খুবিতে এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের রজতজয়ন্তী
আজ (৩১ মার্চ ২০১৭) শুক্রবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন রিসোর্স টেকনোলজি (এফএমআরটি) ডিসিপ্লিনের রজতজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ডিসিপ্লিন এবং এফএমআরটি এলামনাই এ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে এ রজতজয়ন্তী উদ্যাপনের আয়োজন করেছে। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে ৯টায় বেলুন উড়িয়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।
পরে তাঁর নেতৃত্বে শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্ত্বর থেকে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনের সামনে দিয়ে পুণরায় হাদী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে উপাচার্য রজতজয়ন্তী কেক কাটেন। পরে সকাল সাড়ে ১০ টায় আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে রজতজয়ন্তী উদ্যাপন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের ২৫বছরপূর্তিতে রজতজয়ন্তী উদ্যাপনে এমন নান্দনিক ও প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানের আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন দেশকে এগিয়ে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদের সবচেয়ে বেশি কমিটমেন্ট থাকতে হবে। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফএমআরটি ডিসিপ্লিন থেকে গত ২৫বছরে উত্তীর্ণ গ্রাজুয়েট দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পেশায় নিজেদের শক্ত অবস্থান সৃষ্টি করে নেয়ার জন্যও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন মৎস্য বিজ্ঞানীদের অবদানের কারণে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বিলুপ্তপ্রায় মাছের প্রজাতি রক্ষা এবং তার উৎপাদন বৃদ্ধিতে আরও গবেষণা চালানো এবং প্রজনন মৌসুমে ২-৩ মাস সামুদ্রিক মৎস্য ছাড়া দেশীয় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা যায় কিনা সে বিষয়ে ভেবে দেখার জন্য আহবান জানান।
তিনি বলেন বর্তমান সরকারের সমুদ্র বিজয়ের মাধ্যমে ব্লু অর্থনীতির যে বিপুল সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে সে ক্ষেত্রে এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। এ জন্য ডিসিপ্লিনের কারিকুলা প্রণয়নে, সিলেবাস বিন্যাসে সামুদ্রিক সম্পদ বিষয়ে কোর্স আরও বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তিনি এলঅমনাইদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং পরামর্শ প্রদানের আহবান জানান। তিনি আরও বলেন এখন এফএমআরটি এলামনাইদের সময় হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও এগিয়ে নিতে অবদান রাখার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত নতুন কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে গবেষণাসংক্রান্ত যন্ত্রপাতি দিয়ে অবদান রাখার জন্যও তাদের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন আমরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে কোয়ালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। আগামী সাড়ে চার বছরের মধ্যে বিভিন্ন পরিকাঠামো উন্নয়নে প্রায় দুইশত কোটি টাকা ব্যয় করা হবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সামগ্রিক উন্নয়ন প্রচেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক,প্রাক্তন গ্রাজুয়েট ও বর্তমান শিক্ষার্থীসহ সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করে রজতজয়ন্তী উৎসবের সাফল্য কামনা করেন।
রজতজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটির আহবায়ক মোঃ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর এ কে ফজলুল হক, এফএমআরটি ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. গাউছিয়াতুর রেজা বানু। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির সচিব মনীষ কুমার মন্ডল। এছাড়া মূল নিবন্ধ পাওয়ার পয়েন্টে তুলে ধরেন এফএমআরটি এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি খন্দকার মাজহাব উদ্দিন পল্লব। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ জন শিক্ষার্থীকে এলামনাই স্কলারশীপ এবং ২ জন প্রাক্তন গ্রাজুয়েট তাদের পেশাগত কাজের জন্য জাতীয় পর্যায়ে সরকারের গোল্ড মেডেল পাওয়ায় তাদেরকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
এছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিলো স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ব্যান্ডশো। আনন্দ-উৎসবের মধ্যে দিনটি উদ্যাপিত হয়। এসময় সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, এলামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, রজতজয়ন্তী উপলক্ষে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে। ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে উৎসবমুখর। ১৯৯২ সালে এফএমআরটি ডিসিপ্লিন চালু হওয়ার গত পঁচিশ বছরে পাঁচ শতাধিক উত্তীর্ণ গ্রাজুয়েট এখন দেশ-বিদেশে সরকারি, বেসরকারি, আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক সংস্থাসহ বিভিন্ন স্থানে সুনামের সাথে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছেন। রজতজয়ন্তী উপলক্ষে তাদের সম্মিলনকে কেন্দ্র করে ডিসিপ্লিন আনন্দমুখর হয়ে উঠেছে।