ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ত:হল বিতর্ক প্রতিযোগিতা

রবিবার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে, ৪র্থ আন্তঃবিভাগীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়।কোরান তেলওয়াত, গীতা পাঠ ও জাতীয় সংগীতের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠানের সুভ সূচনা হয়। এ প্রতিযোগিতা বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলা মাধ্যমে চুড়ান্ত পবের্র প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু ছিল “এই সংসদ অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে পরিবেশের বিপর্যয়কে কোম গুরুত্ব দেবেন” এ বিষয়ের উপর যুক্তিতর্ক শেষে বিরোধী দল গণিত বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং সরকারী দল ফলিত পদার্থবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ রানার আপ হয়।

এ পর্বে স্পীকারের দায়িত্ব পালন করেন আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আরমিন খাতুন এবং বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগের প্রফেসর ড. রেবা মন্ডল, দাওয়াহ্ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. মো্ঃ ইকবাল হোছাইন ।

অপর দিকে ইংরেজি মাধ্যমে বিতর্কের যুক্তিতর্ক শেষে বিরোধী দল আইন ও মুসলিম বিধান বিভাগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে এবং সরকারী দল ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ রানার আপ হয়। এ পর্বে স্পীকারের দায়িত্ব পালন করেন জাতীয় বিতার্কিক ও আন্তঃ বিভাগ বির্তক প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী ইসমেত জেরিন এবং বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন ইংরেজি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. এ এইচ এম আক্তারুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আহসানুল-উল-আম্বিয়া ও ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর ড. মিয়া রাশিদুজ্জামান।

বাংলা ইংরেজি মাধ্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্ব ও পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু হয়। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির মডারেটর ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মোঃ মামুনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা।

Post MIddle

এসময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ ও প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় বিতার্কিক ও আন্তঃ বিভাগ বির্তক প্রতিযোগিতার সমন্বয়কারী ইসমেত জেরিন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, বিতর্ক বাঙালির ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় জীবনের সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। বিতর্কের মধ্যদিয়ে চাই যুক্তি প্রতিষ্ঠা করতে। তিনি বলেন, সমাজ বিনির্মাণের বড় অস্ত্র হচ্ছে যুক্তি। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যুক্তিবাদ রচনা করতে হবে। তিনি বলেন, প্রাচীন গ্রীস ও এথেন্সে বড় বড় রকমের বিতর্ক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজন করা হতো। বিতর্কের মধ্যদিয়ে একটি সত্যে উপনীত হওয়ার চেষ্টা তারা করতেন। মধ্যযুগে যখন পশ্চিমা বিশ্বে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সূত্রপাত হয় এবং তাদের কারিকুলামে, পাঠ্যতালিকায় এবং সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত একটি অনিবার্য বিষয় ছিল বিতর্ক। পরবর্তীতে ১৮শতকের রেঁনেসা এবং আলোকপর্বের যে অগ্রযাত্রা, তার পিছনে অক্সিজেনের মতো কাজ করেছে বিতর্ক।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন, বির্তকের মূল অর্থ হলো যে, কোনটি সত্য, কোনটি যৌক্তিক, কোনটি গ্রহণ করা যাবে-সেটিকে বের করে নিয়ে আসা। বিতর্ক মানুষকে যৌক্তিক করে, বিতর্ক মানুষকে শাণিত করে, বিজ্ঞানমনষ্ক করে, অসাম্প্রদায়িক করে। তিনি বলেন, বিতর্ক একজন মানুষকে যোগ্য করে তোলে কারণ একজন বিতার্কিক কখনো নেতিবাচক জিনিসকে গ্রহণ করে না। বিতর্ক আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক জীবনে অত্যন্ত জরুরী।

অপর বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা বলেন, বিতার্কিকরা বিভিন্ন তথ্য, উপাত্ত দিয়ে দেশ-বিদেশের যে অজানা তথ্যাবলী উপস্থাপন করে এজন্য তারা জ্ঞানী মানুষ হিসেবে হয়ে উঠে। এটি সম্পূর্ণরুপে বিকশিত করতে পারলে দেশ ও জাতী উপকৃত হবে।

পছন্দের আরো পোস্ট