ইবিতে চ-ইউনিটের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা পুনরায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্র্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট এবং কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ও মহামান্য হাইকোর্টের ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে জারিকৃত রুল অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা হতে ১১টা পর্যন্ত চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য গত ৬ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য ২৩৩ তম সিন্ডিকেট সভায় চ-ইউনিটের প্রশ্নপএ ফাঁসের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্র্তৃপক্ষ সিন্ডিকেটে সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত মোতাবেক চ-ইউনিটের পুরো ভর্তি বাতিল করে এবং পুনরায় পরীক্ষা গ্রহনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেয়। চ-ইউনিটের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষায় আজ ১১১৬ জন পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে। এছাড়া গত ভর্তি পরীক্ষায় ২৯৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২৩০৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগহন করেছিল।
পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের তৃতীয়তলার সভাকক্ষে অনির্ধারিত ধন্যবাদ প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন আজকের এই ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দল মত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রতিটি সদস্য। যা আজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অনন্য ঘটনা ঘটালো বিষয়টি যেকোন বিবেচনায় ইতিবাচক।
ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ বৃহস্পতিবার ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সুষ্ঠু, সুন্দর, শান্তিপূর্ণভাবে ও উৎসবমুখর এবং নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তামুলক পরিবেশে চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনে সর্বাত্তকভাবে সহযোগীতা করে এবং ভর্তি পরীক্ষা পুনরায় গ্রহনে কোন রকমের পারিশ্রমিক না নেয়া তা অবশ্যই প্রশংসার দাবী রাখে। তিনি বলেন সারা দেশে গত কয়েক দিনের আলোচিত ঘটনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা।
ভর্তি পরীক্ষার জালিযাতির বিরেদ্ধ রুখে দাড়ানো ভবিষ্যৎতের যেকোন পরীক্ষা গ্রহনের ব্যাপারে চরম সুবিচার বহন করবে এবং কেউ সামনের দিনগুলোতে পরীক্ষায় প্রশ্নপএ ফাঁসের জালিয়াতের সাহস দেখাবে না। তিনি বলেন স্বেচ্ছাশ্রমমুলক সেবা অন্য কোথাও হয়েছে কিনা সন্দেহ আছে তবে একটি ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তা অনন্য উদাহরন হয়ে থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে।
তিনি বলেন ভবিষ্যতের আমাদের সকলকে কাধে কাধ মিলিয়ে সকল ধরনের অনাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে। তিনি চ-ইউনিটের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহনের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে ধন্যবাদ জানান। প্রো ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন আমাদের পরিবারের সদস্যরা যেকোন ভালো উদ্দোগে বিনা পয়সাই কাজ করতে পারে তার একটি অনন্য নজির সৃষ্টি হলো।
তিনি বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকলকেই স্বতস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসতে হবে যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দ্রুত আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত করা যায়। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন আমাদের সামনের দিনগুলো যেন আরো শুভ হয়। ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা বলেন এই পরীক্ষাটি বাংলাদেশের ইতিহাসে ভিন্নধর্মী। এই ধরনের পরীক্ষা গ্রহন আগে কখনও কোথা ও হয়েছে কিনা জানিনা। তবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আজ তা করে দেখাল। যেখানে সত্যের জয় হয়েছে। মহামান্য আদালত যে রায় দিয়েছে তার মধ্যে দিয়ে তা প্রতিফলিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেন আমরা বিপদে আপদে এভাবে কাধে কাধ মিলিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে পারি এবং আমরা যেন তা ধরে রাখতে পারি এ আশাবাদ তিনি ব্যক্ত করেন।
অনির্ধারিত ধন্যবাদ প্রকাশ অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান, চ-ইউনিটের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মনিরুজ্জামান। উপস্থিত ছিলেন অনষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি, প্রভোস্ট, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এস এম আব্দুল লতিফসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। উল্লেখ্য যে চ-ইউনিটের পুনরায় ভর্তি পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন প্রফেসর ড. এম মনিরুজ্জামান, প্রফেসর ড. কে এম আব্দুস সোবহান, প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার।