ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব জানুয়ারিতে
সংস্কৃতির সঙ্গে ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ত করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক উৎসব আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবে।শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দফতর সংলগ্ন আবদুল মতিন চৌধুরী মাল্টিমিডিয়া কক্ষে (পুরাতন সিনেট ভবন) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।
তিনি জানান, বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসিতে আগামী জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন করা হবে। উৎসবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিমনস্ক করতে শনিবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি আবাসিক হলে হলে সাংস্কৃতিক কর্মশালা শুরু হবে। এর মাধ্যমে সংস্কৃতিচর্চার প্রতি আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে মূল উৎসবের শিল্পী ও অভিনেতা বাছাই করা হবে। প্রতিটি হলে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা,সংগীত ও থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষকসহ দেশবরেণ্য সংস্কৃতিমনা ব্যক্তিবর্গ।
ঢাবি উপাচার্য বলেন, ‘শিক্ষা ও সংস্কৃতি ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। সাংস্কৃতিক অঙ্গন সমৃদ্ধশালী হলে মুক্তচিন্তার পরিবেশ সৃষ্টি হবে। সুস্থ চিন্তা, সহনশীল সমাজ এবং সুরুচিসম্পন্ন মানুষ তৈরী করতে হলে ছাত্র ও শিক্ষকের যুগপৎ সংস্কৃতির সাথে সম্পৃক্ত থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণীভিত্তিক, হল ভিত্তিক সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত করা হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা যাতে সংস্কৃতি মনস্ক হয়ে উঠতে পারে সেজন্যে এই কর্মকাণ্ড চলবে’।
তিনি আরো বলেন, ‘সংস্কৃতিমনস্ক মানুষই পরিপূর্ণ মানুষ তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ছাত্র-ছাত্রীদের সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ তৈরি করার পদক্ষেপই হলো এই উদ্যোগ। তাই প্রশিক্ষণ কর্মশালা পরিকল্পনায় বাংলাদেশের সংস্কৃতির বিষয়টিকে বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের সংস্কৃতি অত্যন্ত উন্নত সংস্কৃতি। ১৯৭১’এ মুক্তিযুদ্ধের সাথে যুক্ত ছিল সাংস্কৃতিক চেতনা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সংযোগ। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র উদ্বুদ্ধ করেছে মানুষকে, মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যুগিয়েছে অনুপ্রেরণা।’
উপাচার্য জর্জ হ্যারিসনের বাংলাদেশ কনসার্টের কথা এবং বব ডিলানের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, ‘এই ছিল আমাদের সংস্কৃতির বিশেষ প্রেরণা। মুক্তিযুদ্ধে হ্যারিসনের কনসার্ট এবং বব ডিলানের ভূমিকা আজ স্বীকৃত। বব ডিলান আজ পেয়েছেন নোবেল পুরস্কার।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘শিক্ষা এবং সহশিক্ষা মিলেই পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা হয়। সংগীত নৃত্য বা নাটক মানুষের মনকে ইতিবাচক চিন্তায় প্রভাবিত করে।’
সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব আক্তারী মমতাজ বলেন, ‘সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি জ্ঞানভিত্তিক সৃজনশীল, ঐতিহ্য সচেতন ও সংস্কৃতিমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। মন্ত্রণালয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথ উদ্যোগে সংস্কৃতি চর্চা বিকাশের প্রচেষ্টা গ্রহণ করেছে। সে লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের বাংলা সংস্কৃতি চর্চা ও বিকাশের ধারায় সম্পৃক্ত করার ভাবনা থেকেই এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নৃত্যকলা বিভাগের চেয়ারপারসন অধ্যাপক রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সংগীত বিভাগের চেয়ারপারসন ড. মহসিনা আক্তার খানম ও থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান সুদীপ চক্রবর্তী, মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. ফাইজুর রহমান ফারুকীসহ আরো অনেকে।