ঢাবি অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের বৃত্তি পেল ৭০০ শিক্ষার্থী

ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে গতকাল (২৬ জানুয়ারি ২০১৭) বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘শিক্ষা ও সামাজিক উদ্যোগের জন্য বৃত্তি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ১ম ও ২য় বর্ষ অনার্সের ৭০০ জন মেধাবী, অস্বচ্ছল ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং এসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও অ্যালামনাইয়ের প্রধান পৃষ্ঠপোষক অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এবং প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্ণর এস. কে. সুর চৌধুরী ছিলেন অনুষ্ঠানের অতিথি বক্তা।

এসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি এডভোকেট মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসার ও আনোয়ারুল আলম পারভেজ। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার। এতে এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি শাইখ সিরাজ অর্থমন্ত্রীর বর্নাঢ্য জীবন বৃত্তান্ত উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে অনুদান দাতাদের মধ্যে বেক্সিমকোর চেয়ারম্যান এ. এস. এফ. রহমান, ইস্টার্ন ব্যাংকের সিইও আলী রেজা ইফতেখার, সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ও নয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শবনম শাহনাজ চৌধুরী শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তির চেক তুলে দেন।

Post MIddle

Scolarshipপ্রধান অতিথির বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের উদ্দেশ্য ও সিদ্ধান্তকে অভিনন্দিত করে জানান- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হিসেবে তিনি বিশেষ গর্ববোধ করেন। ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত এসোসিয়েশনের কার্যক্রমের স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন দেশের উন্নয়নের জন্য সবাইকে শিক্ষিত করার কোন বিকল্প নেই এবং এসোসিয়েশন এ ব্যাপারে আরও পদক্ষেপ নিবে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোর উন্নতি সাধন হয়। যেসব শিক্ষার্থীরা এই সুযোগটি পেল, ভবিষ্যতে উজ্জ¦ল জীবন গঠনের লক্ষ্য তাদের এখনই ঠিক করে নিতে হবে। চাকুরী বা ব্যবসা যে ক্ষেত্রেই কাজ করেন না কেন দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার জন্য অর্র্থমন্ত্রী তাদের প্রতি আহ্বান জানান। ‘উচ্চাশা স্বার্থকতার প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর’- বলে তিনি শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক অর্থমন্ত্রীর ৮৪তম বছরে পদার্পনের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন- এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রের দেশের প্রতি অবদান ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে শুধুমাত্র অর্থের অভাবে যেন লেখাপড়া বন্ধ না হয়ে যায়- অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের এমন উদ্দেশ্য ও পদক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৬-৯৭ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম উল্লেখ করে অ্যালামনাইদের ধন্যবাদ জানান উপাচার্য। বিগত বছরগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যায়তনিক বহু কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়ে ইতিমধ্যেই ৯৫টি বিভাগ ও ইনস্টিটিউটে উপনীত হয়েছে। তাই স্থান ও অবকাঠামো সংকটের বিষয়ে অবহিত করে উপাচার্য অ্যালামনাইদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সোনার বাংলা গঠনের জন্য নিজেদের গড়ে তোলার প্রতি উপাচার্য আহবান জানান।

এসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ পুরো বৃত্তি প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করেন। তিনি জানান ১১০০ শিক্ষার্থী বৃত্তির জন্য আবেদন করে, সাক্ষাৎকার নিয়ে তার মধ্যে ৭০০ জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তির জন্য চূড়ান্ত করা হয়। যেসব প্রতিষ্ঠান অনুদান দিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন ভবিষ্যতে এসোসিয়েশন আরও পদক্ষেপ গ্রহন করবে। অনুদান দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- বেক্সিমকো, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, সিটি গ্রুপ, স্টিলটেক ইন্ডাস্ট্রি লিঃ, নয়ার, রাইজিং হোল্ডিং লিঃ, হান্নান ফ্যাশন লিঃ, ইমরান ফজলুর রহমান ও খাঁজা নারগিস হোসেন। বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা ৪বছর ধরে এই বৃত্তির টাকা পাবে এবং প্রতি ৩মাস অন্তর এই টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করতে পারবে।

পছন্দের আরো পোস্ট