সম্ভাবনাময় বশেমুরবিপ্রবির ট্রিপল ই বিভাগ

GOPALGONJদেশের মধ্যে অাসন সংখ্যায় পঞ্চম স্থান অধিকার করা গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) সাফল্য ও অগ্রগতির সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের অন্যতম পছন্দের বিভাগ ও বিষয় ট্রিপল ই (EEE)। ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, সংক্ষেপে যার নাম ট্রিপল ই (EEE)। অার বাংলায় বলা হয়ে থাকে তড়িৎ প্রকৌশল ।

বিশ্ববিদ্যালয় চালুর দ্বিতীয় বছর এই বিভাগ চালু হয়। প্রথমে বিভাগটিতে ৪০ জন স্টুডেন্ট ভর্তি করানো হয়। বিভাগটি চালুর পরপরই বিভাগটির শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা চেষ্টা চালিয়ে যান বিভাগটিকে কিভাবে উন্নততর করা যায়। কিছুদিন পর যোগ দেন রুয়েট থেকে পাশ করা শিক্ষক শ্রদ্ধেয় জপতোষ মন্ডল স্যার । যিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করেন কিন্তু স্যারের হাতের ছোয়ায় নতুন উদ্যমে শুরু হয় ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের যাত্রা। একের পর একে প্রকল্প তিনি গ্রহন করেন, ইইই বিভাগের জন্য আলাদা লাইব্রেরি, ক্লাসরুম প্রজেক্টর থেকে শুরু করে বিভাগের জন্য উচ্চগতির ওয়াইফাই এর ব্যবস্থা করেন। সেই সাথে করেন সবথেকে আধুনিক কয়েকটি ল্যাব।এরপর যোগ দেন কুয়েট, চুয়েট থেকে টপ মেরিট করা ৪ জন স্যার।

কিছুদিনের মধ্যে ইইই বিভাগের জন্য প্রয়োজনীয় সকল ল্যাব স্থাপন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন স্যারের কথা না বললেই নয়, তিনি ট্রিপল ই (EEE) বিভাগকে সাজানোর জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করেন এবং কয়েকদিন পরই ঘোষণা দেন বাংলাদেশের সবচেয়ে আধুনিক ল্যাব স্থাপনের, যেই ল্যাব এর এনালগ ভার্সন বুয়েটেই আছে শুধু। আরো কয়েকটি জায়গায় খণ্ডরুপে আছে।

একমাত্র এখানেই পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করা হয়। পাওয়ার সিস্টেম ল্যাব, যেটি প্রায় ২ কোটি টাকা খরচে করা হয়। এভাবেই ক্রমান্বয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রিপল ই (EEE) বিভাগ। সাথে আরেকজন স্যার যোগ দেন বুয়েট থেকে।বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ট্রিপল ই (EEE) বিভাগ সবথেকে আধুনিক করার প্রচেষ্টায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কিছু শিক্ষক।সামনে আরো একটি ল্যাব আসছে যেটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অটোমেশন ল্যাব।

ভর্তি পরীক্ষার্থীরা অনেকেই ক্যাম্পাসে লাইটিং দেখে ভেবেছিলো এটি অস্থায়ী। কিন্তু লাইটিং স্থায়ী আর এই লাইটিং ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের ছাত্ররাই করেছে।ট্রিপল ই (EEE) বিভাগ বর্তমানে অত্যাধুনিক পর্যায়ে রয়েছে। আরো দক্ষ করার উদ্দেশ্য আরো কিছু পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন রোবটস কম্পিটিশন, ইলেক্ট্রনিকস ডিভাইস তৈরি করে মেধার পরিচয় দিচ্ছে ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের কিছুসংখ্যক প্রতিভাবান ও মেধাবী শিক্ষার্থী। এছাড়া রয়েছে প্রচুর ব্যক্তিগত অর্জন যা ট্রিপল ই (EEE) বিভাগকে সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধময় করে চলেছে প্রতিনিয়ত।বিভিন্ন পাওয়ার সেক্টরের লোকজন প্রায় ই ল্যাব পরিদর্শনে আসে। নিয়মিত সেমিনার ও করা হয় ।

এখন একনজরে জেনে নেওয়া যাক কি কি পড়ানো হয়ঃ
* Kiss emoticon ইলেক্ট্রনিকস
*পাওয়ার *টেলিকমিউনিকেশন *সিএস ই ইত্যাদি।খুব সহজেই ট্রিপল ই (EEE) বিভাগ থেকে সিএসই, মেকানিক্যাল বা অন্য সেক্টরে মাস্টার্স বা উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়া যাবে।

বর্তমানে রোবটিক্স বা ইলেক্ট্রিক্যাল যযন্ত্রপাতি নিয়ে কি পরিমান কাজ হচ্ছে সেটা অনেকেই জানে। সেরকম কিছু করতে গেলে ট্রিপল ই (EEE) বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

Post MIddle

ট্রিপল ই (EEE) নিয়ে পড়তেছ শুনলেই সবার মনে অন্যরকম অনুভূতি কাজ করে, সেই সাথে শ্রদ্ধাও।তবে যদি এমন হয়, ট্রিপল ই (EEE) পড়ব, পাশ করব, হালকা পাতলা জব করব এমন মানসিকতা থাকলে আসার প্রয়োজন নেই। কষ্ট করার মানসিকতা, নতুন কিছু করার ইচ্ছা থাকলে আসো। নতুন কোন আইডিয়া পেলে স্যার বা বড় ভাই বা অন্য কাউকে বলে কাজ শুরু করে দিবা। স্যারদের সাহায্য অবশ্যই নিবে।

এখন জেনে নেওয়া যাক যাদের জন্য ট্রিপল ই (EEE) বিভাগ প্রযোজ্যঃ

যারা আসবেঃ যদি তোমার কাছে ফিজিক্স, গণিত খুব মজার মনে হয় বা পড়তে কষ্ট হয়না তারা খুব ভালো করতে পারবে এই সেক্টরে। বিভিন্ন ইনিভেনশন, যারা রোবটিক্স,যন্ত্রপাতি, ইলেক্ট্রনিকস নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী তারা খুব হাসিমুখেই আসতে পারো।

জব সেক্টরঃ

যারা ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে সরকারি জব করতে চান তাদের জন্য ট্রিপল ই (EEE) বেস্ট । কারন ট্রিপল ই (EEE)’তে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সরকারি চাকরিরও অভাব নেই।

বিভিন্ন পাওয়ার সেক্টর, মেশিন সেক্টর, সরকারি কল কারখানা, ডেস্কো, ডেসা, এলজিইডি, বিটি আর সি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন টেকনিক্যাল স্কুল কলেজ, পলিটেকনিক, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজেও শিক্ষক হিসেবে যাওয়া যায়। ফায়ার সার্ভিস সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান। এছাড়া রয়েছে প্রচুর গবেষনা প্রতিষ্ঠান। যেখানে ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের রয়েছে ব্যাপক চাহিদা।

তাছাড়া বেসরকারি বহু চাকরির সুযোগ রয়েছে। বিদেশে রয়েছে প্রচুর স্কলারশিপ। কিছুদিন পর নিউক্লিয়ার পাওয়ার সিস্টেম বসছে, সেখানেও ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার থাকছে।ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের রয়েছে বিদেশে প্রচুর কদর। পাশ করা মাত্রই চাকরি সেক্টর খোলা, দক্ষ শিক্ষার্থী হলে চাকরির বিষয়টা সংশয়মুক্ত।স্কলারশিপ দিয়ে বিদেশে চলে যাওয়া যায় বা দেশেই উচ্চবেতনে চাকরি করা যায়।

একদিনও সেশনজট নেই, সবকিছু মিলিয়ে ট্রিপল ই (EEE) বিভাগই হতে পারে বিজ্ঞান শাখার যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য স্বপ্নের শীর্ষচূড়া।বাংলাদেশের প্রায় সকল ভার্সিটিতেই ট্রিপল ই (EEE) পড়ানো হয়। তবে সমসাময়িক সময়ে বশেমুরবিপ্রবিতে ট্রিপল ই (EEE) বিভাগের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো ও সত্যিই বিস্ময়কর!

পছন্দের আরো পোস্ট