বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে মাদকবিরোধী সেমিনার
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাদকাসক্তির প্রবণতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আশঙ্কাজনক হারে বিভিন্ন ধরনের মরনঘাতী মাদকে জড়িয়ে পড়েছে। সন্তানদের মাদক নির্ভরতার কারণে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা, উৎকন্ঠার শেষ নেই। আজ (২২ মার্চ ২০১৭) বুধবার সকালে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত “জীবনের জন্য মাদককে না বলুন” শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা উপরোক্ত মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তি মানসিক এবং মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের প্রধান মনোচিকিৎসক অধ্যাপক নাজ করিম।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ৪১ তম ব্যাচের ২ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির (বিইউ) বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর সেক্রেটারী ইঞ্জি: এম.এ. গোলাম দস্তগীর, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রজন্মলীগের সভাপতি মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিএসই বিভাগের প্রধান মোঃ সাদিক ইকবাল এবং ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক সুবর্ণা সেলিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক শরীফ।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক নাজ করিম বলেন, বর্তমানে শিক্ষার্থীদের কাছে মাদকদ্রব্য সহজলভ্য হয়ে পড়েছে। উচ্চবিত্তের পরিবারের সন্তানরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে নিবিড় তদারকি ও নিয়মিত ড্রাগ টেষ্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাদকের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের একটি প্রাথমিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে প্রায় ৯০ হাজারের মতো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থী ইয়াবা সেবন করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে ১০ হাজার নারী শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্র্থীদের বয়স ২০ থেকে ২৫ এর মধ্যে। এদের প্রায় ৭০ শতাংশ উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জি: এম.এ. গোলাম দস্তগীর বলেন, মাদক থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে পারিবারিকভাবে তাদের সময় দিতে হবে। তাদের প্রতি মনোযোগ ও সহমর্মিতা বাড়াতে হবে। সন্তান কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে মিশছে, কেমন আচরন করছে সবকিছু খেয়াল রাখতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে বিইউ’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল হক শরীফ বলেন, মাদকের আগ্রাসন থেকে রক্ষা পেতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ড্রাগ টেষ্ট করা দরকার। তাহলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরী হবে। আমরা মনে করি, সরকারি-বেসরকারি যে কোনো চাকরিতে ঢোকার সময়ই প্রতিটি প্রার্থীকে ডোপ টেষ্টের আওতায় আনা উচিত।
অনুষ্ঠানে দ্বিতীয় পর্বে ৪১ ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের অংশ গ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।