শাবিতে সংঘর্ষে আহত ১০

শাবি শিক্ষার্থীদের সাথে ধারাবাহিকভাবে সংঘটিত ক্রমবর্ধমান ছিনতাইয়ের ঘটনার প্রতিবাদ ও নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলনে নামা শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় শিক্ষকসহ  অন্তত ১০জন আহত হয়েছেন।

ধারাবাহিকভাবে সংঘটিত ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে সোমবার সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক টানা দুইঘন্টা যাবত অবরোধ করে রাখেন বিক্ষুব্দ শিক্ষার্থীরা। এতে রাস্তার দুইপাশে প্রায় ১০/১২ কি.মি এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী।

ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন শাবি প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ ও জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম স্বপন।

প্রক্টর ও জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ‘ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করে অতি দ্রুত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে’ এমন আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আধা ঘন্টা পর সড়ক অবরোধ থেকে সরে আসার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। আন্দোলন থেকে সরে আসার মূহূর্তে বেপরোয়া গতিতে আসা একটি একটি প্রাইভেট কার কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আহত করলে শিক্ষার্থীরা ভাঙচুর করতে উদ্যত হলে পরিবহন শ্রমিকরা সংঘবদ্ধভাবে রড, লাটিসোটাসহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।

এতে শাহপরান হলের সহকারী প্রভোস্ট আশিস কুমার বনিকসহ পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসীর মধ্যে আহত হয়েছেন আরো চারজন, এছাড়াও জালালাবাদ থানার কনস্টেবল সোহেল রানাও শ্রমিকদের হামলায় আহত হন ।

Post MIddle

প্রক্টর জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তার দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছিল। আমরা উপস্থিত হয়ে তাদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেয়েছিলাম। কিন্ত শেষমূহুর্তে এসে পরিবহন শ্রমিককরা এসে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তারাই এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাদের সংঘর্ষে আমার সহকর্মীসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীও আহত হয়েছে। আইনের মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, আমরা আমাদের ফোর্স বাড়াচ্ছি। পরিস্থতি এখন নিয়ন্ত্রনে আছে। গাড়ি চলাচলও স্বাভাবিক আছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ চার রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিবহন শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

উল্লেখ্য গত একমাস ধরে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে সিএনজিতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে গত রোববার রাতে লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবিনা সুমাইয়া পুষ্পাসহ দুই শিক্ষার্থীকে ছিনতাই করা হয় সিএনজি থেকে।

এদের মধ্যে ১৭জন জালাবাদ থানায় জিডি করেছেন বলে নিশ্চিত করেন জালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম স্বপন। এদিকে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দফায় দফায় নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়ার পর ছিনতাইকারীদের নিয়ন্ত্রন করতে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রশাসনের প্রতিও অভিযোগ তুলছেন শিক্ষার্থীরা।

সড়ক অবরোধে অংশ নেওয়া বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা জানান, একের পর এক শীক্ষার্থীরা ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন এবং প্রতিবারই প্রশাসনকে জানানোর পরেও তারা কোনোরূপ ব্যবস্থা নেননি তাই বাধ্য হয়েই নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আন্দোলনে যেতে হয়েছে।

এদিকে ছিনতাইকারীদের নিয়ন্ত্রনে প্রশাসনের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম স্বপন বলেন,  আমাদেরকে আমাদের কাজ করারসুযোগ দেন। আমরা আজ থেকেই ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

 

পছন্দের আরো পোস্ট