কোথায় র‍্যাগ? কোথায় নির্যাতন? আমিতো বাস করি স্বর্গে

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বা জাবি বা জানবিবি আপনি যে নামেই ডাকুন, বিষয়টা কি শুধু নামের মধ্যেই সীমাবদ্ধ?না, আমার কাছে আমার জাহাঙ্গীরনগর, আমার জাবি, আমার জানবিবি অগণিত ভালোবাসার একটা পরিপূর্ন সম্পর্কের নাম।আমি আসলে প্রীতির পক্ষে বা বিপক্ষে কিছুই বলবনা, শুধু প্রীতি যেভাবে তার নিজের মনের মত করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে উপস্থাপন করেছেন আমি ঠিক সেভাবে না করে আমার মত করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে উপস্থাপন করবো।
তার আগে বলে রাখা ভালো, আমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৪তম আবর্তনের দর্শন বিভাগের ছাত্র। আর আপনাদের সুবিধার জন্য বলে রাখি যেই প্রীতির কথা বলছি তার পুরো নাম জান্নাতুন নাঈম প্রীতি, সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৫ তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।
এবার আসল কথায় আসি,
“জাবি শিক্ষার্থীর সাথে র‌্যাগিংয়ের গুরুতর অভিযোগ” শিরোনামে যে লেখাটি “উইমেন চ্যাপ্টার”এ প্রকাশিত হয় সে লেখার লেখিকা প্রীতি এবং সেখানে যে র‌্যাগিংয়ের শিকার বলা হয় তার নামও জান্নাতুন নাঈম প্রীতি।প্রীতি বলেন, “এখানে প্রথম আসার পর একটি অদ্ভুত বিষয়ের মুখোমুখি হয়েছি- যেটির নাম সহজ বাংলায় ‘নির্যাতন’। নির্যাতনটি করা হয় মানসিকভাবে। অন্যদের সামনে হেয় করে, ছোটো করে।”
আরও বলেন, “এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম হবে বলে চুপ করে থেকেছি। সয়ে গিয়েছি। প্রতিবাদ করিনি। এর ফলাফলগুলি আমার মানসিক চিকিৎসক এবং পরিবারের মানুষেরা জানেন।”
এবার আমি বলি, আমার মুখ আছে আমি কথা বলবো, কথা বলার অধিকার আমাকে রাষ্ট্র দিয়েছে, কিন্তু তাই বলে আমার মুখে, আমার মনে যখন যা ইচ্ছা তখন তা আমি বলতে পারিনা। আমার সমস্যা থাকতে পারে কিন্তু তাই বলে আমি অন্যকে এইজন্য দোষী বলতে পারিনা।
Post MIddle
প্রীতি নিজেই বলেছেন তার মানসিক সমস্য আছে, সেইজন্য তার আরো বড় মানসিক ডাক্তার দেখানো উচিৎ বলে আমি মনে করি।কারন তিনি যা বলেছেন, তা নিতান্তই কাল্পনিক বা বড় আপুরা যা বলেছেন তিনি তার বিপরীত বুঝেছেন।
কথা প্রসঙ্গে একটা কথা মনে পড়ে গেলো, একদিন আমি একটা ময়লা শার্ট পরে আমার হলের সামনে হাঁটাহাঁটি করতেছিলাম, তখন আমার হলের এক বড় ভাই আমাকে ডেকে বললেন, “এইসব কি ময়লা গায় দিয়ে ঘুরতেছিস, যা এখনই হলের ভিতরে যা, অন্য শার্ট পরে আয়।” এখন আপনারাই বিবেচনা করেন এটা কি র‍্যাগ নাকি অন্যকিছু। তখন আমারো মনে হয়েছিল, আমি কি শার্ট পরবো সেটা উনি বলার কে? কিন্তু আজ তো আমার ঠিকই মনে হচ্ছে ওইদিন ভাই আমাকে কেনো শার্ট বদল করতে বলছিলেন। কারন এখন বুঝি একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমার কিভাবে চলা উচিৎ।
প্রীতি বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম হবে বলে এতদিন কিচ্ছু বলেন নি। এ কথা দিয়ে তিনি কি বুঝাতে চেয়েছেন? তার কথার দাম এতই বেশি যে তার কথাতেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নাম সুনাম নির্ভর করে? নিজেকে দামী ভাবার প্রবনতা ভালো কিন্তু সেই প্রবনতাই যদি তাকে একদম সস্তা করে দেয় তবে সেটা খারাপ, এটা তার মনে করা উচিৎ ছিল।
কোথায় র‍্যাগ? কোথায় নির্যাতন? আমিতো বাস করি স্বর্গে।
বড় আপুদের কোলে কখনো মাথা রেখে ঘুমিয়েছেন প্রীতি? হয়তো ঘুমাননি আর কখনো মনে হয় ঘুমাতে পারবেনও না।আমি প্রতি রাতেই বড় ভাইদের কোলে মাথা রাখি কথা বলি, কোন কোন বড় ভাই বড় আপু হাত দিয়ে ভাত খাওয়ান আমাকে। সম্পর্ক যে কত মধুর হয় তা জানে এই জাবি, এই জানবিবি এই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
শেষ করবো, আপনার কথা দিয়েই শেষ করবো, “জীবনে কখনই অন্যায় মেনে নেইনি, ভবিষ্যতেও নেবো না। তুমি দুনিয়ার যেই-ই হও আমি তোমার অন্যায় মেনে নেবো না। কারণ জীবনটা আমার কাছে দৌড় প্রতিযোগিতা নয়, আমার কাছে ভ্রমণ। অন্য কারোর জন্য আমার মূল্যবান ভ্রমণটি আমি নষ্ট করবো না, করবো না এবং করবো না!”
আমার জাহাঙ্গীরনগর নিয়ে কোন বাজে কথা মেনে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না।
মাজহারুল ইসলাম সৈকত,দর্শন বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
পছন্দের আরো পোস্ট