ঢাবিতে গৌড়ীয় নৃত্যে বৌদ্ধ যুগের প্রভাব শীর্ষক সেমিনার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ‘সেন্টার ফর বুদ্ধিস্ট হেরিটেজ এন্ড কালচার’ এর উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রমেশ চন্দ্র মজুমদার আর্টস অডিটোরিয়ামে ‘গৌড়ীয় নৃত্যে বৌদ্ধ যুগের প্রভাব’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

Post MIddle

‘সেন্টার ফর বুদ্ধিস্ট হেরিটেজ এন্ড কালচার’-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. বেলু রানী বড়–য়ার স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সেমিনার শুরু হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন অধ্যাপক ড. বেগম আকতার কামাল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র চেয়ার অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়। প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সোমা মমতাজ।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. সুকোমল বড়–য়া, অধ্যাপক ড. সুমঙ্গল বড়–য়া, অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া প্রমুখ। সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন ইন্দিরাগান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক জয়শ্রী কুন্ডু। প্রবন্ধের সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন নাচের মুদ্রা উপস্থাপনের মাধ্যমে নৃত্যকলা বিভাগের খন্ডকালীন শিক্ষক রিচি প্রিয়াংকা’র নৃত্য পরিবেশনা সেমিনারে এক ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।

সেমিনারের মূল বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায় প্রাচীন বাংলার শাস্ত্রীয় নৃত্য গৌড়ীয় নৃত্যধারার প্রেক্ষাপট এবং বৌদ্ধ যুগের প্রভাব বিস্তৃতভাবে ব্যাখ্যা করেন। সাহিত্য, দেবদাসী ধারা, ভাস্কর্যে, চিত্রকলায় নৃত্যের শাস্ত্রানুযায়ী বিশ্লেষণ ছাড়াও সাম্প্রতিককালের গৌড়ীয় নৃত্যে বৌদ্ধ প্রভাবের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরেন। পরিশেষে তিনি বলেন, প্রাচীনকাল থেকে বর্তমানকাল পর্যন্ত উপমহাদেশে তথা বৃহৎ বাংলার শিল্পী ও নৃত্যের ছাত্র-ছাত্রীরা গৌড়ীয় নৃত্যের মাধ্যমে বৌদ্ধ প্রভাবকে প্রতিকায়িত করে চলেছেন।

সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক সার্ক শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তির জন্য প্রতিষ্ঠিত শীর্ষ সংগঠন সার্কের অস্তিত্ব আজ প্রশ্নের মুখে। এই দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে ঐতিহ্যগতভাবে শান্তির অঞ্চলে রূপান্তরিত হওয়ার কথা- শান্তির বাণী প্রচারিত হওয়ার কথা। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন এই উপমহাদেশ হবে শান্তির অঞ্চল। সার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। শান্তির পথ থেকে এই অঞ্চল অশান্তি ও অধর্মের পথে চলে গিয়েছে। অপ-সংস্কৃতির কারণে আজ আমরা শান্তি থেকে সরে গিয়েছি। সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য জানার মাধ্যমেই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। নৃত্য, সংগীত ও সংস্কৃতির হাজার বছরের ইতিহাস জানার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায়ই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্যকলা বিভাগ চালু করা হয়েছে।

উপাচার্য আরো বলেন, ইতিহাসের দিনক্ষণ ঘটনাবলি শুধু নয়, শুধু নৃত্য শেখানোও নয়, সাথে সাথে সংস্কৃতির ইতিহাসও চর্চা করতে হবে। সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ইতিহাস সহযোগে মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সুনাগরিক গড়ে তুলতে নৃত্যকলা ও সংগীত চর্চার মাধ্যমে কাজ করার আহ্বান জানান উপাচার্য।

উপাচার্য ড. মহুয়া মুখোপাধ্যায়কে প্রবন্ধ উপস্থানের জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানান। ধন্যবাদ জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ড. সোমা মমতাজকে সেমিনারে অংশগ্রহণ করার জন্য।##

পছন্দের আরো পোস্ট