ঢাবিতে ‘শহীদ রেজাউল করিম মানিক স্মারক বক্তৃতা’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্র’-এর উদ্যোগে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র রেজাউল করিম মানিক (বীর প্রতীক)-এর স্মরণে প্রথম স্মারক বক্তৃতা আজ ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজুল ইসলাম লেকচার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Post MIddle

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শহীদ রেজাউল করিম মানিক-এর সহযোদ্ধা কর্নেল (অব:) তৌফিকুর রহমান। ইতিহাস বিভাগের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. সোনিয়া নিশাত আমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন।

এমিরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রথম স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকার যে তিনটি মূলনীতি ঘোষণা করেছিলেন- গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলতে আমরা তা-ই বুঝি। বাংলাদেশের সংবিধানে ১৯৭২ সালে একই সঙ্গে সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের কথা বলা হয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করে যারা ক্ষমতায় আসীন হন তারা প্রথমেই এই মূলনীতিকে আঘাত করে। কিন্তু বাংলাদেশের সার্বিক মুক্তি ওই চেতনার বাস্তবায়নের মধ্য দিয়েই সম্ভব। সেখান থেকে আমরা সরে গিয়েছি; সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় জঙ্গীবাদ মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ নয়। মনে রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকেই আমাদের জন্ম, সেখানেই আমাদের ফিরতে হবে।

প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ শহীদ রেজাউল করিম মানিক (বীর প্রতীক)সহ লাখো শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, মানিকদের মতো বীরদের আরও বেশি বেশি করে জানতে হবে। এজন্য আরো বেশি বেশি আলোচনা করা দরকার যাতে এই প্রজন্ম তাদের কথা জানতে পারে। ‘মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ থেকেই আমাদের জন্ম, সেখানেই আমাদের ফিরতে হবে’ স্মারক প্রবন্ধের উক্তি দিয়ে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা থেকে আমরা অনেক দূরে চলে এসেছি। স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর হতে চলল কিন্তু আমরা শহীদদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগেরই দায়িত্ব অন্তত সেই বিভাগের বীরদের নতুন প্রজন্মের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া।

অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম মানিকের জীবনী পাঠ করেন ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক শারমিন জাহান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে রেজাউল করিম মানিকের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তার ৩বোন ছাড়াও তার আরও ২জন সহযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালে শহীদ রেজাউল করিম মানিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। ঢাকার একটি বড় ইউনিট এর কমান্ডার হিসেবে একধিক অপারেশন পরিচালনা করেন এবং ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর এমনই একটি অপারেশন পরিচালনার সময় তিনি শহীদ হন।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট