রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরিখ সাহিত্য সম্মেলন শুরু
বাংলা সাহিত্য বিষয়ক এক সম্মেলন আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে। এদিন সকাল ৯টায় শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ‘নিরিখ সাহিত্য সম্মেলন’ শীর্ষক দু’দিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক প্রফেসর হাসান আজিজুল হক। সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর মুহম্মদ মিজানউদ্দিন ও বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী সারওয়ার জাহান। ক্যাম্পাসের শিল্প ও সমাজ বিষয়ক সাময়িকী ‘নিরিখ’ আয়োজিত এই সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘বাংলার সাহিত্য বাঙালির সাহিত্য’।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিরিখ সাহিত্য সম্মেলনের সভাপতি বাংলা বিভাগের প্রফেসর সফিকুন্নবী সামাদী। সম্মেলনের সচিব ফোকলোর বিভাগের প্রফেসর মোস্তফা তারিকুল আহসান সেখানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সরিফা সালোয়া ডিনা।
সম্মেলন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ বলেন, বাংলা সাহিত্যের পরিসর, সময়কাল, চর্চা এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাতিসত্ত্বা, জনপদ ও জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করলে এর তাৎপর্য ও গুরুত্ব অসামান্য। প্রাচীন ও মধ্যযুগ পেরিয়ে আধুনিককালে বাঙালি জাতির বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের পাশাপাশি বাংলা সাহিত্য নানা প্রপঞ্চের সাথে জড়িত হয়েছে। ঔপনিবেশিক শাসনের প্রভাব এবং বিশ্বসাহিত্য-সংস্কৃতির সংযোগে বাংলা সাহিত্য এবং এর আলোচনার গতিমুখ সতত পরিবর্তিত হয়েছে। এর বিষয়বস্তু ও কাঠামোতে পরিবর্তনও এসেছে। সৃজনশীল, মননশীল গবেষণা ও অনুবাদ সব ক্ষেত্রেই পরিবর্তনের এই ধারাকে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করা জরুরি।
অন্যান্য ভাষার সাহিত্যের নানা তত্ত্ব ও প্রবণতাকেও বাঙালি লেখকগণ অনেক সময়েই গ্রহণ করেছেন। এই সংশ্লিষ্টতা অনেক ক্ষেত্রে বাংলার সাহিত্যে বৈচিত্র্য ও বিস্তৃতি এনেছে। আজ বাঙালি জাতি, বাংলা ভাষাভাষী মানুষ ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীর নানাপ্রান্তে। বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবনযাত্রা ও নানামুখী সংযোগের কারণে বাংলার সাহিত্য জগত পেয়েছে বহুমাত্রিকতা। সামগ্রিক বিবেচনায় বাঙালির যাবতীয় সাহিত্য সম্ভারকে ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ এবং পাশাপাশি বাংলা জনপদের অন্যান্য ভাষার সাহিত্যের সাথে একে মিলিয়ে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে এই সম্মেলন।
সম্মেলনের প্রথম দিনে আজ ৭টি অধিবেশনে কথাসাহিত্য, কবিতা ও নাটক, ইংরেজি, উর্দু ও হিন্দি সাহিত্য, অনুবাদ সাহিত্য এবং প্রাগাধুনিক বিষয়ে ২২টি প্রবন্ধ ও দ্বিতীয় দিনে ৬টি অধিবেশনে ২৫টি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে বলে নির্ধারিত আছে। বাংলাদেশ ও ভারত থেকে শতাধিক কবি-সাহিত্যিক, ভাষাবিদ ও গবেষক এই সাহিত্য সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
সম্মেলন উদ্বোধনের পর অংশগ্রহণকারীরা শোভাযাত্রাসহ শহীদ মিনারে যেয়ে সেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।