শেখ আবু সিদ্দিক রোকনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান বলেছেন, যে জাতি তার জন্মের ইতিহাস জানে না, সেই জাতি কখনও নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিতে পারেনা। তাই আমাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে হবে এবং চর্চা করতে হবে। তিনি বলেন, ৭৫’র পরবর্তী ৮০’র দশক পর্যন্ত এদেশে বঙ্গবন্ধু নাম নেয়া প্রায় নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে অনেক ঘটনা-দুর্ঘটনার পর আবার অনেক কিছুর পুর্ণজাগরণ-পুর্ণজন্ম হয়েছে এবং এদেশের মানুষের ভালবাসা পেয়েছিলেন বলেই বঙ্গবন্ধুর পূর্ণজন্ম হয়েছে।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা ভাস্কর্য এবং মূর্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝেনা। তারা ভাস্কর্যকে মূর্তির সাথে তুলনা করে। ভাস্কর্য নির্মাণে তারা বিরোধীতা এবং ধ্বংসের জন্য নানা ষড়যন্ত্র করেই চলেছে। তিনি বলেন, আমি মনে করি ভাস্কর্য হয়তোবা ধ্বংস করা যাবে কিন্তু ভাস্কর্যের আলোকচিত্র চিরদিন থেকেই যাবে। প্রধান অতিথি বলেন, ‘ভাষ্কর্যে বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে রোকনের এই আলোকচিত্র প্রদর্শনী নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধরু আদর্শে উদ্বুদ্ধ করবে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর জানতে পারলাম একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পাতাকা উত্তোলন করা হয় না এবং জাতীয় কোন অনুষ্ঠানও সেখানে পালন করা হয়না। তাদের এই কর্মকান্ডে আমি হতবাক হয়ে সেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় দিবসসমুহ উদযাপনের ব্যবস্থা করি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার খেয়া রেস্তোঁরায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার (ফটোগ্রাফী) আলোকচিত্রী শেখ আবু সিদ্দিক রোকনের ‘ভাষ্কর্যে বঙ্গবন্ধ’ু শিরোনামে দু’দিনব্যাপী আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর আবদুল মান্নান এসব কথা বলেন।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম আব্দুল লতিফ ও কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার প্রলয় চিসিম।

Post MIddle

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ৭৫’র পরবর্তীকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার নানামুখী ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ভাস্কর্য একটি প্রস্তরীকৃত ইতিহাস। এই ইতিহাস নির্মাণে মৌলবাদী গোষ্ঠী সবসময় বিরোধীতা করে চলেছে। তিনি বলেন, ১৪ ডিসেম্বর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার আলোকচিত্র যদি না থাকতো, তাহলে সঠিক ইতিহাস বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করা কঠিন হয়ে পড়তো। তাই ইতিহাস নির্মাণে আলোকচিত্রের গুরুত্ব ব্যাপক।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান বলেন, ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধু দু’টি কারনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সূত্রপাত হয়েছিল কুষ্টিয়া জেলা থেকে। আর বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তার মহানায়ক। তাঁর উপর “ভাস্কর্যে বঙ্গবন্ধু” আলোকচিত্র প্রদর্শণীর আয়োজন করায় তিনি আলোকচিত্রী শেখ আবু সিদ্দিক রোকনকে আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান।

সৈয়দা হাবিবার পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ হাসান মেহেদী, ঢাকা ফটোগ্রাফি ইনস্টিটিউটের পরিচালক শহীদুজ্জামান বাদল, কুষ্টিয়া ফটোগ্রাফী সোসাইটির সভাপতি খলিলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস আই সোহেল। শুরুতে ফিতা কেটে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন প্রফেসর আবদুল মান্নান এবং তিনি প্রদর্শণীর আলোকচিত্র ঘুরে ঘুরে দেখেন।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট