
ইবিতে স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেছেন, আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বৈবরুপে একটি আধুনিক, প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। তিনি বলেন, হিন্দু- মুসলমান-খ্রীষ্টান-বৌদ্ধ নির্বিশেষে সকল ধর্মাবলম্বীদের সমষ্টিগত প্রয়াসের ফসল ছিল বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের পবিত্র সংবিধানে আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মূলনীতি হিসেবে এসেছে ধর্মনিরপেক্ষতা। তিনি আরও বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে কোন সাম্প্রদায়িকতার বীজ থাকবে না। ধর্ম যার যার কিন্তু দেশটা সবার- এই মানসিকতা লালনের জন্য তিনি সকলকে আহ্বান জানান। উপাচার্য বলেন, সকল ধর্মের মূল সার মানবতাবাদ। মানুষের কল্যাণ এবং ইহলৌকিক ও পারলৌকিক মুক্তির জন্য ধর্ম মানুষকে বিভ্রান্ত এবং পথভ্রষ্ট মানুষকে পথ দেখায়। বিশ্বের সকল ধর্মের মানুষ মানবতাবাদকে সামনে রেখে নিজ-নিজ ধর্ম ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সাথে এবং পরধর্ম সহিষ্ণুতাসহ পালন করবে। তারা যেমনভাবে নিজেদের ধর্ম পালন করবে তেমনভাবে পালন করতে দিবে অন্যের ধর্মও। এভাবে ধর্মসমূহের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি বৃদ্ধির মধ্য দিয়েই কেবল একুশ শতকের বাসযোগ্য বিশ^ রচনা করতে পারি।
হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের প্রফেসর ড. অরবিন্দু সাহার সভাপতিত্বে রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে শ্রী শ্রী স্বরস্বতী পূজা উপলক্ষে অনুষ্ঠিত ধর্মীয় আলোচনাসভায় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ হারুন-উর-রশিদ আসকারী কথাগুলো বলেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শ্রী শ্রী স্বরস্বতী পূজা উদ্যাপন পরিষদ ১৪২৩-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথি প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ শাহিনুর রহমান বলেছেন, গ্রন্থগত শিক্ষার সঙ্গে নৈতিকতা, মানবিক মূল্যবোধ এবং ভাতৃত্বের শিক্ষার সমন্বয় ঘটিয়ে বিভাজন ভুলে সকল ধর্মের মানুষকে এক হয়ে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, শিক্ষার আলো যেন আমাদের প্রতিটি ঘরে জ¦লে উঠে স্বরস্বতী পূজা মূলতঃ সেই বার্তা দেয়।
অপর বিশেষ অতিথি ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোঃ সেলিম তোহা বলেন, বর্তমান সরকারের ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সকলের জন্য একটি সম-সুবিধাজনক রাষ্ট্র গড়ার যে প্রচেষ্টা রয়েছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তার সঙ্গে একাত্ম।
আলোচনাসভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মোঃ মাহবুবুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন। ধর্মালোচনা করেন যশোরের রামসরাস্থ স্মৃতিতীর্থ মন্দিরের অধ্যক্ষ ড. মুক্তিদায়ী নিতাই দাস ব্রহ্মচারী। আলোচনাসভাটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লব আইচ এবং অন্নপূর্ণা। পরে ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। আলোচনাসভার পূর্বে একটি র্যালী ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।#
আরএইচ