কওমি শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদের সেমিনার

Post MIddle

কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান। দেশের কওমি মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী এই স্বীকৃতি বাস্তবায়ন হয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।

সোমবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ‘কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদ: গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক এক শিক্ষা সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কওমি শিক্ষাসনদ স্বীকৃতি বাস্তবায়ন পরিষদ এই সেমিনারের আয়োজন করে।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ দেশের একজন প্রকৃত ইসলামী চিন্তাবিদ ও নেতা। তিনি জঙ্গিবাদবিরোধী একলাখ আলেমের ফতোয়া সংগ্রহ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জমা দিয়েছেন। তার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে শ্রদ্ধা রয়েছে, তাতে আমার বিশ্বাস-তিনি কওমি মাদরাসা সনদের স্বীকৃতির যে দাবি জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তা পুরণ করবেন। ফরিদ উদ্দীন মাসউদের নেতৃত্বে মাদরাসা শিক্ষার পক্ষে থাকার ঘোষণা দেন ধর্মমন্ত্রী।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতি দিতে চান। এজন্য তিনি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসে যতদ্রুত সম্ভব সমস্যার সমাধান করতে বলেছেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইসলাম ও আলেমভক্ত একজন মানুষ। নামাজ ও কোরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে তিনি দিনের কাজ শুরু করেন। তার হাতেই বাংলাদেশ। তাই তার হাতে কওমি মাদরাসার স্বীকৃতি হবে না-এই চিন্তার কোন কারণ নেই। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আল্লাহর খাস রহমত আছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা থেকে আল্লাহ নিজ হাতে তাকে রক্ষা করেন। তিনি রক্ষা পেয়েছেন বলেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আলেমদের ভুমিকার প্রশংসা করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আলেমরা নায়েবে রাসুল (সা.)। ইসলামকে যারা কলঙ্কিত করে তাদের বিরুদ্ধে আলেমদের কথা বলতে হবে। জঙ্গিবাদ ও মানুষ হত্যার বিরুদ্ধে আলেমরা কথা বলছেন বলেই আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি।

কওমি মাদরাসা শিক্ষা সনদের স্বীকৃতির পক্ষে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার কোন ধর্ম বা কওমি মাদরাসার বিরুদ্ধে নয়। যারা স্বীকৃতির বিরোধী ও ইসলামের শত্রু তাদের বিরুদ্ধে রূখে দাড়ান। কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান। তাদের জীবন যেন আরও উজ্ঝল হয় সেই কাজ করতে হবে। তিনি কওমি আলেমদের উদ্দেশ্যে বলেন, সনদের স্বীকৃতি নিয়ে কাজ শুরু করুন। সবাই যে আসবে, তা নয়। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বসুন। ইনশাআল্লাহ এই দাবি অপুরণ থাকবে না।

স্বাগত বক্তব্যে ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের ইমাম আল্লামা ফরিদ উদ্দীন মাসউদ বলেন, কওমি মাদরাসা সনদের স্বীকৃতি মানবিক ও জন্মগত অধিকার। যারা বলেন-স্বীকৃতি চাই না, এটা হাস্যষ্পদ কথা। তিনি বলেন, দেশের আলেমদের মুরব্বি, বেফাকের সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে আহবায়ক করে সরকার একটি কমিটি করে। ওই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই আইনের খসড়া করা হয়েছে। কিন্তু এখন তার পক্ষ থেকে অন্যরা কি বলেন, তা নিয়ে আশঙ্কা লাগে। শফী সাহেব যদি নিজ মুখে বলেন-ফরিদ উদ্দিন মাসউদের জন্য স্বীকৃতি হচ্ছে না, তাহলে আমি এই দায়িত্ব থেকে সরে যাব। তিনি বলেন, দেওবন্দের আদলে ও স্বকীয়তা বজায় রেখে কওমি সনদের স্বীকৃতি চাওয়ার নামে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আয়োজক সংগঠনের আহবায়ক আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়্যবের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেনমাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ, মাওলানা আতাউর রহমান আরেফী, মাওলানা মাজহারুল ইসলাম প্রমু।#

পছন্দের আরো পোস্ট