যেভাবে পাবেন কাজের অনুপ্রেরনা

learn-to-listenসোশাল মিডিয়া ‘কুয়োরা’তে অনেকেই জানতে চেয়েছেন, আমি প্রতিদিন কিভাবে অনুপ্রাণিত থাকতে পারি? এর জবাব দিয়েছেন কুয়োরার প্রভাবশালী কলামিস্ট এবং মিডিয়াকিক্স ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইভান আসানো।তিনি লিখেছেন, যখন আমার বয়স কম ছিল তখন অনুপ্রেরণা কোনো বিষয় ছিলো না। আমি স্কুলের খেলাধুলায় অংশ নিতাম কেবল আনন্দের জন্য। কলেজে উঠে আমি মেডিক্যাল গবেষণা শুরু করি। কিন্তু চাকরি করি সেলস-এ। তখন এটা নতুন অভিজ্ঞতা ছিল। আমি নতুন নতুন বিষয় শিখছিলাম। এসব বিষয়ের কিছু আবার ভালো লাগতো না।

কিন্তু এ কাজটি খুব কঠিন। অনেক সময় লক্ষ্য অর্জিত হয় না, আগ্রাসী হয়ে ওঠে এবং প্রতিষ্ঠানে অন্য কোনো দায়িত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে এ খাতটি তেমন স্মার্ট নয়। সবারই বাজে সেলস পারসন অভিজ্ঞতা হয়তো রয়েছে। এমন সেলস পারসনরা বাজে অভ্যাস গড়ে তোলেন এবং আগ্রাসী থাকেন।সেলস চাকরিতে কোনো মানুষ একদিনও শান্তিতে থাকেন না। কারণ বড় ধরনের নৈরাশ্যের শিকার হতে হয় প্রতিনিয়ত। মানুষ একে মেনে নিতে পারে না।

আমিও অহরহ এমন অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছি। প্রতিবার প্রত্যাখ্যাত হয়েছে আর কষ্ট বেড়েছে। আমি মানুষের প্রত্যাখ্যান আর গ্রহণ করে নেওয়ার মানসিকতা নিয়ে গবেষণা শুরু করি। যদি মনে করেন থাকেন যে, আপনি যা করছেন তার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধবোধ নেই তবে কখনোই অনুপ্রাণিত হতে পারবেন না। সেলস-এ নিজের চাকরিটাকে যখন ভালো লাগবে না তখন উৎসাহ হারাবেন।

একদিন এক মিটিংয়ে ম্যানেজার যা বোঝালেন তাতে করে আমি আমার কাজটাকে নতুনভাবে উপলব্ধি করলাম। তিনি বললেন, কিছু বিক্রি করার পরিবর্ত তার মূল্যমান তুলে ধরবেন ক্রেতাদের কাছে। এটা কেবল লেন-দেন নয়। বরং এটা এমন এক কার্যক্রম যার মাধ্যমে ক্রেতাকে ওই পণ্যটির বিষয়ে আগ্রহী করে তুলতে হবে। ক্রেতাকে সহায়তা করতে হবে। বায়োটেক এবং ড্রাগ ডেভেলপমেন্ট খাতে চাকরি করার সময় মানুষকে বোঝাতাম যে, আমরা জীবন বাঁচানোর পণ্য বিক্রি করছি।

Post MIddle

এসব বিষয় জানার পর আমার কার্যক্রম বদলে গেলো। কিছু বিক্রি করতে গেলে নিজেকে স্বার্থপর মনে হয়। চিন্তা আসে যে আমি আমার ও প্রতিষ্ঠানের লাভের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কোনো পণ্যের মূল্যমান বোঝানোর মাধ্যমে ক্রেতার আগ্রহ কেড়ে নেওয়া এবং তাকে সামলানোর প্রাথমিক সমস্যা দূর হয়।

অনেক সময় মনে হয়, প্রতিষ্ঠানের সিইিও’র কেবলমাত্র অনপ্রেরণার দরকার হয়। তার অন্য কিছু ঘটে না কেবল অনুপ্রেরণা পাওয়া ছাড়া। বরং উল্টোটা হয়। তাকে প্রতিষ্ঠানের নানা সমস্যা এবং তার সমাধান নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেকের সমস্যা মূলত তার সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। এই দায়ভার বহন করা খুবই কষ্টের বিষয়। অনুপ্রেরণা না মিললে পরদিন ঘুম থেক উঠে কাজে যাওয়াই কঠিন হয়ে যায়।

আসলে আপনি কিভাবে অনুপ্রেরণা পান তা আপনিই সবচেয়ে ভালো জানেন। যে কাজ করছেন তার মূল্যবোধ কোথায় তা বিবেচনা করুন। সেখানেই আপনার অনুপ্রেরণা লুকিয়ে। মানুষ ও জীবনের সঙ্গে তার সম্পর্ক খুঁজে বের করুন। যদি এমন জীবন তৈরি করতে পারেন যে আপনার কাজে অন্যদের উপকার হচ্ছে, তবে আপনি অনুপ্রেরণা পেয়ে যাবেন। কাজটি আপনার কাছে মূল্যবান হয়ে উঠবে।

আসলে এটাকেই একমাত্র উপায় বলে দাবি করছি না, জানান ইভান। একটা ট্রেন্ড অবশ্য চালু হয়েছে। এখন সেলস পারসনের চেয়ে কনসালটেন্টের সংখ্যা বেশি। তারা তথ্যপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তারা নানা ধরনের পরামর্শ তুলে ধরেন। নতুন পণ্য বা সেবার গুণগত মান নিশ্চিতকরণে গবেষণা চালান।

সূত্র : ফোর্বস

পছন্দের আরো পোস্ট