সিভাসুর সাথে মালয়েশিয়া ইউনিভার্সিটির সমঝোতা চুক্তি

মালয়েশিয়ার স্বনামধন্য সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া তেরেঙ্গানো (Universiti Malaysia Terengganu)-এর সাথে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা বিনিময়ের লক্ষ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আজ ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্ব স্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ ও ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া তেরেঙ্গানোর উপাচার্য প্রফেসর দাতু ড. নূর আয়েনী হাজি মুখতার।

চুক্তি অনুযায়ী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ এবং ফুড সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি অনুষদের সকল শিক্ষার্থী প্রতি বছর মালয়েশিয়ার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাসের ইন্টার্নশীপ করার সুযোগ পাবে। আগামী নভেম্বর ২০১৬ হতে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ১ম ব্যাচের ছাত্রছাত্রীরা ইন্টার্নশীপ করার জন্য মালয়েশিয়া গমন করবে। একইভাবে মালয়েশিয়ার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ইন্টার্নশীপ করার জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে।

সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ নুরুল আবছার খান, ফুড সায়েন্স এ- টেকনোলজি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. খন্দকার নুরুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার মীর্জা ফারুক ইমাম, প্রক্টর প্রফেসর গৌতম কুমার দেবনাথ, ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া তেরেঙ্গানোর School of Fisheries and Aquaculture Sciences এর ডীন Professor Dr. Mazlan Abd. Ghaffar, School of Food Science and Technology এর ডীন Associate Professor Dr. Amiza Mat Amin, Senior Lecturer Dr. Md. Abdul Kader.

সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপাচার্য প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই কারিগরি বিষয়সমূহে যুগোপযোগী শিক্ষা প্রদান এবং হাতে-কলমে ব্যবহারিক কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এ বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে সর্বপ্রথম প্রাণি চিকিৎসা বিষয়ে এক বছর মেয়াদী ইর্ন্টানশীপ কর্মসূচী চালু করে। পরবর্তীতে ফুড সায়েন্স এ- টেকনোলজি অনুষদের শিক্ষার্থীরাও ৪ বছরের কোর্স কারিকুলামের মধ্যে ৬ মাস দেশের বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ইর্ণ্টানশীপের সুযোগ পাচ্ছে। মাৎস্যবিজ্ঞান এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকনিষ্ঠ অনুষদ হিসেবে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে ১২টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রছাত্রীরা মাৎস্যবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রীতে অধ্যায়নের সুযোগ পাচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই এই কারিগরী বিষয়ে ইর্ণ্টানশীপ প্রোগ্রামের সুযোগ না থাকায় শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকুরী জীবনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে ছাত্রছাত্রীরা অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে আমরা অনুধাবন করি। এই উপলদ্ধি থেকে ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় দেশে সর্বপ্রথম মাৎস্যবিজ্ঞান বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারী স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে ২০১৬ সাল থেকে স্নাতক পর্যায়ে ৩ মাসের ইর্ণ্টানশীপ চালু করেছে।

Post MIddle

তিনি আরও বলেন, প্রযুক্তিগত বিষয়সমূহে ছাত্রছাত্রীদের আরও দক্ষ ও দূরদর্শী করতে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইর্ণ্টানশীপের পাশাপাশি বিদেশেও ইর্ণ্টানশীপ ব্যবস্থা করা অত্যাবশ্যক বলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসন অনুধাবন করে। বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ছাত্রছাত্রীরা ভারতের তামিলনাডু ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাজ ভেটেরিনারি কলেজে দ্বি-পক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে এক মাসের জন্য ইর্ণ্টানশীপের সুযোগ পাচ্ছে। সম্প্রতি ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের বাছাইকৃত ছাত্রছাত্রীরা যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্্ট ইউনিভার্সিটিতেও এক মাসের ইর্ণ্টানশীপের সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু ফুড সাইন্স ও মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বৈদেশিক ইন্টার্নশীপের সুযোগ ছিল না।

মালয়েশিয়ার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সাথে যোগাযোগের এক পর্যায়ে উভয় বিশ্ববিদ্যালয় এ বিষয়ে ঐক্যমতে উপণীত হয়। গত ২৮ সেপ্টেম্বর’১৬ -০১ অক্টোবর’১৬ শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের দ্বি-পক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়া তেরেঙ্গানোর ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এই চুক্তির আওতায় মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ ও ফুড সাইন্স এ- টেকনোলজি অনুষদের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী মালেশিয়ার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাসের জন্য ইর্ণ্টানশীপ করার সুযোগ পাবে যা নভেম্বর, ২০১৬ হতে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ১ম ব্যাচের ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমে শুভ সূচনা হবে। মালেশিয়ায় ইর্ণ্টানশীপে থাকাকালীন ছাত্রছাত্রীরা অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার ব্যবস্থা, শিক্ষা গ্রহণ, শিক্ষা সফরসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পাবে। একইভাবে মালেশিয়ার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ইর্ণ্টানশীপ করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করলে সমান সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে।

উপাচার্য বলেন, মালেশিয়ায় অবস্থানকালীন সেখানকার অভিজ্ঞ অধ্যাপকদের তত্ত্বাবধানে ব্যবহারিক বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা পেলে কর্মজীবনে এর সুফল পাওয়া যাবে এবং অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষ ও যুগোপযোগী গ্র্যাজুয়েট তৈরির পরিকল্পনা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। উভয় প্রতিষ্ঠান লাভবান হবে বিশেষ করে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে।#

আরএইচ

পছন্দের আরো পোস্ট