পালিত হলো পিএসসির প্রতিষ্ঠা দিবস

একেকটি বিসিএস পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ করতে দেড় বছর থেকে আড়াই বছর সময় লেগে গেলেও এখন থেকে এক বছরের মধ্যেই তা শেষ করতে চায় পিএসসি।গতকাল (০৮এপ্রিল) শনিবার সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) প্রতিষ্ঠা দিবস পালন উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনার ও আলোচনা অনুষ্ঠানে ঘুরেফিরে এই কথাটিই উঠে আসে। ১৯৭২ সালের ৮ এপ্রিল পিএসসি প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আগারগাঁওয়ে পিএসসির হলরুমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও দেশ গড়ার যুদ্ধটা শেষ হয়ে যায়নি। দেশ, দুনিয়া কোন দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দেশের মানুষের দারিদ্র্য দূর করতে যোগ্য সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে। পিএসসিকে এ জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করতে হবে।

জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবাও সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। কিন্তু তিনি সেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে পরে শিক্ষকতায় যুক্ত হন। আমি আনন্দিত যে পিএসসি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা, দক্ষতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।’

অনুষ্ঠানের সভাপতি পিএসসির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, ‘১৯৭২ সালের ৮ এপ্রিলের পর এ পর্যন্ত ৭১ হাজার ৫০৭ জনকে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছে পিএসসি। ৩৬ ও ৩৭তম বিসিএসের নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হলে এই সংখ্যা হবে ৭৫ হাজার ২৩৩ জন। আজ সরকারি কর্মকর্তাদের হাত ধরে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন, তাতে পিএসসির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। কারণ পিএসসিই যাচাই–বাছাই করে এই কর্মকর্তাদের নিয়োগের সুপারিশ করেছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় জনপ্রশাসনে দেশপ্রেমিক, দক্ষ ও মেধাবী জনশক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আন্তরিকতা, দক্ষতা ও সততা নিয়ে সবাইকে কাজ করতে হবে। এ জন্য সবার সহযোগিতা দরকার।’

Post MIddle

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমাদের সময় দেখতাম ’৮৪ সালের বিসিএস ব্যাচ ’৮৬ সালে যোগ দিয়েছে। ’৮৬ সালের ব্যাচ যোগ দিয়েছে ’৮৮ সালে। এখন অবশ্য ৩৪, ৩৫, ৩৬তম বিসিএস এভাবে বলা হয়। তাতে কোন সালে পরীক্ষা আর কোন সালে যোগদান, সেটা বোঝা যায় না। এটা একটা কৌশল। কিন্তু এরপরও পিএসসি যে এক বছরের মধ্যেই নিয়োগ শেষ করার কথা বলছে, এটি খুবই ইতিবাচক। আর আগের থেকে অনেক দ্রুততার সঙ্গে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে। আরও গতিশীল করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে অব্যাহতভাবে সহযোগিতা প্রদান করা হবে।’

পিএসসির সচিব আকতারী মমতাজ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। সেমিনারে ‘বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের নিকট প্রজাতন্ত্রের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পিএসসির সদস্য আবদুল জব্বার খান। তিনি তাঁর প্রবন্ধে স্বল্পতম সময়ে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার নিয়োগ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন।

পিএসসির সদস্য শরীফ এনামুল কবির বলেন, ‘আমি ৩৫তম বিসিএসের দায়িত্বে ছিলাম। এই বিসিএসে ১৮ মাস লেগেছে। এর মধ্যে তিন মাস গেছে পরীক্ষার হল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে। তিন মাস গেছে প্রশ্নপত্র ছাপাতে। আমি মনে করি, এক বছরের মধ্যেই নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব।’

আলোচনা অনুষ্ঠান শুরুর আগে প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে প্রতিষ্ঠা দিবসের কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আলোচনা শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

পছন্দের আরো পোস্ট