খুবিতে সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তন উদ্বোধন

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেছেন সাংবাদিক লিয়াকত আলী তাঁর কর্মের মধ্যেই চিরঞ্জীব হয়ে থাকবেন। বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর একাডেমিক ভবনে সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তন এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে শুরু করে খুলনার উন্নয়নে তিনি অপরিসীম অবদান রেখেছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ভবনের অডিটরিয়ামটির আধুনিকায়নের প্রয়োজনীয়তা আমরা অনেক দিন ধরে উপলব্ধি করছিলাম শেষ পর্যন্ত তা মরহুম সাংবাদিক লিয়াকত আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে প্রদত্ত স্বতস্ফূর্ত অনুদানে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং সাংবাদিক লিয়াকত আলীর মতো একজন গুণী মানুষের নামে মিলনায়তনটির নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যতোদিন থাকবে, এটি যতোদিন থাকবে, তাঁর নামও থাকবে। তিনি এই মিলনায়তন আধুনিকায়নে গঠিত কমিটির আহবায়ক জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিনসহ কমিটির সদস্যদের অক্লান্ত প্রয়াসের জন্য ধন্যবাদ জানান।

জীব বিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুল আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান বলেন, সাংবাদিক লিয়াকত আলী সবার কাছে প্রিয়জন ছিলেন। তিনি সবাইকে নিয়ে খুলনার উন্নয়নে আন্দোলন করার ক্ষেত্রে সফলতা দেখিয়েছেন। গল্লামারী মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধসহ খুলনার সব বড় উন্নয়নে তার নেতৃত্ব ও সাংগঠনিক তৎপরতার কারণে সফল হয়।

Post MIddle

দৈনিক পূর্বাঞ্চল ও দি ডেইলি ট্রিবিউন পত্রিকার সম্পাদক ফেরদৌসী আলী এ মিলনায়তনটির নাম সাংবাদিক লিয়াকত আলীর নামে নামকরণ করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশেষ করে উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট এর সদস্যদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন সত্যিকারঅর্থে গর্বিত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে। প্রতিষ্ঠার পর তিন দশক এ বিশ্ববিদ্যালয়টি মানুষের স্বপ্নের স্বার্থক রূপ দিতে পেরেছে। আজ খুলনা শহরের যে মর্যাদা, ভাবমূর্তি এবং শহরের যে শোভা বৃদ্ধি পেয়েছে তার পিছনে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। আর যারা শিক্ষক-গবেষক এ কৃতিত্ব তাদেরই। সাংবাদিক হিসেবে লিয়াকত আলী বা আমরা যে স্বপ্ন দেখেছি তা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়ার জন্য তিনি শিক্ষকদের সশ্রদ্ধ শুভেচ্ছা জানান।

তিনি বলেন মরহুম লিয়াকত আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা চেয়েছি তাঁর স্মৃতির স্মারক হিসেবে সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু করতে। এর প্রধান কারণ লিয়াকত আলী তাঁর জীবনে শিক্ষকদের সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করতেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যে মানুষের ভবিষ্যত গড়ার জায়গা এটা তার উপলব্ধিতে ছিলো। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. আহমেদ আহসানুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) টিপু সুলতান। এছাড়া অনুষ্ঠানে সাংবাদিক লিয়াকত আলীর সংক্ষিপ্ত জীবনী পাঠ করে শোনান দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকার মফস্বল সম্পাদক অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা সিন্দাইনী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংবাদিক লিয়াকত আলীর স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয় এবং পরে তাঁর জীবন ও কর্মের উপর একটি ডুকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন স্কুলের ডিন, পরিচালক, ডিসিপ্লিন প্রধান, বিভাগীয় প্রধানসহ শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং খুলনার প্রেস ক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, কেইউজে, এমইউজে, ফটো জার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ এবং রোটারিয়ানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আগে ফেরদৌসী আলী লিয়াকত আলী মিলনায়তনের নামফলক উদ্বোধন করেন। এসময় উপাচার্য, ট্রেজারারসহ শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে দোয়া পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা ক্বারী মুস্তাকিম বিল্লাহ।

প্রথম পর্বের এ অনুষ্ঠানের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনের পর একই মঞ্চে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রোটারি ডিস্ট্রিক্ট হাসপাতালের নির্মাণ কাজে রোটারি ক্লাব সংগৃহীত এবং ঢাকা ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ২০ লাখ টাকার চেক বিম্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান এর হাতে তুলে দেন রোটারিয়ান ফেরদৌসী আলী। এ সময় ট্রেজারার খান আতিয়ার রহমান, কেইউআরডিসি হাসপাতাল পরিচালনা নির্বাহী কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. খান গোলাম কুদ্দুসসহ কমিটির সদস্য ও রোটারিয়ানবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ##

পছন্দের আরো পোস্ট