উজ্জ্বল হোসেনের দুটি কবিতা

নিকোটিন যোদ্ধা

গিটার হাতে সুর ছড়াবার স্বপ্ন দেখা সেই ছেলেটি আজ
নিকোটিন হাতে ল্যাম্পপোস্টের নিচে যুদ্ধ করে অবিরত।
ধোয়ায় ধোয়ায় ছন্দহীন ছন্দর অন্তমিল আর
হৃদপিন্ডের গড়গড় শব্দে কি এক সুর জন্ম নেয়।
সে সুর ল্যাম্পপোস্টের আলোর পরিধি ছোয় বড়জোড়
হলুদ আলো অতিক্রম করা হয়ে উঠেনা তার
অবেণীকুন্তলার নিñিদ্র কর্ণ চেনা হয়না তার।

গিটারের তারে ঝড় তোলা সে আঙুল আজ
নিকোটিন কারখানার শ্রমিক
বেতনহীন সে শ্রমিকের বিরাম নেই, বিশ্রাম নেই
আছে ধোয়ার ভিড়ে ধোয়া ছড়ানোর তাড়না।
নিশ্বাসে মিশে যাওয়া নিকোটিন ছড়ায় ঠোটে
শিরা থেকে শিরায়, উপশিরায়।
নিকোটিন যুদ্ধের ডামাডোলে ছিড়ে যায়
সুরেলা গিটারের একাধিক তার।

সুর যোদ্ধা হওয়ার স্বপ্নে বিভোর সেই ছেলেটি
একদিন হয়ে উঠে এক নামকরা যোদ্ধা,
নিকোটিন যোদ্ধা।

 

মহাকালের দাবানল

মহাকালের দাবানলে আজ আমি ওষ্ঠাগত
প্রকৃতির বিরুপতায় কুচকে গেছে আমার ভ্রু
অগ্নির সমার্থক এ তনু তবু
দু বাহু বাড়িয়ে আজও ঠাই দাড়িয়ে আছি আমি।
তোমার অগ্নিতেই তো আমার চিতার অর্ঘ
এ ও কম কি?
নিজ হাতে জ্বালিয়েছো চিতা
জ্বলছিও তাই অবিরত
জ্বলন্ত মোমবাতির মতোই গলে চলেছি।
তুমি দূর থেকে দেখছো আর
বসন্তের মৃদু সমীরে দোল খাওয়া
শিমুল পাপড়ির মতো ঝড়ছে তোমার হাসি।
এ ও কম কি?
একটুও কষ্ট লাগছেনা আমার।
হাড়কাপা শীতে নেড়ি কুকুরের বিনিদ্র ঘুমে
একটু উষ্ণতার আয়োজন করেছো তুমি
সেই উষ্ণতায় আজ উষ্ঞ আমি
এ ও কম কি?
মহাকালের দাবানলে আজ ওষ্ঠাগত আমি
তবু মহাকাল ব্যপিয়াই আমি জ্বলতে চাই
বিনিময়ে একটু হেসো তুমি
মহাকালের কাছে এ আমার শেষ প্রার্থনা।#

 

উজ্জ্বল হোসেন সায়েম
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।

পছন্দের আরো পোস্ট