বশেমুরবিপ্রবিতে শিক্ষার্থীদের অান্দোলন স্থগিত

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী সুবর্ণা মজুমদার (১৯) গুরুতর অাহত হওয়ায় রোববার সকাল ১০টা থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন বশেমুরবিপ্রবি’র সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বাসচালকের শাস্তির দাবিতে এবং এ ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিবাদে স্লোগানে স্লোগানে অান্দোলনে মুখর হয়ে ওঠে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর।

Post MIddle

রোববার সকাল ১০টা থেকেই ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় একত্রিত হয়ে বসে রাস্তা অবরোধ করে রাখে। এছাড়াও গাছের গুডি ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অান্দোলনে অংশ নেন। উক্ত অান্দোলনে শিক্ষার্থীরা জনসম্মুখে তাদের ৫ দফা দাবি অাদায়ের কথা তোলেন। দাবিগুলো ছিলো যথাক্রমে (১) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসচাপায় গুরুতর অাহত ওই ছাত্রীর চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বহন করবে; (২) ওই ছাত্রীকে পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরি দিতে হবে; (৩) বাসচালককে স্থায়ীভাবে চাকরি থেকে বহিস্কার করতে হবে; (৪) বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে স্পীড ব্রেকার বসাতে হবে; (৫) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য অালাদা বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের এ ৫ দফা দাবি পূরণ না হলে শিক্ষার্থীরা একনাগাড়ে অান্দোলনের কড়া হুঁশিয়ারি দেন।

প্রথমদিন তাদের দাবি অাদায়ের পক্ষে প্রশাসন কর্তৃক কোনো ইতিবাচক সাড়া না পাওয়ায় পরদিন সোমবার তারা অাবার একই সময়ে স্থান ত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে থেকে সরে এসে প্রশাসনিক ভবনের সামনে স্লোগানে স্লোগানে অান্দোলন অারও বেগবান করে তোলেন। অান্দোলনের একপর্যায়ে তারা বেলা ১২টার সময় উপাচার্যের বাসভবন ঘেরাও করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অানতে জেলা ছাত্রলীগের কর্মীবৃন্দসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের সাথে ৫ দফা দাবি নিয়ে মতবিনিময় করেন এবং এসময় তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের থেকে ১ঘণ্টা সময় চেয়ে নেন। তারা বেলা ২টা পর্যন্ত ফলাফল জানতে শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে বলেন। তারা অানুমানিক অাড়াইটায় উপাচার্যের বাসভবন থেকে ফিরে এসে তিনি তাদের ৫ দফা দাবি মেনে নিয়েছেন বলে জানান এবং অাগামী দু’দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পীড ব্রেকার বাসানো হবে বলে অাশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীরা এসময় লিখিত প্রমাণ তাদের সামনে দেখানোর কথা বললে পরে লিখিত প্রমাণ তাদের সম্মুখে পেশ করা হবে বলে প্রতিনিধি দল অাশ্বস্ত করেন। ফলশ্রুতিতে, শিক্ষার্থীরা সোমবার থেকে তাদের অান্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করে নেন। তবে তাদের দাবি যথাযথভাবে পূরণ না হলে পরবর্তীতে অারও কঠোর অান্দোলনের হুমকির ইঙ্গিত তারা প্রশাসনের দিকে ছুঁড়ে দেন।

উল্লেখ্য, গুরুতর অাহত ওই শিক্ষার্থী সুবর্ণা মজুমদারকে রোববারই হেলিকপ্টারযোগে অাধুনিক চিকিৎসার জন্য ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তার অবস্থা এখন উন্নতির দিকে জানতে পারা গেছে। তার পায়ের কোনো সমস্যা হচ্ছে না, প্লাস্টার সার্জারি করে ঠিক করা যাবে; কিন্তু চোখ, কান, স্মৃতিশক্তি অক্ষত অাছে কি-না সেটা জানতে অপেক্ষা করতে হবে অারও বেশ কয়েক ঘণ্টা।

পছন্দের আরো পোস্ট