ঢাবিতে বর্ণাঢ্য বিজয় র‌্যালি

picture-1-a-1-12-20161মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে গতকাল (১ ডিসেম্বর) বৃহস্পতিবার বিজয় র‌্যালি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের নেতৃত্বে এক বর্ণাঢ্য ‘বিজয় র‌্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়। বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কলাভবন প্রাঙ্গণস্থ অপরাজেয় বাংলার পাদদেশ থেকে বিজয় র‌্যালিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।

র‌্যালিতে প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের বিপুল সংখ্যক সদস্য অংশগ্রহণ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগের উদ্যোগে স্বাধীনতা চত্বরে পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত, মুক্তির গান ও দেশাত্মোবোধক গান।

Post MIddle

উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারী সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩০ লক্ষ শহীদ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অগণিত শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীদের আত্মাহুতির কথা স্মরণ করে সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, বাংলা ভাষাভাষী মানুষরাই বিশ্বের বুকে প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে. মাতৃভাষার জন্য জীবন দেওয়া গৌরবের বিষয়। আজকে আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি যখন সারা পৃথিবীতেই জঙ্গীবাদী কর্মকা- নানাভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

picture-2-1-12-2016গতকাল ইউনেস্কো কর্তৃক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানকে উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সংস্কৃতি মানুষকে মানুষ করে তোলে, সংস্কৃতিবোধ মানুষকে মানবতাবোধে দীক্ষিত করে। আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই, কেননা বাঙালি সংস্কৃতি অত্যন্ত শক্তিশালী সংস্কৃতিধারা যা গর্ব করার মতো। পৃথিবীতে এমন কোন দেশ নেই যেখানে নয় মাসের মতো একটা সংক্ষিপ্ত সময়ের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লক্ষ মানুষ আত্মোৎসর্গ করেছে। আমরা আজকে যে স্বাধীনতা ভোগ করছি তার পেছনের এত বড় আত্মত্যাগের কথা ভুলে গেলে চলবে না।

উপাচার্য আর্দ্রে মারলো-এর উদ্ধৃতি তুলে ধরে বলেন, যারা দেশের জন্য আত্মোৎসর্গ করেছেন, তারা এই দেশেরই বিভিন্ন জায়গায় মাটির নিচে শায়িত আছেন এবং তাদের সেই সাহস, সেই দেশপ্রেম এবং মূল্যবোধ নিয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। আমরা প্রত্যেকেই যদি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের কথা স্মরণ করি, জাতির পিতার স্বপরিবারে আত্মত্যাগের কথা স্বরণ করি তাহলে এই দেশকে আমাদের ভালবাসতেই হবে, আমাদের কারো পক্ষেই দুর্নীতি বা অসততা করা সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধু তার জীবদ্দশায় বারবার আত্মসমালোচনা, আত্মশুদ্ধি, আত্মবিশ্বাস এবং আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন মানুষ হওয়ার উপর জোর দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু যে স্থানে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন এবং যেখানে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী- মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পন করেছে, সেই ঐতিহাসিক স্থানে এসে আমরা শক্তি অনুভব করি, গর্ব অনুভব করি। আগামী একবছর নিজেদেরকে আত্মবিশ্বাসী ও আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আত্মশুদ্ধির সে চর্চা আমরা চালিয়ে যেতে চাই- এই হোক আমাদের আজকের অঙ্গীকার।

পছন্দের আরো পোস্ট