কুবিতে সন্তানহারা মায়ের আর্তনাদ

‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদ শুনুন। দোষীদের বিচার করুন। আমি এক হতভাগিনী, ছেলে খালিদ সাইফুল্লাহকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু আমার ছেলে খালিদ সাইফুল্লাহকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার শোকাবহ আগষ্ট মাসের প্রথম প্রহরে হারিয়েছি।’ সংবাদ সম্মেলনে এভাবেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচারের আকুতি জানালেন নৃশংস হত্যার শিকার হওয়া কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা খালিদ সাইফুল্লাহর মা ফাতেমা আক্তার।

Post MIddle

মঙ্গলবার কুমিল্লা নগরীর একুশে টিভির অফিসে ছেলের হত্যাকারীদের বিচারের দাবি জানিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত সাইফুল্লার মা এ সব কথা বলেন। এর আগে তিনি গত ১৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, বঙ্গবন্ধু হলের প্রচার সম্পাদক মাসুদ আলম, বিপ্লব চন্দ্র দাস ও অজ্ঞাত নামা কয়েকজনকে মামলার আসামীর তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করতে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে আবেদন করেন। ২০ অক্টোবর আদালত উক্ত নামগুলোকে তালিকায় রেখে তদন্ত পরিচালনা করতে পুলিশকে নির্দেশ দেন।

সংবাদ সম্মেলনে খালিদ সাইফুল্লার মা লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজা ই এলাহী ও বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মাসুদ আলম খালিদকে ধরে রাখে ও বিপ্লব চন্দ্র দাস খালিদকে গুলি করে হত্যা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো: মুজিবুর রহমান মজুমদার স্বঘোষিত হত্যাকারী বিপ্লব চন্দ্র দাসকে জামিনের মুক্ত করার জন্য সম্প্রতি আদালতে আবেদন করেন। হত্যাকান্ডের প্রায় তিন মাস পার হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। হত্যাকান্ডের বিচারের জন্য সাইফুল্লাহর আবাসিক হলের প্রাধ্যক্ষ মেহেদী হাসানের নীরব ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ছেলে হারা এ মা। সংবাদ সম্মেলনে খালিদ সাইফুল্লার বাবা মো: জয়নাল আবেদীন ও মামা আব্দুল আওয়াল উপস্থিত ছিলেন।

খালিদের মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার সর্বোচ্চ বিচারের আনুরোধ করেছেন। জাতির পিতার প্রতি শোক জানাতে গিয়ে সাইফুল্লাহ নিহত হয়েছেন বিধায় প্রধানমন্ত্রীও শোকাহত হবেন এবং হতভাগা ছেলে হারা মায়ের আকুতি তিনি শুনবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রকাশ থাকে যে, গত ১ আগস্ট প্রথম প্রহরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংষর্ষে নিহত হন কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মার্কেটিং বিভাগের সপ্তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খালিদ সাইফুল্লাহ। এরপর ঐ দিনই জরুরী সিন্ডিকেটে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। অনির্দিষ্টকালের বন্ধের পর ২৫ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়। তবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কুন্ডুগোপী দাস, ছাত্র উপদেষ্টা ড. আহসান উল্যাহ ও প্রক্টর মোহাম্মদ আইনুল হককে নিয়ে গঠিত হওয়া তদন্ত কমিটি এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দোষীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে এখন পর্যন্ত অদেখাই রয়ে গেল খালিদ সাইফুল্লাহ হত্যার বিচার।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট