শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সচেতন করতে সোহাগের অনবদ্য প্রচেষ্টা

সোহাগ একজন সাহসী ও মেধাবী শিক্ষার্থী।  বর্তমানে সে চুয়েটে শেষ বর্ষে অধ্যয়নরত। পড়াশুনার পাশাপাশি সে তার সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে, নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার সচেতন করার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় পড়া-লেখার শেষের দিকে অনেক শিক্ষার্থী হতাশায়  হাবু-ডুবু খেতে থাকেন। তারা বুঝে উঠতে পারে না তারা আসলে কোন দিকে যাবেন, কোন দিকে গেলে তাদের জীবনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে, এসব শিক্ষার্থীদের জন্য সঠিক দিক নির্দেশনার মাধ্যমে জীবনকে সাজিয়ে তুলার জন্য, সোহাগ  তার কয়েকজন ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সহযোগিতায়  চুয়েটে ক্যারিয়ার ক্লাব গঠন করেন, যার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদেরকে ক্যারিয়ার সচেতন করে তোলা।

আজ সোহাগ এ কাজটিতে অনেকাংশেই সফল। চুয়েটের শিক্ষার্থীরা এখন অনেক বেশী ক্যারিয়ার সচেতন। সোহাগ নিজের কাজের প্রতি গভীরভাবে  মনোযোগ দিয়েছে বলে সেই ক্যারিয়ার সচেতন করার  কাজটিতে সফলতা পেয়েছেন।  আমরা যে কাজই করি না কেন সেই কাজকে অনেক বেশি পরিমাণে ভালোবাসতে হবে। ভালোলাগা তৈরি করতে হবে।  কারণ ভালোলাগার মূল্য অনেক বেশি। আপনি যদি ভাল ক্যারিয়ার গড়তে ভালোবাসেন, ক্যারিয়ার নিয়ে কাজ করে সফল হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে কাজটি মন থেকে এবং আন্তরিকতার সাথে করতে হবে।

স্বপ্ন শুধু দেখার বিষয় নয় । স্বপ্ন পূরণ করার মাঝেই আছে পূর্ণ সার্থকতা। আর সে স্বপ্ন পূরনে  আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে।  মানুষ অনেক স্বপ্নই দেখে । সব হয়তো পূরণ করা সম্ভব হয় না। তবে চেষ্টা করতে দোষ কি! অন্তত এতটুকু বলা যাবে, আমি আমার স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টা করেছি। ঠিক যেমনটা চেষ্টা করে চলেছেন সোহাগ।

সোহাগ প্রতিনিধি’কে জানান,”আমি সবসময় চেয়েছি চুয়েটের জন্য কিছু করতে। বড় পরিসরে ভাবলে দেশের জন্যই করতে চাই সবসময়। আমি সবসময় চেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যারিয়ার সচেতন হোক। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শেষের দিকে অনেক শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে যায়। তারা বুঝে উঠতে পারে না তারা আসলে কোন দিকে যাবে। কিন্তু আমি চেয়েছি শিক্ষার্থীরা ক্যারিয়ার সচেতন হয়ে উঠবে এবং শুরুতেই একটা লক্ষ্য স্থির করবে। শুধু লক্ষ্য স্থির ই নয় তারা সে লক্ষ্য অর্জনে কি করবে সেটাও তারা বুঝে উঠবে।

Post MIddle

আমি চুয়েটে শিক্ষার্থী দের মধ্যে ক্যারিয়ার সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য গত ১ বছর ধরে আমার টিম নিয়ে কাজ করছি। আমাদের কয়েকজনের প্রচেষ্টায় চুয়েটে ক্যারিয়ার ক্লাব গঠিত হয় যার উদ্দেশ্য ছিল শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার  সচেতন করা। লো সিজিপিএ থাকলেও যে একজন মানুষ অন্য দক্ষতা যেমন যোগাযোগ দক্ষতা, উপস্থাপনা দক্ষতা, কুইজ দক্ষতা, গবেষণা দক্ষতা, উদ্যোক্তা দক্ষতার মাধ্যমে নিজেকে সফলতার স্বর্ন শিখরে নিয়ে যেতে পারে সেটা উপলব্ধি করানোর চেষ্টা করেছি। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সবসময় মনে করি “একজন মানুষ কে শুধু সিজিপিএ এর ভিত্তিতে নয় সেই সাথে তার দক্ষতার ভিত্তিতেও বিচার করা দরকার। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুঁথিগত বিদ্যা মুখস্থ করার জন্য আসিনি, আমরা এখানে এসেছি দক্ষতার অর্জনের মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত হতে।”

কিন্তু দক্ষতা অর্জনের চর্চা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সত্যি খুব কম হয়। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী শুধু সিজিপিএর পিছনে ছুটে কিন্তু প্রফেশনাল জীবনে যে স্কিল গুলো দরকার তার পেছনে খুবই কম ছুটে।

আমরা গত ৭ এপ্রিল চুয়েটে প্রথমবারের মত “ক্যারিয়ার ফেস্ট করলাম “। যেখানে ৯ টি কোম্পানি অংশগ্রহণ করে। এই প্রোগ্রাম টা করার জন্য আমরা প্রায় ৩৫ টি কোম্পানিতে গিয়েছি। সেখানে উচ্চপদস্থ কর্পোরেট কর্মকর্তাদের সাথে ক্যারিয়ার নিয়ে অনেক আলাপ করেছি, অনেক কিছু জেনেছি। আমার মনে হয়েছে তারা যা চাই তা বিশ্ববিদ্যালয়ের শুধু মাত্র একাডেমিক পড়াশুনা থেকে আসলেই অর্জন করা সম্ভব না। এজন্য আমাদের নিজ থেকে আরো দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন।

আমি সবসময় চেয়েছি চুয়েটের শিক্ষার্থীরা মধ্যে ক্যারিয়ার সচেতনতা সৃষ্টি হোক। সত্যি এখন অনেক ভাল লাগে এটা দেখে যে, চুয়েটের শিক্ষার্থীরা এখন অনেক বেশি ক্যারিয়ার সচেতন তার প্রমাণ আমরা ক্যারিয়ার ফেস্টে দেখেছি। আসলে আমি এই পরিবেশ টা আনার জন্যই অনেকদিন ধরে নিরলস পরিশ্রম করছি। আমার টিমের সদস্যরা বিশেষ করে আব্দুল মাতিন এবং এ. এইচ. এম. সাইফুল্লাহ আমাকে এ ব্যাপারে সবসময় সহযোগিতা করেছে। তারা সবসময় আমার পাশে থেকেছে।

আমি স্বপ্ন দেখি চুয়েটের শিক্ষার্থীরা একদিন এক একজন এক এক বিষয়ে ব্র্যান্ড হবে। আমি স্বপ্ন দেখি তারা একদিন দেশের অন্যান্য শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন দেখাবে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার পাশাপাশি এদেশের তরুণদের জন্য কাজ করতে চাই।”

পছন্দের আরো পোস্ট