ইবিতে মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা প্রদান ও আলোচনাসভা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন উপলক্ষ্যে প্রশাসন ভবনের তৃতীয়তলার সভাকক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ১৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠানে উদযাপন উপ-কমিটির আহবায়ক, প্রক্টর প্রফেসর ড. মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত সত্য ইতিহাস আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে।

তিনি বলেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় কিছু আলবদর, আলশামস, রাজাকার ও পিচ কমিটির সদস্য ছাড়া দেশের সকলেই ছিল মুক্তিযোদ্ধা। সেসময় বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে ব্রজকন্ঠে উচ্চারিত“এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম” এই মুক্তিযুদ্ধের ডাক মুহূর্তের মধ্যে বাঙালী জাতির কাছে ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই নিরস্ত বাঙালীরা দাঁ, বটি, কাস্তে, কুড়াল, লাঠিসোটা যার কাছে যা ছিল তাই নিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল।

ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন দেশে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা না করে বরং রাজাকারদের তালিকা করা উচিত। তিনি বলেন আমাদের যেহেতু এখন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের সুযোগ নেই সেক্ষেএে মানস মুক্তিযোদ্ধা হাওয়া যাবে সবসময়। দেশ থেকে সকল ধরনের সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষ উপড়ে ফেলার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ পরিচালিত করতে হলে আমাদের সকলকেই মানস মুক্তিযোদ্ধা হতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন মহান মক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আর্দশকে বুকে ধারন করে দল মত পথ নির্বিশেষের উদ্ধে উঠে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধীরা যেন এদেশে রাজনীতি করবার সুযোগ না পায় সেদিকটি সকল প্রকৃত দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিকের খেয়াল রাখা। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয় এবং কোন ধরনের অন্যায়ের কাছে মাথানত না করা ও অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবার জন্য উপস্থিত সকলের প্রতি আহবান জানান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান বলেন বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে আজ আলাদা ভুখন্ড হিসাবে জায়গা করে নিতে পেরেছে। হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী, বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেএী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানের জন্য সরকার ঘোষিত ভিশন ২০-২১ এবং রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন হলে অচিরেই বাংলাদেশ হবে পৃথিবীর কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সম্মানিত অতিথি ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ। ্ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ১৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান এবং শহীদ পরিবারের সন্তানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন ভাইস-চ্যান্সেলর এর পি এস উপ-পরিচালক রেজাউল করীম।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, ছাএলীগ ইবি শাখার সভাপতি সাইফুল ইসলাম, কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি সামছুল ইসলাম জোহা, সহায়ক কর্মচারী সমিতির সভাপতি উকিল উদ্দিন , সাধারন কর্মচারী সমিতির সভাপতি আতিয়ার রহমান প্রমুখ।

Post MIddle

২৬ মার্চঅনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. শামসুল আলম, , ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কাজী আখতার হোসেন, ছাএ-উপদেষ্ঠা প্রফেসর ড. আনোয়ারুল হক, শিক্ষক সমিতির সাধারন সম্পাদক প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন, প্রফেসর ড. আনম রেজাউল করীম, প্রফেসর ড. মাহবুবল আরফিন, প্রফেসর ড. মতিনুর রহমান, প্রফেসর ড. জাকাারিয়া রহমান, প্রফেসর ড. রেজাউল করীম, প্রফেসর ড. মোহাঃ মেহের আলী, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. মোহাম্মদ সোহেল, গ্রন্হাগারিক (ভারঃ) আতাউর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (ভারঃ) আব্দুস সালাম, ,হিসাব পরিচালক (ভারঃ) আকামুদ্দিন বিশ্বাস, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এ কে আজাদ, জনসংযোগ অফিসের উপ-পরিচালক আতাউল হকসহ সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র –ছাত্রী ও ছাএলীগ ইবি শাখার নেতা-কমীবৃন্দ।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন জনসংযোগ অফিসের সহকারী পরিচালক রাজিবুল ইসলাম। এর আগে সোমবার সকাল ৯টায় প্রশাসন ভবন চত্বরে গার্ড অব অনারসহ জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী এবং বিশ্ববিদ্যালয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান।

উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ। এসময় প্রভোস্টগণ নিজ নিজ হলে একইভাবে জাতীয় পতাকা ও হল পতাকা উত্তোলন করেন। সকাল সোয়া ৯টায় মহান স¦াধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে প্রশাসনভবন চত্বর হতে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী এর নেতৃত্বে একটি র‌্যালী অনুষ্ঠিত হয়। র‌্যালীতে উপস্থিত ছিলেন প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, চেয়ারম্যান, প্রভোস্ট, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা, বিভাগীয় প্রধানসহ সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রী ও ছাএলীগ ইবি শাখার নেতা-কমীবৃন্দ। র‌্যালীটি ক্যাম্পেসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ সৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালি শেষে সকাল সাড়ে ৯টায় শহীদ স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। সাথে ছিলেন প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা ও ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ। এরপর পর্যায়ক্রমে সর্বস্তরের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, ছাত্র-ছাত্রী, বিভিন্ন বিভাগ, বিভিন্ন হল, বিভিন্ন পরিষদ/ফোরাম এবং সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহ ঘোষণা অনুযায়ী সুশৃংখলভাবে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

পুস্পস্তবক অর্পণ শেষে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন ও মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম কাম খতিব ড. আ.স.ম শোয়াইব আহমাদ।

পছন্দের আরো পোস্ট