অতিরিক্ত পরীক্ষা ফি আদায়ে ক্যাবের ক্ষোভ

এসএসসি পরীক্ষা, বিভিন্ন ক্লাসের সমাপনী পরীক্ষায় অনুপস্থিতি জরিমানাসহ বিভিন্ন নামে বেনামে বিপুল পরিমান অতিরিক্ত ফিস আদায় হচ্ছে, যার স্বচিত্র প্রতিবেদন পত্র পত্রিকা ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে প্রচারিত হলেও শিক্ষা প্রশাসনে নিয়োজিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও জেলা শিক্ষা অফিসগুলির চরম উদাসীনতা এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য “আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসেনি”। এ ধরনের অতিরিক্ত ফিস প্রদানে সীমিত আয়ের মানুষ দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে, অনেকের আবার শিক্ষা জীবনেরও ইতি ঘটার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। অন্যদিকে বিগত বছর এসএসসিতে অতিরিক্ত ফিস আদায়কারী অভিযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কোনটির বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় এ বছর দ্বিগুন-চারগুন পর্যন্ত অবৈধ অতিরিক্তি ফিস আদায়ের মহোৎসব চলছে। যা চরম ন্যাক্কারজনক এবং ঘৃনা জানানো ছাড়া বিকল্প ভাষা নেই। এছাড়াও পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না দিয়ে শিক্ষা প্রশাসন দিবা স্বপ্নে বিভোর হওয়ায় চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে অতিরিক্ত ফিস আদায়ে কঠোর নজরদারি আনা এবং অপরাধ প্রমানিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি বাতিল, পরিচালনা পর্ষদ বাতিলসহ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী প্রতিষ্ঠান কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ।

Post MIddle

সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক যৌথ বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরও বলেন ডিসেম্বর মাস থেকে শুরু হয় স্কুলে ভর্তি বানিজ্য। সরকারী ও নামী-দামী স্কুলে ভর্তির জন্য কোচিং ব্যবসা, ভর্তির সময় ডোনেশেন, বিভিন্ন ফিস আদায় করে মধ্যবিত্তসহ সকল নাগরিকদের মাঝে শিক্ষা অধিকারের পরিবর্তে একটি অতি ব্যায় নির্ভর পণ্যে পরিণত হয়েছে। একজন সাধারন নাগরিককে ভর্তি, পুনঃ ভর্তি, টিউশন ফিস, বিভিন্ন জরিমানা, বাই-খাতা ইত্যাদির নামে এত খরচের বোঝা চাপানো হচ্ছে, যার ভারে মধ্যবিত্তের জীবন মরার উপর খারায় ঘাঁ যেন নিত্য সঙ্গী। আবার তার উপর পুনঃ ভর্তি, টিউশন ফিস আদায়ের কোন সামনঞ্জস্যতা নেই, যে যার ইচ্ছামতো গলাকাটা ভাবে ফিস আদায় করে পকেট ভর্তি করছে। ফিস আদায়ের এ মহোৎসব কাঁচাবাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যের মুল্যবৃদ্দির সাথে কোন অংশে কম নয়। এ অবস্থায় অবিলম্বে সরকারী-বেসরকারী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কেজি স্কুল গুলির অতিরিক্ত ফিস আদায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেয়া হলে সাধারন জনগনকে প্রতারিত হতে হচ্ছে এবং যা সমাজে অস্থিরতা ও জনভোগান্তির নিত্য নতুন মাত্রা যোগ হবে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন সরকার প্রধান ও মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী কোচিং বন্ধে আন্তরিক হলেও এ কোচিং বানিজ্য বন্ধ হয়নি, অধিকন্তু সরকারী ও নামি-দামী স্কুলের শিক্ষকরা বাড়ী ভাড়া করে শুরু করেছে কোচিং বানিজ্য, আবার সরকারী স্কুলে স্কুলের ক্লাসের সাথেই চলছে কোচিং, অতচ এগুলি তদারকির দায়িত্বে যারা নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষা প্রশাসন দিবা নিদ্রায় ভগ্ন। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন একসময় সমাজ হিতৈষীরা বিভিন্ন স্থানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতেন এবং ব্যবসায়ীরা চাল-ডাল, মাংশের দোকানের ব্যবসার পাশাপাশি ইউনিভার্সিটি ও কেজি স্কুলের ব্যবসা খুলেন। ফলে সংবিধানে প্রদত্ত নাগরিকের মৌলিক অধিকার শিক্ষা এখন বিশাল বানিজ্যের ক্ষেত্র। এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে হলে শিক্ষা বানিজ্যের বিরুদ্ধে গনআন্দোলন ছাড়া বিকল্প নেই।

বিবৃতিতে যারা স্বাক্ষর করেন তারা হলেন, ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসসিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

পছন্দের আরো পোস্ট