রাবি শিক্ষিকা আকতার জাহানের সাবেক স্বামী সাময়িক প্রত্যাহার
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আকতার জাহানের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চাপের মুখে তার সাবেক স্বামী ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমদ বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে নিজেকে সাময়িক প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, তানভীর আহমদ বিভাগের সভাপতি থাকাকালীন আকতার জাহানকে নানভাবে গালাগালি ও হয়রানি করেছে যার প্রত্যক্ষ সাক্ষী আমরা। এসবের জন্য আমারা তাকে অনেক নিবৃত্ত করারও চেষ্টা করেছি। আমরা বিভাগের ১৭ জন শিক্ষক আজ দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার সভার শুরুতে লিখিত আকারে বিভাগের সভাপতির কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি। আমরা সভাপতিকে বলেছি তানভীরের সঙ্গে কোনো সভা কিংবা অ্যাকাডেমিক কোনো কাজ করা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে চাপের মুখে তানভীর আহমেদ নিজেই অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক প্রত্যাহার করে নেন।
তবে এ ব্যাপারে বিভাগের সভাপতি ড. প্রদীপ কুমার পান্ডের সাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘আকতার জাহানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তানভীর আহমদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে এবং বিভাগের শিক্ষকদের সর্বসম্মত মতামতের ভিত্তিতে তানভীর আহমদ বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে নিজেকে প্রত্যাহার করার প্রস্তাব দেন। সভায় বিষয়টি সর্বসম্মতভাবে গ্রহণ করা হয়।’
এছাড়া আকতার জাহানের মৃত্যুর পর তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ‘আত্মহত্যার প্ররোচনার’ অভিযোগে মতিহার থানায় যে মামলা করা হয়েছে তা তদারকি করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
নিয়মিতভাবে মামলার অগ্রগতি বিভাগকে অবহিত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিভাগের সভাপতিকে আহ্বায়ক ও সহকারী অধ্যাপক শাতিল সিরাজ, কাজী মামুন হায়দার ও আব্দুল্লাহীল বাকীকে সদস্য করে এ কমিটি গঠন করা হয়
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, আকতার জাহানের মৃত্যু ও মৃত্যুসংশ্লিষ্ট বিষয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক গণমাধ্যমে বিভাগ সম্পর্কিত যেসব বিষয় উঠে এসেছে তা তদন্ত করে দেখার জন্য বিভাগের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর একটি চিঠি দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এছাড়া আকতার জাহানের নামে বিভাগের সেমিনার লাইব্রেরিটির নামকরণ, বিভাগের সামনে তাঁর নামে ‘আকতার জাহান কর্নার’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়। বিভাগে একটি শোকবই খোলারও সিদ্ধান্ত হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সহযোগী অধ্যাপক তানভীর আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।