চীনের নবায়নযোগ্য শক্তির বিপ্লব

চীন খুব দ্রুতগতিতে সম্পদ এবং এনার্জি স্থানান্তরের কেন্দ্রে পরিনত যার প্রধান কারন হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ। এর ফলে দেশটি যেমন এনার্জির চাহিদা পূরণ করতে পারছে তেমনি নতুন নতুন যন্ত্র আবিষ্কার করছে।

বেইজিং– ২০১৭ সালের শুরুতেই চায়না ঘোষণা দেয় যে, তারা ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৬০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। যেখানে তারা ৮৫ টি কয়লা ভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট করার পরিকল্পনা থেকে তারা সরে আসে। মার্চ মাসে চীনা কর্তৃপক্ষ জরিপ করে দেখতে পায় যে, তারা তাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি এনার্জি উৎপন্ন করছে। তারা এন কয়লা নির্ভরতা কমাতে চাচ্ছে। কিন্তু চায়না শুধু নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ করছে না এবং কয়লা ভিত্তিক শক্তি উৎপাদন থেকে সরে আসছে না। এটি বিশ্বের শক্তি উৎপাদনের অন্যতম পরাশক্তি হতে চাচ্ছে। একই সাথে চায়না বিশ্বের সম্পদ ব্যবহার কম করে, তাদের আবাসিক, শিল্প, বানিজ্যিক ভবন এলাকায় কর্মশক্তির কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য চেষ্ঠা করছে।

Post MIddle

সুপারসাইকেলের নিচে, কিভাবে প্রযুক্তি সম্পদের ব্যবহার কে প্রভাবিত করেছে, এর শিরোনামে ম্যাককিনসি গ্লোবাল ইনস্টিটিউট রির্পোটে বলা হয়েছে, এ সকল প্রবনতা প্রাথমিক শক্তির চাহিদার প্রাচুর্যতাকে ধীরগতিতে পরিনত করেছে, যদি ক্রমবর্ধমান নতুন প্রযুক্তির সাথে খাপ খাওয়ানো চলতে থাকে, তাহলে ২০২৫ সালের মধ্যে শক্তির চাহিদা সর্বোচ্চ থাকবে। এবং বাড়তি কার্যক্ষমতা ও কম- তীব্র  শক্তি ব্যবহার করার কারনে বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্তির উৎপাদন দু-দশক পরেই ৪০-৭০% বাড়বে। যেখানে বিশ্বের শক্তির প্রাচুর্যতা ক্রমেই কমছে। সেখানে শক্তির চাহিদার প্রাচুর্যতায় চায়নার অংশগ্রহন ক্রমেই বাড়ছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে চায়নার শক্তি চাহিদা থাকবে প্রায় ২৮ শতাংশ, যেখানে বর্তমানে রয়েছে ২৩ শতাংশ। চায়না উল্ল্যেখযোগ্য পরিমাণে তাদের খনিজ সম্পদের ব্যবহার কমিয়ে ফেলেছে। ১৯৮০-২০১০ সালের মধ্যে চীনের অর্থনীতি আঠার গুণ বড় হয়, কিন্তু খনিজ সম্পদ ব্যবহৃত হয় পাঁচ গুণ। বিশ্ব ব্যাংকের মতে, এটি চীনের মোট জিডিপির সত্তর শতাংশ খনিজ সম্পদের তীব্রতাকে কমিয়ে ফেলেছে। চায়না সরকারের লক্ষমাত্রা হল ২০১৬-২০২০ সালের মধ্যে তাদের খনিজ শক্তির তীব্রতা ১৫ শতাংশ কমিয়ে ফেলবে।

নবায়নযোগ্য শক্তি হল খনিজ সম্পদের তীব্রতা কমার অন্যতম কারন। চায়না আসা করে তারা এ ক্ষেত্রে বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারবে। চায়না দেশজ  ননবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে প্রতিবছর একশত বিলিয়ন ডলার করে। যেটা ইউরোপ ও আমেরিকার সরকারের এ খাতে বিনিয়োগের চেয়ে বেশি। চায়নার কোম্পানি গুলো বিভিন্ন দেশে প্রায় বত্রিশ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছে এ খাতে। চায়নার রাষ্ট্যয়াত গ্রিড কর্পোরেশন একটি এনার্জি গ্রিড তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে যেটা ঘূর্নিমিল এবং সৌর-প্যানেলের মাধ্যমে বিশ্বের সকল দেশ থেকে শক্তি উৎপন্ন করবে। তবুও চায়না এনার্জি উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনেকটাই কয়লার উপর নির্ভরশীল। তাছাড়াও সোলার প্যানেল ও ঘুর্ণিমিল কে খুব দ্রূত বিদ্যুৎ গ্রিডে যোগ করতে হয়, নাহলে বিদ্যুৎ অপচয় হয়। তাছাড়াও এত সমস্যা থাকা সত্বেও নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কারনে চায়না বিশ্বের ৯০০ বিলিয়ন ডলার থেকে ১.৬ ট্রিলিয়ন ডলার রক্ষা  করতে পারবে।

Project Syndicate থেকে ভাষান্তর

পছন্দের আরো পোস্ট