব্যাচের ১হাজার ১শত ৮৩জন শিক্ষার্থী স্নাতকত্তোর সম্পন্ন করেছেন। এ বিভাগের পুরাতন শিক্ষার্থীরা দেশের বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়েসহ নিজ বিভাগে শিক্ষকতায় নিয়োজিত আছেন। বিসিএসসহ সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পর্যায়ে প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অনেক শিক্ষার্থী দেশের বাইরে গড়েছেন উন্নত ক্যারিয়ার। একুশ শতকের উন্নত বাংলাদেশ গড়তে লোক-প্রশাসন পাঠ হতে পারে শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন পূরণের সূতিকাগার।

Post MIddle

বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক ড. জুলফিকার হোসেন জানান,‘লোক-প্রশাসন বিভাগ একটি যুগোপযোগী বিভাগ। একঝাঁক মেধাবী শিক্ষকদের দ্বারা ইংরেজি মাধ্যেমে পরিচালিত হয়ে আসছে এ বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম। বর্তমান চাকরির বাজারে লোক-প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থীদের বেশ চাহিদা রয়েছে।’

লোক প্রশাসন বিভাগে অধ্যাপক মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘লোক-প্রশাসন অধ্যায়ন করলে একজন শিক্ষার্থী দেশের এবং বিদেশের প্রশাসন ব্যবস্থা, সমাজ ব্যবস্থা, সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবে। সকল কিছুর সাথে ভারসাম্যমূল্যক সম্পর্ক রক্ষা করতে হলে লোক প্রশাসন পাঠ জরুরী। মানুষের সু-সম্পর্কের জন্য যে জ্ঞান প্রয়োজন তা লোক-প্রশাসন বিষয়ে অর্ন্তভুক্ত আছে। সুসংহত উন্নয়নের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। চমৎকার সমাজ ব্যবস্থা ও গতিশীল প্রশাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে গবেষণা করার বিস্তর সুজোগ আছে লোক-প্রশাসন বিভাগে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন,‘বাংলাদেশ ও জাতিসংঘ ভুক্ত দেশসমূহে এসডিজি অর্জনের পাশাপাশি সু-শাসন নিশ্চত করার বিকল্প নেই। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসনকে দক্ষ ও কার্যকর করার জন্য লোক-প্রশাসন বিষয়ে পাঠ অত্যন্ত জরুরী।’

শিশুর জন্মলাভ করার পর জন্ম নিবন্ধন, জীবন রক্ষা, শিক্ষা জীবন এবং শৈশব, কৈশর ও যৌবন অতিক্রম করে সর্বোচ্চ ডিগ্রী লাভ, কর্মজীবন শুরু করা, পারিবারিক জীবনে প্রবেশ, কর্মজীবন থেকে অবসর গ্রহন করা ও অবসরকালীন সুজোগ সুবিধা, ভোগ এবং অবশেষে মৃত্যু বরণ, পরে মৃত্যু জনিত সনদ প্রদান, মানুষের ব্যক্তি জীবনের সামগ্রিক বিষয়ই লোক প্রশাসন দারা প্রভাবিত। লোক-প্রশাসন অধ্যায়নের বিষয় বা স্বতন্ত্র একটি বিভাগ হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিক থেকে। বিষয়টি এখনও সমাজ বিজ্ঞান অথবা গণমুখী বিষয় রুপে বিকাশমান।

পছন্দের আরো পোস্ট