দন্ত চিকিৎসক দিয়ে চলছে বেরোবির চিকিৎসা সেবা

BEROBIএকজন দন্ত চিকিৎসক ও একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার আর একজন নার্সকে দিয়ে চলছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থীর চিকিৎসাসেবা। নার্স ছাড়া স্যালাইনপুশ (কেনুলা করে) করতে পারেন না ঐ দন্ত চিকিৎসক। এমনকি ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা প্রদানের কথা থাকলেও তারা ৮ ঘন্টার উপরে সেবা প্রদান করতে নারাজ।

সকাল নয়টা হতে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত এ সেন্টাওে ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও দুপুর সাড়ে ১২ টা হতে ২ টা পর্যন্ত দুপুরের খাবার খাওয়ার অজুহাতে কোন চিকিৎসক সেবা দিতে বরাবই অনিহা প্রকাশ করেন।ফলে বাধ্য হয়েই এমন অব্যবস্থাপনা, ডাক্তারদের বাজে ব্যবহার এবং পর্যাপ্ত ওষুধ না পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ছুটছেন বাইরের চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক কিছুর উন্নয়ন করা সম্ভব হলেও ৮ বছরেও কর্তৃপক্ষ কোন ভাবেই উন্নয়ন করতে পারেনি এ মেডিকেল সেন্টারের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য দফতর বন্ধের সঙ্গে সঙ্গেই বন্ধ হয়ে যায় সেবা। সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার এবং শনিবারেও বন্ধ থাকে চিকিৎসাসেবা। প্রশাসনিক ভবনে এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রও থাকায় বিভিন্ন আন্দোলনের সময় চিকিৎসা সেবাও বন্ধ থাকে। ফলে আরো চরমে পরেন সেবা গ্রহীতারা। ফলে অধিকাংশ চিকিৎসা সেবা গ্রহীতারা এ কেন্দ্রকে আলাদা করার জন্য বিভিন্ন সময় দাবিও করে আসছেন।কিন্তু কোন ভাবেই তা সম্ভব হয়ে উঠেনি আজও।

এদিকে চিকিৎসা কেন্দ্রের কাঙ্খিত সেবার ধরণের সঙ্গে পাল্টাচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা অসুখের ধরণ। রোগ নির্ণয়ের আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় অধিকাংশই জ্বর-সর্দি-কাশি এবং শারীরিক দুর্বলতার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রে আসেন রোগীরা। এদিকে একটু সমস্যা বেশি দেখলেই রোগীকে পাঠানো হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

Post MIddle

সরেজমিনে দেখা যায়, চিকিৎসা কেন্দ্রে চারজন চিকিৎসকের পদ থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আছেন মাত্র দুজন। তাদের একজন মেডিকেল অফিসার দন্তক ডা. এ এম এম শাহরিয়ার এবং অপরজন খন্ডকালীন চুক্তিভিত্তিক মেডিকেল অফিসার ডা. নীলুফার বানু। এছাড়া একজন সেকশন কর্মকর্তা, একজন সেবিকা ছাড়াও আরোও ৯ জন রয়েছেন। দুই চিকিৎসক প্রতিদিন প্রায় শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন বলে জানান সেকশন কর্মকর্তা এসএইচএম ইকবাল।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ প্রায় সাড়ে ৮ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য মাত্র একটি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সময়মতো তা পাওয়া যায় না। তবে ব্যক্তিগত কাজে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অ্যাম্বুলেন্স ব্যবহার করতে দেখা যায় বলেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সেবার মান নিয়ে অসন্তুষ্টি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোবহান বলেন, আমরা কোন রোগের জন্য গেলেই একটা কমন ওষধ দেয়া হয়। আর অধিকাংশ সময় বলা হয় এ ছাড়া আমাদের কাছে আর কোন ওষধ নাই। তিনি আরো অভিযোগ করেন,একটু সিরিয়াস অসুখ হলেই বাইওে হতে কিনতে হয় ওষুধ।

এতসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বেরোবির চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল অফিসার এএম ডা. এম শাহরিয়ার বলেন, মাত্র দুইজন চিকিৎসক হওয়ায় প্রতিদিন গড়ে আমাকে একশ জনের মত রোগী দেখতে হয়। চেষ্টা করি ভালো সেবাটা দেয়ার। তবে বছরের শেষদিক হওয়ায় অনেক ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান,‘ইতোমধ্যে কিছু ওষুধ নিয়ে আসাও হয়েছে।’

এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে এম নূর-উন-নবী মুঠোফোনে জানান, চিকিৎসক সঙ্কট কেটে যাবে। সিলেকশন বোর্ড হয়ে গেছে। অচিরেই চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে।##

পছন্দের আরো পোস্ট