উপাচার্যের আশ্বাসে জাবিতে স্থগিত হলো সাংবাদিকদের অবরোধ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবদিকদের ডাকে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ কর্মসূচী সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে কর্তব্যরত সাংবদিকরা।পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ সকাল সাতটা থেকেই সাংবাদিকরা প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখে । ফলে সকাল থেকেই প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেউই প্রশাসনিক ভবনের ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি।
সকাল পৌনে ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম সাংবাদিক নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য নিজ বাসভবনে ডাকেন। আলোচনায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে , আগামী ২০ অক্টোবর, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিসিপ্লিনারি বোর্ড এবং পরদিন ২১ অক্টোবর, শুক্রবার বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় দোষীদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এসময় উপ-উপাচার্য আবুল হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা, রেজিস্ট্রার ও সিন্ডিকেট সচিব আবু বকর সিদ্দিক, জাবি সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক শাহেদুর রশিদ, জাবিসাসের সভাপতি বেলাল হোসাইন রাহাত ও সাধারণ সম্পাদক মওদুদ আহম্মেদ সুজন উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্যের বাসভবনের সিদ্ধান্ত জানাতে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে অধ্যাপক শাহেদুর রশিদ বলেন, আন্দোলন বা অবরোধ করে সাংবাদিক নির্যাতনের বিচার চাওয়া সত্যিই দুঃখজনক যা প্রশাসনকে স্ব উদ্যোগে করার কথা ছিল। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় জাবি প্রশাসনের পক্ষ হতে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
জাবিসাসের সভাপতি বেলাল হোসাইন রাহাত বলেন, শুধু সাংবাদিক নয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব প্রশাসনের। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি প্রতিনিয়ত সাধারণ শিক্ষার্থীরাসহ সাংবাদিকরাও কতিপয় ছাত্র নামধারী বেপরোয়া সন্ত্রাসীদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন বিচারের বদলে দোষী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে।
![Post MIddle](https://lekhapora24.net/wp-content/uploads/2022/03/920X80.gif)
এদিকে সাংবাদিকদের এ বিচার দাবির আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করে জাবি ছাত্রফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ, জাবি সাংস্কৃতিক জোট ও বিভিন্ন সাংস্কৃকিত সংগঠনের নেতা-কর্মীদেরা।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুন রাতে এক তরুণীকে অপহরণকারীর হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হাতে মারধরের শিকার হন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জাবি প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম। পরবর্তীতে সাংবাদিকদের আন্দোলনের চাপে জরুরী সিন্ডিকেট সভায় তিনজনকে সাময়িক বহিষ্কার করে এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২০ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রায় দুই মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও দোষীদের বিচারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
প্রশাসনের এই উদাসীনতায় ক্ষুদ্ধ হয়ে অতি দ্রুত দোষীদের বিচার দাবিতে গত ৯ অক্টোবর উপাচার্য বরাবর সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে ১৬ অক্টোবরের মধ্যে বিচার করা না হলে প্রশাসনিক ভবন অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয়।