খুবিতে সিইটিএল এর দিনব্যাপী কর্মশালা
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. সত্যেন্দ্রনাথ বসু একাডেমিক ভবনের স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের লেকচার থিয়েটার উঠানে শনিবার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন টিচিং এন্ড লার্নিং (সিইটিএল) এর উদ্যোগে দিনব্যাপী ইনডাকশন ফর দ্য লেকচারার শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
সিইটিএল এর পরিচালক প্রফেসর ড. আফরোজা পারভীনের সভাপতিত্বে কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। কি-নোট স্পিকার হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক ও আইকিউএসি এর নতুন পরিচালকসহ অতিরিক্ত পরিচালকদ্বয়কে তাঁর ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে মানসম্মত বিশ্ববিদ্যালয় করার জন্য যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল হচ্ছে তার সারথি। তিনি বলেন উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন দরকার, সে অনুযায়ী জ্ঞানচর্চার অব্যাহত ধারায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সবসময় জাগ্রত আছে। তিনি আরও বলেন আমাদের শিক্ষকরা এক একজন দার্শনিক যার কোনো লোভ থাকবে না। তাহলে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাকতার সার্থকতা আসবে। তিনি নবীন শিক্ষকদের প্রতি গবেষণাকর্মে জোর দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন আপনারা দেখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে রাতে আলো জ্বলছে। এর মানেই হচ্ছে শিক্ষকরা তাদের গবেষণার কাজে লিপ্ত আছেন।
কি-নোট স্পিকারের বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাদানের দর্শনের ওপর আলোচনায় বলেন শিক্ষক হচ্ছে বিবেকের কণ্ঠস্বর। শিক্ষক কোনো প্রলোভনের কাছে বিক্রি হয় না। শিক্ষক দেশ ও মাতৃভূমি ছাড়া কারো কাছে মাথা নত করে না। তিনি আরও বলেন শিক্ষকতা কোনো চকুরি নয়, শিক্ষকতা একটি আদর্শ। দেশকে সেবা করার শ্রেষ্ঠ পথ হচ্ছে শিক্ষকতা। তিনি আরও বলেন জ্ঞানকে বিকশিত করার সুযোগ বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে থাকে যা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না। বিশ্ব বিদ্যা যেখানে চর্চা হবে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়। এখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে শেখার অনেক কিছু আছে। তিনি নবীন শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা এতদাঞ্চলের প্রয়োজনগুলো দেখবেন এটা এখানকার মানুষের প্রত্যাশা। আপনারা নিপীড়িত মানুষ, বঞ্চিত মানুষের পাশে আশার আলো হতে পারেন। হতে পারেন-পথের দিশারী। তিনি আরও বলেন যে শিক্ষা আমাদেরকে মানুষ করবে, আমার সংস্কৃতিকে ধারণ করবে এবং আমার ভাষাকে লালন করবে আমরা সেই শিক্ষাই চায়। তিনি বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনার্স ও মাস্টার্সের অনেক বিভাগে থিসিস নেই কিন্তু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আছে এর জন্য আপনাদেরকে অভিনন্দন জানাই।
টেকনিক্যাল সেশনে বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. আহমেদ আহসানুজ্জামান, স্থাপত্য ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. অনির্বাণ মোস্তফা, সিআইএসএস এর পরিচালক প্রফেসর ড. দিলীপ কুমার দত্ত, সিইটিএল এর পরিচালক প্রফেসর ড. আফরোজা পারভীন ও সিইটিএল এর অতিরিক্ত পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নজরুল ইসলাম। এর আগে পরিচালক সিইটিএল এর কার্যক্রম পাওয়ার পয়েন্টে তুলে ধরেন। এ কর্মশালায় ৫৫জন নবীন শিক্ষক অংশ নেন। কর্মশালায় অনুভুতি ব্যক্ত করেন ইউআরপি ডিসিপ্লিনের ড. শিল্পী রায়, ইসিই ডিসিপ্লিনের রাগিব শাকিল রাফি, এফএমআরটি ডিসিপ্লিনের শেখ তারেক আরাফাত এবং ড্রইং এন্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের আবুল কালাম সামসুদ্দিন। বিকেলে প্রধান অতিথি অংশগ্রহণকারী শিক্ষকদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করেন। কর্মশালায় ডিন, পরিচালক, ডিসিপ্লিন প্রধানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।