বাল্য বিয়ের শিকার মেয়েটির নাম শিউলি

গ্রামের ছোট্ট মেয়েটির নাম শিউলি। বয়স তার কেবল ছিলো বারো। তার বাবা ছিলো গ্রামের কৃষক আর মা ছিলেন গৃহীনি। সিউলির আরো দুইটি ছোট ভাই আর তার একটা ছোট বোন ছিলো।  তার পারিবারিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না। তার মধ্যে থেকেই মেয়েটি তার পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলো।

কিন্তু তার বাবা তার বিয়ে গ্রামের এক বৃদ্ধ লোকের সাথে ঠিক করে তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। মেয়েটি বাবার ইচ্ছায় রাজি হয়ে যায়। তার বাবা ভেবেছিলো বৃদ্ধ লোকটি তাদের পরিবারে আর্থিক সহায়তা করবে। কিন্তু তার বাবার এই কল্পনার পেছনে লুকিয়ে ছিলো ভয়ংকর এক ভবিষ্যৎ। শিউলির যে বৃদ্ধ লোকটির সাথে বিয়ে দেয়া হয় তার আগেই দুই বউ ছিলো।

লোকটির অনেক টাকা পয়সা ছিলো। বিয়ের দুই মাস পর শিউলির বাবার কাছে খবর এলো তার মেয়ে আর নেই। তার বাবা কিছুই বুঝে উঠতে পারে নি, কেন তার মেয়ে মারা গেলো। একদিন কোনোভাবে শিউলির বাবা জানতে পারে সত্যি ঘটনাটা। শিউলিকে বিয়ে করে সেই লোকটি তাকে ব্যাবহার করতো একটা বাজারের মেয়ের মত করে।

লোকটির ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে অনেকবার সে শিউলিকে দিয়ে দেহ ব্যবসার কাজ করিয়েছে। ছোট্ট শিউলি যখন প্রতিবাদ করতে চাইতো তখন তাকে প্রচুর মারা হতো। শিউলি সব কিছু মেনে নিতো তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে। একদিন শিউলির সয্য ক্ষমতার সীমা পার করলো। কোনো উপায় না পেয়ে সে আত্তহত্যার পথে নিরবে পারি জমালো না ফেরার দেশে।

Post MIddle
রোখসানা পারভীন তরু
লেখিকা । রোখসানা পারভীন তরু

বর্তমান বাংলাদেশ আইন অনুযায়ী অপহিত আর ধর্ষিত মেয়েদের ধর্ষণকারীর সাথেই বিয়ে দেয়ার উপদেশ দিচ্ছে। হয়তো সেইটি শিশুদের বা অপ্রাপ্ত বয়সের মেয়েদের জন্য আরো ভয়ংকর।

কিন্তু এটাই কি সঠিক সমাধান সব কিছুর?

প্রত্যেকটি শিশুর নিজস্ব স্বপ্ন থাকে। হেসে খেলে বেরে ওঠার স্বপ্ন। একটি মেয়ে যখন জন্ম নেয় তখন আল্লার অশেষ রহমত নিয়ে পৃথীবির বুকে আসে। তারা বোঝা নয়। তাদেরকে সময়দিন। তাদের স্বপ্নগুলোকে সময় দিন। কোন মেয়েই চায় না লাঞ্ছনার স্বীকার হতে।

পছন্দের আরো পোস্ট