লক্ষ্য অর্জনে যেতে হবে বহুদূর। নুরুল ইসলাম নাহিদ

Education Minister Nahidআজ ১৭ সেপ্টেম্বর, বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলনের প্রতীক ঐতিহাসিক ‘শিক্ষা দিবস’। শিক্ষার জন্য সংগ্রাম, বিজয় ও গৌরবের প্রতীক এই দিবসের এবার ৫৪তম বার্ষিকী। এই দিনে সামরিক তৎকালীন শাসক জেনারেল আইয়ুব খানের চাপিয়ে দেওয়া গণবিরোধী ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ বাতিল করে সবার জন্য শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং একটি গণমুখী, বিজ্ঞানমনস্ক ও অসাম্প্রদায়িক শিক্ষাব্যবস্থা অর্জনের লক্ষ্যে ছাত্রসমাজ অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন গড়ে তুলেছিল। ওই সংগ্রামে শহীদ বাবুল, ওয়াজিউল্লাহসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

আইয়ুবের শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে ওই বছরের আগস্ট মাস থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। ছাত্রসমাজের আন্দোলনের প্রতি জনসাধারণের সমর্থন ও সহানুভূতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। আমার সৌভাগ্য যে আমি এই আন্দোলনের প্রথম মিছিলেই অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং সেই ধারাবাহিকতা আমার জীবনে এখনো অব্যাহত আছে। রাজপথের প্রত্যক্ষ সংগ্রামের যে প্রভাব সেদিন আমার ওপর পড়েছিল, তা পরবর্তী জীবনে বিধিলিপির মতো আমাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

১৯৫৯ সালে আইয়ুব খান তৎকালীন শিক্ষাসচিব এস এম শরিফকে চেয়ারম্যান করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট ‘জাতীয় শিক্ষা কমিশন’ গঠন করেন। এই কমিশন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর লক্ষ্য ও স্বার্থের প্রতিফলন ঘটিয়ে গণবিরোধী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। ১৯৬২ সালের মাঝামাঝি সময়ে শরিফ কমিশন রিপোর্ট প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আইয়ুব সরকার ওই কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়।

ওই তথাকথিত শিক্ষানীতিতে উল্লেখযোগ্য সুপারিশের মধ্যে একটি ছিল শিক্ষাকে ব্যয়বহুল পণ্যের মতো করা। যে অভিভাবক বেশি বিনিয়োগ করবেন, তিনি বেশি লাভবান হবেন—এজাতীয় প্রস্তাব করায় সাধারণের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এ ছাড়া অবৈতনিক শিক্ষার ধারণাকে ‘অবাস্তব কল্পনা’ বলে উল্লেখ করা এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ডিগ্রি পর্যন্ত ইংরেজি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ ছিল। ওই শিক্ষানীতিতে উর্দুকে জনগণের ভাষায় পরিণত করা, সাম্প্রদায়িকতা কৌশলে জিইয়ে রাখার চেষ্টা, ডিগ্রি কোর্সকে দুই বছরের পরিবর্তে তিন বছর মেয়াদি করার কথা ছিল। তাৎক্ষণিক বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়ায় তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স। ছাত্রসমাজ দারুণভাবে ক্ষুব্ধ হয়। অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের মুখে আইয়ুব সরকার ওই শিক্ষানীতি স্থগিত করে।

১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারির পর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ সব ধরনের সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের তৎপরতা বেআইনি ঘোষণা করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় সব ধরনের মৌলিক মানবাধিকার, শুরু হয় চরম দমননীতি। এরই মধ্যে ১৯৬০ সালের দিকে ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা গোপন সমঝোতা ও যোগাযোগ রেখে নিজ নিজ সংগঠন গোছানোর পাশাপাশি আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা শুরু করেন। ১৯৬০ সালে আমি দশম শ্রেণির ছাত্র এবং স্কুল ক্যাপ্টেন ছিলাম। ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের সঙ্গে আমার গোপন যোগাযোগ গড়ে ওঠে। ওই সময়ের বড় দুটি ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ ও ছাত্র ইউনিয়ন ছাড়াও ডাকসু, বিভিন্ন হল ও কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এসব কর্মসূচির প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের সমর্থন ও অংশগ্রহণ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত।

একদিকে সামরিক শাসনবিরোধী গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, অন্যদিকে চাপিয়ে দেওয়া গণবিরোধী শিক্ষানীতি বাতিল করে গণমুখী শিক্ষানীতি প্রতিষ্ঠার দাবিতে দেশ উত্তাল হয়ে ওঠে। এই পটভূমিতে ১৭ সেপ্টেম্বর সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ দেশজুড়ে হরতালের ডাক দেয়। ছাত্র-জনতার ব্যাপক অংশগ্রহণে আইয়ুব শাসনের ভিত কেঁপে ওঠে। পরে ছাত্র আন্দোলন ও শহীদদের আত্মদান তথা শিক্ষার ন্যায্য অধিকার ও সুযোগ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রতীক ১৭ সেপ্টেম্বরকে ‘শিক্ষা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে তথাকথিত ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ স্থগিত ঘোষণা করলেও শাসকশ্রেণি তাদের চেষ্টা অব্যাহত রাখে। ১৯৬৪ সালে বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে আরেকটি কমিশন গঠন করে নতুন মোড়কে তাদের পরিকল্পিত শিক্ষানীতি গ্রহণের চেষ্টা করে। বিভ্রান্তি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ওই কমিশনের নাম দেওয়া হয় ‘কমিশন অন স্টুডেন্টস প্রবলেম অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার’ বা ‘ছাত্র সমস্যা ও কল্যাণ কমিশন’। হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নে নানা কৌশল করা হলেও ছাত্র আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান সরকার সেটিও বাস্তবায়ন করতে পারেনি।

এরপরও কিন্তু শাসকগোষ্ঠী হাল ছাড়েনি। উনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানে আইয়ুব খানের পতন নিশ্চিত হয়। জেনারেল ইয়াহিয়া খান সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতায় বসেই সীমিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দেন। কিন্তু তিনিও সবার আগে ফের শিক্ষানীতি প্রণয়নের স্বপ্ন দেখেন। প্রায় চার মাসের মধ্যে এয়ার মার্শাল নূর খানের নেতৃত্বে একটি কমিশন করে দ্রুত শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ছাত্রসমাজ আবারও তা প্রত্যাখ্যান করে। এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আলোচনা সভায় ইসলামী ছাত্র সংঘ সশস্ত্র হামলা করে। এতে বহু ছাত্র আহত ও একজন নিহত হয়।

গৌরবময় সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরই প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী ড. কুদরাত-এ-খুদার নেতৃত্বে গঠিত শিক্ষা কমিশন একটি আধুনিক শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে। কিন্তু পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নৃশংসভাবে হত্যার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ওই শিক্ষানীতি আর বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর আরও প্রায় অর্ধডজন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটিরও বাস্তবায়ন হয়নি।

২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠনের পর সব রাজনৈতিক মতবাদ ও সমাজের নানা চিন্তার মানুষের মত গ্রহণ করে একটি জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতভাবে এটি অনুমোদন লাভ করে। এই শিক্ষানীতিতে ছাত্রসমাজ ও জাতির ৫৪ বছরের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রামের প্রতিফলন ঘটেছে। ‘জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০’ জাতির ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার মৌলিক দলিল হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এটা প্রস্তুত করা হয়েছে জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করে। ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ গঠনের লক্ষ্যে, নতুন প্রজন্মকে প্রস্তুত করে তুলতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতিমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে অভাবনীয় সাফল্য এসেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এখন অনেকটাই নিশ্চিত।

এই লক্ষ্য অর্জনে আমাদের শিক্ষার মূল লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু দেশের প্রচলিত গতানুগতিক শিক্ষায় তা সম্ভব নয়। এ জন্য জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষার সার্বিক লক্ষ্য ও সুনির্দিষ্ট করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। সবার কাছে প্রত্যাশা, জাতীয় শিক্ষানীতিটা সুযোগ পেলে পড়ে দেখবেন।

Post MIddle

আমাদের নতুন প্রজন্মকে আধুনিক ও উন্নত বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য চাই যুগের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ বিশ্বমানের শিক্ষা-জ্ঞান, প্রযুক্তি ও দক্ষতা। শুধু দেশের মধ্যে নয়, নতুন প্রজন্মকে উন্নত দেশের নতুন প্রজন্মের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নিজের স্থান করে নিতে হবে। নতুন প্রজন্মকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে তারা ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, নতুন প্রজন্মকে শুধু জ্ঞান-বিজ্ঞান, প্রযুক্তি দিয়ে মাথা ভর্তি করে দিলেই হবে না। তাদের অবশ্যই ভালো মানুষ হতে হবে। সততা, নিষ্ঠা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা, নৈতিক মূল্যবোধ ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে তাদের গড়ে তুলতে হবে। আমাদের অনেক ভুলভ্রান্তি, সীমাবদ্ধতা ও ব্যর্থতা আছে। তা সত্ত্বেও সাধারণ বিচারে এ কথা বলা ভুল হবে না যে সার্বিক ও সংখ্যাগত বিবেচনায় শিক্ষায় যুগান্তকারী পরিবর্তন হয়েছে। গুণগত মান বৃদ্ধি পেলেও তা আমাদের প্রত্যাশা এখনো ছুঁতে পারেনি। তবে বিষয়টি উপলব্ধি করেই নানা পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নিয়ে আমরা এগোচ্ছি। শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে মানসম্মত নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক। এর জন্য আমরা সবকিছুই করছি। এ পর্যন্ত সরকার যেসব উদ্যোগ নিয়েছে এবং যেসব কার্যক্রম চলমান আছে, সেগুলো সম্পর্কে কিছু তথ্য তুলে ধরছি:

এখন প্রায় সব শিশু স্কুলে যাচ্ছে। মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী এখন সমান। নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ করা হচ্ছে, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে ব্রেইল পাঠ্যপুস্তক। ১০ লাখ শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক হয়েছে। শিক্ষায় সৃজনশীল পদ্ধতি প্রবর্তন হয়েছে। প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস চালু আছে। ২০ হাজার কম্পিউটার ল্যাব ও উপজেলায় আইসিটি রিসোর্স সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। মেধাবৃত্তি ছাড়াও বছরে ১ কোটি ২৮ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান এবং ৬০ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) মাধ্যমে সব বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ পাচ্ছেন।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড ও শিক্ষার অন্যান্য দপ্তর গতিশীল ও দুর্নীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। ২০০৯ সালে মোট শিক্ষার্থীর ১ শতাংশ কারিগরি শিক্ষা পেত, এখন তা ১৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২০ সালে লক্ষ্য ২০ শতাংশ অতিক্রম করা।

ইসলামি ও আধুনিক শিক্ষার সমন্বয় সাধন করে মাদ্রাসা শিক্ষার ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষায় গবেষণা ও মান বৃদ্ধির ওপর সর্বোচ্চ জোর দেওয়া হয়েছে। নতুন ‘অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল’ গঠন ও শিক্ষা আইন প্রক্রিয়াধীন।

নকলমুক্ত পরিবেশে এবং প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পাবলিক পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বছরের নির্দিষ্ট তারিখে অনুষ্ঠিত হয়, ফল প্রকাশ করা হয় ৬০ দিনের মধ্যে। সকল স্তরে নিয়মনীতি অনুসরণ করে ভর্তিব্যবস্থা স্বচ্ছ ও সুশৃঙ্খল করা হয়েছে।

সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা হয়েছে। এ বছর আগের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেশি উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার মান, শিক্ষকের দক্ষতা বৃদ্ধি ও শিক্ষানীতির লক্ষ্য বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, জাইকাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ সহায়তায় ১২টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।

পশ্চাৎপদ অঞ্চলসমূহের জন্য বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে একটি কর্মসূচির উদাহরণ দিচ্ছি। পশ্চাৎপদ অঞ্চলের যেসব স্কুলে একজন শিক্ষার্থীও ইংরেজি ও গণিতে পাস করত না, সেখানে বেশি বেতন দিয়ে অতিরিক্ত মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন প্রায় সবাই পাস করে। প্রতিবছর মেধা অন্বেষণ, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শিক্ষা সপ্তাহ পালন করা হয়। বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

আমরা শিক্ষা দিবসের তাৎপর্য উপলব্ধি করে, শিক্ষার লক্ষ্য অর্জনে আমাদের কার্যক্রম প্রতিদিন প্রসারিত করছি। আমরা সবার সহযোগিতা চাই। শিক্ষার আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। শিক্ষা দিবস অমর হোক। লক্ষ্য অর্জনে আমাদের যেতে হবে বহুদূর।#

নুরুল ইসলাম নাহিদ: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী।

পছন্দের আরো পোস্ট