বুকের জমিনে চাষ করেছি রাজ্যের ফসল

বৈশাখে দক্ষিণের জমিতে চাষ করেছি পপি ফুল। ঠোঁটের ফাঁকে চুমুর নিকোটিন! এতো সুন্দর তামাক ফুল। রূপের সাথে মাতাল করা গুণ,সবই হলো কাল। জমি পুড়ে ছাই। পপির শরীর আঁচড়ে তৈরি হলো আফিম। চোখ ভেসে গেলো জলে। তবু লোকে জানলো সেবছর দেশে বন্যা হয়নি!

তারপর জ্যৈষ্ঠমাসেই আবেগের জমিতে বাস্তবতার ফসল ফলালাম।
কপাল মন্দ! অনুকূলে ছিলো না উষ্ণ জলবায়ু। সঞ্চিত আদ্রতার অভাবে ফলন হলো না বোরো,আউশ আর আমন ধানের। অথচ তাদের খুব প্রয়োজন ছিলো। সোজা কথায় অন্নের অভাব যাকে বলে তাতেই পড়লাম। জীবনের উঠোনে দেখলাম জ্যৈষ্ঠের ঝড়। ঝড়ের পরে দেখি, সেবারই উত্তরের জমিতে অপ্রধান শস্য; যবের ব্যাপক ফলন হলো। প্রয়োজন নেই..তবুও।

সেই অসময়ের পরে আচমকা পশ্চিমের জমিতে প্রাচুর্যের আষাঢ় নামলো। দেখি শ্রাবণের ঢলের মতো ফলেছে তিল ও তিসি। মিথ্যে বলবো না, দেখে ভালোই লেগেছে। এর আগে ওরা কখনোই আসেনি আমার এতো কাছে। ওমা কী অস্বস্তিকর। তার সাথে সম্পর্কের রসায়ন খোঁজা ভাদ্রের অভদ্র যেন! ওদের সাথেই হাজির ওলকচু, মানকচু ও পঞ্চমুখী কচু। দেখতে পারি না দুইচোখে তবুও!

সেবার আশ্বিনে পূর্ব দিকের জমিতে সাঁই সাঁই করে সুখসারির মতো জন্মালো পাট। এই দেখে আমার আশ্বিনের অতিথি কার্তিকেও যায়না! বুকের চারপাশে মনে হচ্ছিল গমগম করছে শুভার্থী। কে জানতো অগ্রহায়ণের চন্দ্রগ্রহণ লাগলে সরে যাবে তারাই।

তারপরও পৌষের ঝরা ফসলের ব্যথা বুকে নিয়ে আবারও বুকে স্বপ্নের বীজ বুনলাম। মধ্যরাতেই মাঘের শীতের মতো মন আকাশে বর্গা নিলো মেঘ। ঘুম ভেঙ্গে দেখি এক বুক সুখনিদ্রার আশায় যে জমিতে তুলা চাষ করেছি তাতে তুমুল বর্ষণ। সে রাতে ঘুম হয়নি আর.

পছন্দের আরো পোস্ট