পাবলিক পার্লামেন্ট বিতর্কে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি জয়ী
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে পরিবেশে সুরক্ষায় যেসব উৎকন্ঠা সমাজের নানা শ্রেনী থেকে আসছে সেই সকল বিষয়গুলোকে মাথায় রেখেই এ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করছে বলে দাবি করে আসছে সরকার। তারপরও পরিবেশবাদী সহ সূূশীল সমাজ বলছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করা হলে সুন্দরবনের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে। আশ-পাশের মৎসজীবি, বনজীবি সহ বিভিন্ন শ্রেনী-পেশার ৪ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা দাবি করে আসছে। পরিবেশবাদীদের মতে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান স্থগিত রেখে ভারত সরকারের সাথে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করা উচিত। এমনই এক প্রেক্ষাপটে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এক ছায়া সংসদের আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিযোগিতায় সরকারি দল গ্রীণ ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশকে পরাজিত করে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি বিজয়ী হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, প্রতিটি উন্নয়ন উদ্যোগের কিছু নেতিবাচক প্রভাব থাকে, তাই বলে উন্নয়ন থামিয়ে রাখা যায় না। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে কেউ কেউ পরিবেশের ক্ষতির আশংকা করলেও ঝুঁকি নিরসনে সর্বাধুনিক প্রযুিক্ত ব্যবহারের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ফলে সুন্দরবনের ক্ষতি হবে না । তাই এ নিয়ে অতি উদ্বেগ কাম্য নয় বলে উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি আরো বলেন, সরকার সব সময়ই দেশের মঙ্গল চায়। দেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। আর এই অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। এ নিয়ে পরিবেশবিদসহ কারো যদি এখনও কোন সংশয় থাকে, তাদেরকে তিনি রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শনের আহবান জানান।
সভাপতির বক্ত্যব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, সুন্দরবন শুধু আমাদের ঐতিহ্যই নয়, এটি বিশ্ব ঐতিহ্যও বটে। তাই এর সুরক্ষা আমাদের দায়িত্ব। অন্যদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনও দেশের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত জরুরী। এ কারণেই পরিবেশ সুরক্ষা ও বিদ্যুৎ উৎপাদন-দুটো বিষয় নিয়েই আমাদের সমানভাবে ভাবতে হবে। সুন্দরবনের ক্ষতি হোক তা যেমন আমরা চাই না, তেমনি দেশের উন্নয়নের চালিকা শক্তি বিদ্যুৎ-এর ঘাটতি হোক তাও আমরা চাই না। তিনি টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে সরকারকে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন নিয়ে আরো সুক্ষ ও নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার আহবান জানান। প্রয়োজনে এ বিষয়ে জনমত যাচাইয়ের জন্য সংবিধান সংশোধন করে গণভোট করা যেতে পারে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
বিজয়ী দল জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভাসির্টির বিতার্কিকরা হলো মুশফিক উস সালেহীন, মো: শাহিনুর রহমান ও দিলশান হোসেন দিনা। প্রতিযোগিতা শেষে বিতার্কিকদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।