খুবিতে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধ্যারাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ক্লাবে ’বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক একক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক প্রখ্যাত গবেষক ড. মেসবাহ কামাল এককভাবে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের উপর প্রায় দেড় ঘন্টা বক্তব্য রাখেন।

তিনি বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ সম্পর্কে আলোচনা করতে যেয়ে বঙ্গবন্ধু কবে থেকে বাঙ্গালি জাতিসত্তা ও স্বাধীনবাংলার কথা ভাবতে শুরু করেন তা থেকে শুরু করে স্বাধীনতাপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশের রাজনীতি সমাজনীতি অর্থনীতি এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের জাতিগোষ্ঠি পরিস্থিতি নিয়েও ইতিহাসের আলোকে নতুন নতুন তথ্য, উদাহরণ ও ঘটনা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন বৃটিশ ঔপনেবেশিক আমলের শেষ দিকে ১৯৪৭ সালে দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে, ধর্মের ভিত্তিতে যখন ভারত-পাকিস্তান ভাগ হচ্ছিলো সে প্রেক্ষাপট নিয়ে ১৯৪৬ সালের শেষ দিকে ডিসেম্বরে চূড়ান্ত আলোচনাপর্বে যুক্তবাংলার পক্ষে ছিলেন বঙ্গবন্ধু। রাজনীতির সেই প্রাকপর্বেই তিনি বাংলা ভাষা, বাঙ্গালি জাতিসত্তা নিয়ে স্বপ্ন দেখেন, ভাবেন সে বিষয়টি ইতিহাসের তথ্য তত্ত্বে প্রমাণিত। তিনি বলেন, সেই থেকে আমাদের স্বাধীনতা ঘোষণা পর্যন্ত এই দীর্ঘ সময় ধাপে ধাপে তিনি অত্যন্ত দূরদর্শীতার সাথে, প্রজ্ঞার সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন যা ইতিহাসে বিরল। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটেই তিনি বাঙ্গালি জাতিসত্তাকে সামনে আনার উপযুক্ত সময় বলে মনে করেছিলেন এবং সে পথ ধরে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে অসাধারণ, সময়োপযোগী ও চ্যালেঞ্জিং নেতৃত্ব দিয়েছেন।

Post MIddle

পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্য শান্তিচুক্তি করে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছেন। কিন্ত আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এখনও তা পরিপূর্ণভাবে কার্যকর হয়নি। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, তাঁর আদর্শ বুঝতে হলে বেশি করে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চর্চা ও গবেষণা করতে হবে।

তিনি নতুন প্রজন্মকে সে দিকে আহবান জানিয়ে বলেন ইতিহাস দেশ জাতি কালের বিচারে গুরুত্বপূর্ণ, ্ইতিহাস আসলে সবার, জনগণই ইতিহাসের নির্মাতা। তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ কর্তৃক এ বক্তব্যমালার আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান। পরে তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. অনির্বাণ মোস্তফার সভাপেিত্ব ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সরদার শফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. হোসনে আরাসহ পরিষদের সদস্য শিক্ষকবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

পছন্দের আরো পোস্ট