কুবির দত্ত হল: অব্যবস্থাপনার আখড়া

আসন সংকট, ডাইনিংয়ে অনিয়ম, রিডিংরুম সংকট, খেলাধুলার সরঞ্জামের অনুপস্থিতি, বিনোদনকক্ষের বেহাল দশা, বিশুদ্ধ পানির অভাব, ওয়াশরুম-বাথরুমের জঘন্য অবস্থা, ইত্যাদি মিলিয়ে যেন অব্যবস্থাপনার আখড়ায় পরিণত হয়েছে কুমিল্লা বিশ^বিদ্যালয়ের বৃহৎ শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। এতে করে নানাবিধ ভোগান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন বিষয়ে একাধিকবার হল প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও সমাধান না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন একাধিক শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর সুযোগ-সুবিধার কথা শুনলে আমাদের আক্ষেপ ছাড়া আর কিছুই করার থাকেনা। আমরা মানছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ছোট। তাই বলে আমরা ন্যূনতম সুবিধাগুলোও পাবো না?

হলসূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত হল। দুই ব্লকের পাঁচতলা বিশিষ্ট হলটিতে মোট কক্ষ রয়েছে ৪০টি। যাতে ছাত্রদের জন্য বরাদ্দকৃত কক্ষের সংখ্যা ৩৭টি। বাকি তিনটি কক্ষের একটি প্রাধ্যক্ষ অফিস, একটি নামাজের কক্ষ ও অপরটি স্টোররুম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।

Post MIddle

ছাত্রদের জন্য ৩৭টি কক্ষে প্রশাসন কর্তৃক বরাদ্দ দেওয়া মোট আসন সংখ্যা ১৪৮টি যার বিপরীতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দুই শতাধিক। প্রতি কক্ষে ৪জন করে আবাসনব্যবস্থা করা হলেও বর্তমানে কক্ষভেদে থাকছেন ৫/৬/৭ জন করে। অপেক্ষাকৃত জুনিয়র শিক্ষার্থীদের কক্ষে সংখ্যাটা আরও বেশি বলে জানান ভুক্তভোগীরা। আর এসব আসন বন্টনে হল প্রাধ্যক্ষ বা হলের আবাসিক শিক্ষকদের কোনরকম তদারকিও নেই। এতে করে পড়াশোনার চরম ব্যাঘাত ঘটছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

হলের ডাইনিং চালনায় হল প্রশাসনের কোন খবরদারি নেই। মাসশেষে শিক্ষার্থীদের নিজেদের অংশগ্রহনেই ডাইনিংয়ে একজন বা দুইজন ম্যানেজার ঠিক করা হয়। তাদের কাছে শিক্ষার্থীরা টাকা জমা দেন এবং খাবার খান। এছাড়া প্রশাসন কর্তৃক এখনও পর্যন্ত কোন ধরনের ভর্তুকি না দেওয়ায় শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নিজেদের চাঁদার ওপরই চলে ডাইনিংয়ের চাকা। এতে করে মাঝে মাঝেই টাকার অভাবে ডাইনিং অফ হয়ে যায়। এছাড়াও ডাইনিংয়ে টাকা না দিয়ে কতিপয় শিক্ষার্থীদের ফি খাওয়ারও অভিযোগ পাওয়া যায় ম্যানেজারদের কাছ থেকে। তবে কোনও ম্যানেজারই ‘কারা ফ্রি খায়?’-এই প্রশ্নের উত্তরে নাম বলতে রাজি হননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান অপ্রতুলতার মাঝে হলের আসন সংকটকে ‘কপালের লিখন’ বলে মেনে নিলেও নিজেদের পড়াশোনার সুবিধার্থে একটি রিডিংরুম অতীব জরুরী বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী মোশাহিদ আল হাসান বলেন, প্রতি রুমেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা বরাদ্দের অধিক। এতে করে রুমে বসে পড়াশোনার উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়া যায় না বললেই চলে। তাই আলাদা একটি রিডিংরুম খুবই অপরিহার্য।

পছন্দের আরো পোস্ট